নির্বাচন নিয়ে আমরা একটা অনন্য উচ্চতায় পৌঁছে গেছি। সেখান থেকে ফেরার কোন সুযোগ নেই। যেকোন মূল্যে আমরা তা ধরে রেখে সুষ্ঠু নির্বাচনের উদাহরণ সৃষ্টি করতে চাই।
আগামী ২৯ মে তৃতীয় ধাপের উপজেলা পরিষদ নির্বাচনকে সামনে রেখে জেলার গৌরনদী ও আগৈলঝাড়া উপজেলার প্রতিদ্বন্ধী প্রার্থী ও দায়িত্বরত ভোটগ্রহনকারী কর্মকর্তাদের সাথে রোববার সকালে মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে কথাগুলো বলেছেন বরিশালের বিভাগীয় কমিশনার মোঃ শওকত আলী।
তিনি আরও বলেন, যতোবড় ক্ষমতাশালী হোকনা কেন, কেউ ক্ষমতার অপব্যবহার করতে পারবেন না। জাল ভোটের তো প্রশ্নই ওঠেনা। যদি একটি জাল ভোটও পরে সাথে সাথে সেই ভোট কেন্দ্র বন্ধ করে দেওয়া হবে। প্রয়োজনে আবার পূনঃনির্বাচন হবে। হুমকি-ধামকি ও ক্ষমতার অপব্যবহার করে কোন লাভ হবেনা। নির্বাচনের দিনেও কিন্তু প্রার্থীতা বাতিল হওয়ার নজির রয়েছে। কোন প্রার্থী ও তাদের সমর্থকরা যদি এমন কিছু করেন, তাহলে আমরা নির্বাচন কমিশনকে বলে সেই প্রার্থীর প্রার্থীতা বাতিল করার ব্যবস্থা নিতে বাধ্য হবো।
ভোটগ্রহন কর্মকর্তাদের উদ্দেশ্যে বিভাগীয় কমিশনার বলেন, নিকট অতীতের দিকে তাকান, দূর অতীতের দিকে তাকাবেন না। আপনাদের কিন্তু শতভাগ সুষ্ঠু নির্বাচন করতে হবে। এর কোন রকম ব্যত্যয় ঘটবেন না। অন্যকোন চিন্তা ভাবনা যদি কেউ মাথায় ঢুকিয়ে থাকেন সেটি মাথা থেকে সরিয়ে ফেলুন। কোন প্রলোভন কিংবা ক্ষমতার কাছে আপনারা নতি শিকার হবেন না। কেউ অনিয়ম করে আইনশৃঙ্খলা বাহীনির হাতে ধৃত হলে তার চাকরি জীবন কিন্তু হুমকির মধ্যে পরে যাবে।
গৌরনদী উপজেলার শহীদ সুকান্ত বাবু সেরনিয়াবাত হলরুমে অনুষ্ঠিত সভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বরিশাল রেঞ্জের ডিআইজি মোঃ জামিল হাসান বলেন, যদি কেউ অপ্রীতিকর পরিস্থিতি ঘটাতে চান, তাহলে তাকে অনেক বড় খেসারত দিতে হবে। বিগত কয়েকটি নির্বাচনের ধারাবাহিকতা থেকে এক ইঞ্চিও নিচে নামার কোন সুযোগ নেই। প্রার্থীদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, আপনারা ভোটারদের ভোটকেন্দ্র অভয় দিয়ে নিয়ে আসবেন। ভোটারদের নিরাপত্তার দায়িত্ব আমরা নিলাম। নির্বাচনে নিরাপত্তা দানকারী ফোর্সের সংখ্যা বিপুল পরিমাণ থাকবে। কেউ বিশৃঙ্খলা করলেই তাৎক্ষনিকভাবে ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।
জেলা প্রশাসক মোঃ শহীদুল ইসলামের সভাপতিত্বে ও গৌরনদী উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ আবু আবদুল্লাহ খানের সঞ্চালনায় মতবিনিময় সভায় বিশেষ অতিথি ছিলেন জেলা পুলিশ সুপার মোঃ ওয়াহিদুল ইসলাম, র্যাব-৮ এর উপ-অধিনায়ক মেজর জাহাঙ্গীর, আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা মোঃ আলাউদ্দিন প্রমুখ।
মতবিনিময় সভায় আগৈলঝাড়া উপজেলা পরিষদের দোয়াত-কলম মার্কার চেয়ারম্যান প্রার্থী যতীন্দ্রনাথ মিস্ত্রি অভিযোগ করে বলেন, স্থানীয় সংসদ সদস্যকে ব্যবহার করে দুটি উপজেলাতে ভীতির পরিবেশ সৃষ্টি করা হয়েছে। এখানে যতো সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে তা শুধু সংসদ সদস্যকে ব্যবহার করতে পারার সুযোগের কারনে। বলা হচ্ছে, এটি দলীয় নমিনেশন, এটি একটি দলীয় ব্যবস্থা। সংসদ সদস্য তার নিজ বাড়িতে আসার পর বলা হচ্ছে-তার প্রার্থীদের বিজয় নিশ্চিত করতেই তিনি বাড়িতে এসেছেন। এগুলো প্রচার করে মানুষকে একটি ভীতির স্বর্গে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। গৌরনদী উপজেলা পরিষদের কাপ-পিরিচ মার্কার চেয়ারম্যান প্রার্থী মনির হোসেন মিয়া ও আনারস মার্কার সৈয়দা মনিরুন নাহার মেরী তাদের প্রতিদ্বন্ধী মোটরসাইকেল মার্কার প্রার্থী হারিছুর রহমানের বিরুদ্ধে নির্বাচনী আচরণ বিধি লঙ্ঘন, মামলার আসামিদের প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়ানোসহ বিস্তার অভিযোগ প্রশাসনের সামনে তুলে ধরেন।
এসময় স্থানীয় সংসদ সদস্য ও আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সিদ্ধান্তে প্রার্থী হওয়ার কথা ঘোষণা দেওয়া আগৈলঝাড়া উপজেলার আনারস মার্কার চেয়ারম্যান প্রার্থী আবদুর রইচ সেরনিয়াবাত, গৌরনদীর প্রার্থী হারিছুর রহমানসহ ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী এবং ভোটদানকারী কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।