জিরো টলারেন্স নিয়ে দেশে মাদকবিরোধী অভিযান চলমান থাকা সত্ত্বেও মাদক পাঁচার, বিক্রি, সেবন বাড়ছে অপ্রতিরোধ্য গতিতে। আকাশ, নৌ ও স্থলপথে অনেকটা ফ্রি স্টাইলে ঢুকছে ইয়াবাসহ বিভিন্ন মাদক। প্রতি বছরই হাজার কোটি টাকার বেশি মাদকদ্রব্য উদ্ধার করছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। তার পরও মাদকের পাঁচার বন্ধ হচ্ছে না। নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁওয়ে অ্যাম্বুলেন্সে খালি অক্সিজেন সিলিন্ডারের ভেতর থেকে ৬০ হাজার পিস ইয়াবাসহ এক জনকে আটক করেছে সোনারগাঁও থানা পুলিশ। উদ্ধারকৃত ইয়াবার আনুমানিক বাজার মূল্য ২ কোটি টাকা প্রতিদিন এভাবে কোটি কোটি টাকার ইয়াবা স্থলপথে দেশে আসছে। নাফ নদীর ওপারে রয়েছে ইয়াবার কারখানা। সেখানে দুই পক্ষের মধ্যে গোলাগুলি হচ্ছে, কিন্তু ইয়াবা কারখানা অক্ষত রয়েছে, ইয়াবা তৈরিও হচ্ছে। প্রতিদিনই আসছে ইয়াবা। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মাদকের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতি ঘোষণা করেছেন। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর শীর্ষ কর্মকর্তারা প্রতিনিয়ত বলছেন, মাদকের ব্যাপারে কোনো ছাড় নেই। তার পরও বিনা বাধায় মাদক আসছে। অভিযোগ রয়েছে, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অনেক ছোটখাট অফিসার টেকনাফ ও পার্বত্যাঞ্চলে পোস্টিং নেন কোটি টাকা ঘুষ দিয়ে। কারণ, ঐ টাকা তার তুলতে বেশি দিন লাগে না। অপরাধ বিশেষজ্ঞদের মতে, মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ব্যর্থ। সারা দেশের কোমলমতি ছেলেরা নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। স্কুল বাদ দিয়ে তারা মাদক ব্যবসা করছে। ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান, মেম্বার ও রাজনৈতিক নেতাদের অনেকেই মাদক ব্যবসা নিয়ন্ত্রণ করেন। অনুসন্ধানে জানা গেছে, মাদক বহন করে কিশোর গ্যাং। তাদের মোটরসাইকেল ও অস্ত্র আছে। তরুণ সমাজকে ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে নিয়ে যাচ্ছে মাদক। মাদকের সঙ্গে যারা থাকবে, তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে। একসময় থাইল্যান্ডে এমন অবস্থা ছিল। হাটে-বাজারে ছিল মাদকের ছড়াছড়ি। তখন থাইল্যান্ডের রাজা আইন করেন কারো কাছে ২০ পিস ইয়াবা পাওয়া গেলে যাবজ্জীবন এবং ২০ পিসের বেশি থাকলে ‘ক্রসফায়ার’ দেয়া হবে। মাত্র এক মাসে পাঁচ শতাধিক লোক মারা গিয়েছিল। এখন থাইল্যান্ডে মাদক সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে। যেহেতু মাদকের বিরুদ্ধে সরকার জিরো টলারেন্স ঘোষণা করার পরেও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী মাদক নিয়ন্ত্রণে আনতে পারেনি বরং তারাই এর সাথে জড়িত। সেহেতু থাইল্যান্ডের পদক্ষেপ অনুসরণ করা প্রয়োজন। তাহলেই মাদক নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হবে।