নিজেকে গড়তে এবং দেশকে এগিয়ে নিতে শিক্ষার্থীরা উচ্চশিক্ষা গ্রহণ করে থাকেন। উচ্চশিক্ষার জন্য বিশ^বিদ্যালয়ে পড়াশোনা করে শিক্ষার্থীরা। ভর্তি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়ার মাধ্যমে বিশ^বিদ্যালয়ে পড়ার সুযোগ পেয়ে থাকেন ছাত্র-ছাত্রীরা। এমন চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় বিশ^বিদ্যালয়ে চান্স পেয়ে যখন শিক্ষার্থীরা শিক্ষার মধ্যে মাদকে জড়িয়ে পড়ে তখন বিষয়টা কেমন দাঁড়ায়? নিশ্চয় এটি শিক্ষিত জাতিকে ধ্বংস করার মত একটি ব্যাধি। এমনি একটি অভিযোগ উঠেছে রাজশাহী বিশ^বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে। জানা যায়, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে মাদক সেবনের অভিযোগকে কেন্দ্র করে শিক্ষার্থীদের দুই গ্রুপের সংঘর্ষ হয়েছে। এতে তিনজন আহত হন। এছাড়াও অভিযোগ উঠেছে ছাত্রীরাও এসব নেশায় আসক্ত হয়ে পড়াশোনায় মনোযোগ হারাচ্ছেন। ক্যাম্পাসের বিভিন্ন স্থান হয়ে উঠেছে গাঁজা ও ফেনসিডিল সরবরাহের হটস্পট। বিশ্ববিদ্যালয়ের তথ্য সূত্রে জানা যায়, গত ২০ মাসে ক্যাম্পাসে মাদক সম্পৃক্ততায় আটক হয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়সহ প্রায় শতাধিক শিক্ষার্থী। মাদকসহ আটক হওয়ায় ছাত্রলীগের চার নেতার নামে মামলাও হয়। আটককৃত প্রায় ডজনখানেক বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীর অ্যাকাডেমিক ফলাফল পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায়, প্রথম বর্ষে যে শিক্ষার্থীর ফলাফল ফার্স্ট ক্লাস ছিল, পরবর্তীতে মাদকাসক্তের কারণে অ্যাকাডেমিক ভাবে তারা পিছিয়ে গেছেন। অকৃতকার্য হয়ে অনেকের ১-২ বছর ড্রপ হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের এমন বহু শিক্ষার্থী মাদকাসক্তের কারণে অ্যাকাডেমিকভাবে ঝরে পড়ছেন। মানসিক অবসাদগ্রস্ত থাকার পাশাপাশি তারা বিভিন্ন অপকর্মে জড়িয়ে পড়ছেন। কিন্তু তাঁদের বিরুদ্ধে কার্যকরী ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। কেবল মুচলেকা দিয়েই ছাড়া পেয়েছেন অধিকাংশ শিক্ষার্থী। নবীন শিক্ষার্থীদের টার্গেট করে এ মাদক কারবার করছে প্রভাবশালী রাজনৈতিক ব্যক্তি ও ছাত্রসংগঠনের নেতা-কর্মীরা। সরকারকে এসব বিষয়ে নজরদারি বাড়াতে হবে। যারা এমন মাদকাসক্তে জড়িয়ে পড়ছে তাদেরকে যথার্থ আইন প্রয়োগ করতে হবে। মূলত শিক্ষার্থীরা মাদকের সহজ লভ্যতার কারণেই মাদকাসক্ত হচ্ছে। মাদক বিক্রেতা চক্রের বিরুদ্ধে জিরোটলারেন্স আইন প্রয়োগ করা হোক। যাতে রাবি ক্যাম্পাসে কোনোভাবেই মাদকদ্রব্য ঢুকতে না পারে সেদিকে নজর রাখতে হবে প্রশাসন এবং কর্তৃপক্ষকে। শিক্ষার্থীদের প্রতিবছর ডোপ টেস্ট নিশ্চিত করতে হবে এবং মাদক কারবারিদের বিরুদ্ধে স্থায়ী ব্যবস্থা নিতে হবে।