আসন্ন ঈদযাত্রায় এবারও বাড়ি ফেরা মানুষের মনে ভোগান্তির শঙ্কা বিরাজ করছে। প্রতিবছর কোরবানির ঈদে সড়ক ও মহাসড়কের পাশে অস্থায়ী পশুর হাট বসাতে বেশি দুর্ভোগে পড়তে হয় মানুষকে। এছাড়াও পশুবাহী যানবাহনের কারণেও যানজট সৃষ্টি হয়। সম্প্রতি কোরবানির ঈদকে কেন্দ্র করে রাজধানী বনানীতে বিআরটিএর সদর কার্যালয়ে একটি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। মহাসড়কের পাশে অস্থায়ী ২১৭ পশুর হাট সারা দেশে সড়ক ও মহাসড়কের পাশে ২১৭টি অস্থায়ী পশুর হাট রয়েছে। যেগুলো যানজট তৈরি করতে পারে। এগুলোর মধ্যে চট্টগ্রাম জেলায় সড়কসংলগ্ন ৩০টি হাট, কক্সবাজার জেলায় ২৩টি, ঢাকা জেলায় ১৫টি, নারায়ণগঞ্জ জেলায় ১৩টি, নাটোর জেলায় ১২টি, গাজীপুরে ১১টি, পঞ্চগড় ও বগুড়ায় ৯টি, সিলেটে ছয়টি, কুমিল্লা, রাজশাহী, ময়মনসিংহ, ভোলা, খুলনা, ঝিনাইদহ ও চুয়াডাঙ্গা জেলায় পাঁচটি করে সড়কসংলগ্ন হাট রয়েছে। এ ছাড়াও বিভিন্ন জেলায় একটি করে অস্থায়ী পশুর হাট রয়েছে। এই পশুর হাটগুলো আসন্ন ঈদযাত্রায় সড়কে যানজট তৈরি করতে পারে বলে বিআরটিএ আশঙ্কা করেছে। এছাড়াও সারাদেশে সম্ভাব্য যানজটের ১৫৫টি স্পট চিহ্নিত করা হয় সভায়। ঢাকা-চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কের ৪৮টি স্পট। ঢাকা-উত্তরবঙ্গ মহাসড়কের ৫২টি, ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের ছয়টি, ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের ৪১টি ও ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের আটটি স্থান। এমন অস্থায়ী হাট এবং যানজটের স্পটগুলোর কারণে জনসাধারণের মাঝে শঙ্কা বিরাজ করছে। বিগত বছরগুলোতেও মহাসড়কে ভয়াবহ যানজটের চিত্র দেখা যায়। যানজট নিরসনে বিআরটি এর আলোচনা সভায় সিদ্ধান্ত হয়, যানজটপ্রবণ এ স্থানগুলো তদারকি ও পর্যবেক্ষণ করবে সিটি করপোরেশন, বিআরটিএ, জেলা প্রশাসক, স্থানীয় পুলিশ সুপার ও হাইওয়ে পুলিশ। একই সঙ্গে টোলপ্লাজায় পশুবাহী যানবাহন পারাপারে অগ্রাধিকার দেওয়া এবং যানজটমুক্ত রাখতে ইটিসি বুথ চালুর মাধ্যমে সার্বক্ষণিক টোল আদায় অব্যাহত রাখতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া দেশের সব বাস টার্মিনাল ও মহাসড়কে চাঁদাবাজি বন্ধ করা এবং সড়কপথে চুরি, ডাকাতি, ছিনতাই, পকেটমার, মলম পার্টি, অজ্ঞান পার্টির দৌরাত্ম্য রোধে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীসহ সংশ্লিষ্টদের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে বলা হয়েছে। এর পাশাপাশি ঈদের আগের ৩ দিন ও পরের ৩ দিন মহাসড়কে ট্রাক, কাভার্ড ভ্যান ও লরি চলাচল বন্ধ রাখতেও বলা হয়েছে। যদিও নির্দেশনা থাকে আচরণবিধি মেনে চলার কিন্তু বাস্তবতায় দেখা যায় বিপরীত চিত্র। আনন্দময় ঈদে এমন ভোগান্তির যাতায়াত যেন না হয় এমনটাই দাবি সাধারণ মানুষের। প্রতিবারের চেয়ে এবার যেনো যানজট মুক্ত পরিবেশে সবাই গন্তব্য পৌঁছাতে পারে এটাই সবার প্রত্যাশা। আশা করি মানুষের প্রত্যাশার কথা চিন্তা করে সরকার এই বিষয়ে ভোগান্তি দূর করে জনগণকে আনন্দপূর্ণ ঈদযাত্রা উপহার দিবেন।