ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইলে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী সরাইল উপজেলা শাখার উদ্যোগে সিরাতুন্নবী (সা.) উপলক্ষ্যে গত মঙ্গলবার সন্ধ্যায় সৈয়দ সিরাজুল ইসলাম অডিটোরিয়ামে এক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। এর আগে একই দিন সকাল থেকে বিকাল পর্যন্ত এক কর্মী সভা করেছে দলটি। উপজেলা শাখার যুগ্ম সম্পাদক এড. তারিকুল ইসলামের সঞ্চালনায় সভাপতি মো. মনিরূজ্জামানে সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন- ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা শাখার আমীর মোহাম্মদ গোলাম ফারূক। এছাড়া বক্তব্য রাখেন উপজেলা বিএনপি’র সভাপতি মো. আনিছুল ইসলাম ঠাকুর, উপজেলা জামায়াতের সাবেক আমীর মাওলানা কুতুব উদ্দিন, বর্তমান সম্পাদক মো. এনাম খাঁন ও সদর ইউপি শাখা জামায়াতের সভাপতি খন্দকার বরকত উল্লাহ মিন্টু। প্রধান আলোচক ছিলেন কুমিল্লা নাগাইশ দরবার শরীফের পীর সাহেব মাওলানা মোশতাক ফয়েজী। প্রধান আলোচক মোশতাক ফয়েজী ভারতের দিকে ইঙ্গিত করে বলেন, এই দেশের পুরূষ আর যুবক। বৃদ্ধ আর শিশু। সব গুলো হাত সৈনিকের হাত। আমাদেরকে ইচ্ছে করলেই পিষে ফেলা যায় না। ইচ্ছে করলেই আমাদেরকে মাটির সাথে মিশিয়ে দেওয়া যাবে না। উনারা মনে হয় ভুলে গেছেন বড়রা এমনই হয়। তারা ছোটদের সব সময় ছোটই ভাবেন। কিন্তু ছোট শিশু যে টানটান যুবকে পরিণত হয়েছে সেই বৃদ্ধ বাবা ভুলে যায়। ভারতের যারা বড় দাদাগীরি করেন উনারা সবসময় বড়র জায়গায় বসে আমাদেরকে শিশুই ভাবতেই শিখে। শিশু যে কখন বড় যুবক হয়ে গেছে। শিশু যে চিৎকার করতে জানে। তরকারি নিয়ে খেলতে জানে। রক্ত দিতে ও নিতে জানে, তারা (ভারতের দাদারা) তা জানে না। এই দেশের যুবকরা জীবন দিতে জানে নিতেও জানে। কারণ আমরা বিশ্বাস করি মাথা নত করা যায় শুধু একটা জায়গায়। আর তিনি হলেন আমাদের মহান রব। উনার সামনে ছাড়া আমাদের থেমে যাওয়ার কোন জায়গা নেই। যাদের পথচলা সেই সকাল থেকে শুরূ। যাদের পথচলা জীবন সায়াহ্নে এসে থেমে যায়। যেন যুদ্ধের ময়দানে কাতার ভেঙ্গে নামাজে দাঁড়িয়ে আবার পরবর্তী কাতারে দাঁড়িয়ে যায় ওদেরকে কী দিয়ে দমাবেন আপনি? পৃথিবীর ভেতরে এমন কোন অস্ত্র এখনো আবিস্কার হয়নি যা মানুষের ঈমানকে মেরে ফেলতে পারে। মানুষ মারা সহজ কিন্তু ঈমান মারা বড়ই কঠিন। আমরা সেই মুভমেন্ট। আমরা ঘোষণা দিয়েছি আমরা মুসলমান। ভূঁইয়া,চৌধুরী, খনকার, পেশকার, সরকার, দফাদার. চকিদার, কন্ট্রাকটার, দোকানদার, কাষ্টমার, পীর সাহেব, লর্ড সাহেব, মন্ত্রী, এমপি এইসব পরিচয় আমার পরিচয় নয়। আসল পরিচয় আমি মুসলমান। এই মুসলমানরাই হাজার বছর আগে যেমন করে বদরের প্রান্তরে ৩১৩ জন ১ হাজার মানুষকে কচুকাটা করেছিল। এই মানুষ গুলোই তো হাজার লক্ষ কোটি যোদ্ধাকে শুধু মেছওয়াক করে ভয় ধরিয়েছিল। টয়লেটের লাইট দেখে ভয় পেয়ে গিয়েছিল। এ ভাবেই আমরা বিজয় ছিনিয়ে এনেছি। গোটা পৃথিবীর অর্ধেকটা যখন আমাদের দখলে ছিল তখন আমিরূল মোমেনিন খলিফাতুল মুসলিমিন জান্নাতের সুসংবাদ প্রাপ্ত দ্বিতীয় ব্যক্তি হযরত উমরের উদ্যেশ্য করে নবী (সা.) বলেছিলেন, আমি সর্বশেষ নবী। আমার পরে আর কোন নবী নেই। যদি থাকত তবে তুই উমরই নবী হতে। আবু বক্কর সিদ্দিকের মৃত্যুর পর সেই উমরকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিল না। চিন্তায় পড়ে গেছে। দরজা খুলে দেখেন উমর কাঁদছে গাল দাঁড়ি বেয়ে পানি পড়ছে। আমি জানতাম আবু বক্করের পর তোমরা আমার গলায় গামছা লাগাবা। এই ভয়ে আমি লুকিয়ে বাঁচতে চেয়েছিলাম। আমি জানি আমার শাসনামলে ফুরাত তীরে যদি একটা কুকুর যদি না খেয়ে মারা যায়? আর কেয়ামতের ময়দানে মওলার আদালতে যদি আমাকে ডেকে বলে এই উমর তোমার শাসনামলে আমি কুকুরের ক্ষিধা পেয়েছিল। আমি কুকুর ক্ষুধায় জ্বালায় মরে গিয়েছিলাম। তখন আমি কী জবাব দিব? এই ভয়ে আমি লুকিয়ে গিয়েছিলাম। সবাই মিলে উমরকে মসনদে বসিয়ে দিলেন। নবীর আদর্শের উজ্জীবিত সৈনিক উমর দেশ শাসনে সততার দৃষ্টান্ত ও ইহিতাস তৈরী করলেন। আমরা বাংলাদেশে এমন শাসক ও শাসন ব্যবস্থাই প্রত্যাশা করি। আমাদের প্রত্যাশা পূরণের মালিক একমাত্র আল্লাহ।