আইএমএফ ঋণ: চতুর্থ ও পঞ্চম কিস্তি একসঙ্গে ছাড়ের সম্ভাবনা

নিজস্ব প্রতিবেদক : | প্রকাশ: ১৭ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫, ১২:৫৯ পিএম : | আপডেট: ৩ মার্চ, ২০২৫, ০৭:৩১ পিএম
আইএমএফ ঋণ: চতুর্থ ও পঞ্চম কিস্তি একসঙ্গে ছাড়ের সম্ভাবনা
অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ- ফাইল ছবি

বাংলাদেশের জন্য আইএমএফের ঋণ প্যাকেজের চতুর্থ কিস্তির অর্থ ছাড় বিলম্বিত হওয়ায় এটি পঞ্চম কিস্তির সঙ্গে একত্রে জুন মাসে অনুমোদিত হতে পারে বলে জানিয়েছেন অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ। সোমবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে জেলা প্রশাসক সম্মেলনে তিনি সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান।

আইএমএফের ৪.৭ বিলিয়ন ডলারের ঋণ কর্মসূচির আওতায় প্রতিটি কিস্তি পেতে বাংলাদেশকে নির্দিষ্ট শর্ত পূরণ করতে হচ্ছে। চতুর্থ কিস্তির জন্য চারটি শর্ত দেওয়া হয়েছিল, যার মধ্যে রাজস্ব আদায় বৃদ্ধি এবং বৈদেশিক মুদ্রার বিনিময় হার বাজারভিত্তিক করার বিষয়ে আইএমএফ সন্তুষ্ট হতে পারেনি।

এর আগে, আইএমএফের তৃতীয় পর্যালোচনা শেষে চতুর্থ কিস্তির অর্থ ছাড়ার কথা ছিল ১০ ফেব্রুয়ারির মধ্যে। কিন্তু বোর্ড সভা পিছিয়ে যাওয়ায় এই প্রক্রিয়া বিলম্বিত হয়। পরবর্তীতে মার্চ মাসে অনুমোদনের সম্ভাবনা থাকলেও সেটিও পিছিয়ে জুন মাসে নেওয়া হয়েছে।

অর্থ উপদেষ্টা জানান, বাংলাদেশ ও আইএমএফের পারস্পরিক সমঝোতার ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত হয়েছে যে, জুন মাসে অনুষ্ঠেয় বোর্ড সভায় চতুর্থ ও পঞ্চম কিস্তির অর্থ ছাড়ের প্রস্তাব একত্রে তোলা হবে। অনুমোদন পেলে, দুই কিস্তির অর্থ একসঙ্গে ছাড় হতে পারে।

তিনি বলেন, “আমরা আইএমএফকে জানিয়েছি, এত শর্ত একসঙ্গে পূরণ করা কঠিন। তাই তারা আমাদের প্রস্তাব বিবেচনায় নিয়েছে এবং জুন মাসে দুটি কিস্তি একসঙ্গে ছাড়ের বিষয়ে সম্মত হয়েছে।”

অর্থ উপদেষ্টা আরও বলেন, “আমরা ঋণ চাই, কিন্তু মরিয়া নই। আমাদের সামষ্টিক অর্থনীতি ভালো অবস্থায় আছে। প্রবাসী আয় বৃদ্ধি পেয়েছে, চলতি হিসাব পরিস্থিতি স্থিতিশীল, এবং বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভও সহনীয় পর্যায়ে রয়েছে।”

তবে অর্থনীতিবিদরা বলছেন, রাজস্ব আয় বাড়াতে কর সংস্কার প্রয়োজন। আইএমএফের পরিদর্শন দলও কর অব্যাহতি সুবিধা কমিয়ে রাজস্ব আহরণ বৃদ্ধির ওপর জোর দিয়েছে। ফলে, সরকার কিছু নতুন কর আরোপের পাশাপাশি কিছু ক্ষেত্রে শুল্কহারও পুনর্বিবেচনা করেছে।

আইএমএফ ইতোমধ্যে বাংলাদেশকে অতিরিক্ত ৭৫ কোটি ডলার ঋণের প্রস্তাব দিয়েছে, যা পর্ষদে অনুমোদিত হলে মোট ঋণের পরিমাণ দাঁড়াবে ৫.৩ বিলিয়ন ডলারে।

বিশ্লেষকরা বলছেন, এই ঋণ পেলে অর্থনীতির বহির্চাপ সামাল দেওয়া এবং সামষ্টিক অর্থনীতির স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে সুবিধা হবে। তবে শর্ত পূরণে সময়মতো কার্যকর পদক্ষেপ না নিলে ভবিষ্যতে ঋণ ছাড় আরও বিলম্বিত হতে পারে।

0 LIKE
0 LOVE
0 LOL
0 SAD
0 ANGRY
0 WOW
আপনার জেলার সংবাদ পড়তে