হাটহাজারীতে ফসলী জমি ও বেড়ি বাঁধ চরম বৈষম্যের শিকার

এফএনএস (কেশব কুমার বড়ুয়া; হাটহাজারী, চট্টগ্রাম) : | প্রকাশ: ১৭ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫, ০৬:৫৫ পিএম
হাটহাজারীতে ফসলী জমি ও বেড়ি বাঁধ চরম বৈষম্যের শিকার

চট্টগ্রামের  হাটহাজারীতে ফসলী জমি, খাল, ছড়া, নদীর বেড়ি বাঁধ, জলাশয় / জলাধার চরম বৈষম্যের শিকার হওয়ার এন্তার অভিযোগ উঠেছে। এই অনৈতিক কার্যকলাপ রোধে বৈষম্য বিরোধীরা( প্রশাসন) যেন বৈষম্যকারীদের কাছে প্রায় অসহায়। ফসলী জমি, খাল, ছড়া, নদীর বেড়ি বাঁধ সংলগ্ন এলাকা থেকে অবৈধ ভাবে বৈষম্য মুলক ভাবে কাটা মাটি দিয়ে ভরাট করা হচ্ছে জলাধার। স্থাপন করা করা হচ্ছে ফসলী জমিতে বসত ভিটে। এতে করে ফসলী জমি  আশংকা জনক হারে কমছে। খাল,ছড়া, নদীর বেঁড়ি বাঁধ ঝুঁকিপূর্ণি হয়ে পড়তে শুরু করেছে। ফলে বর্ষার সময় পাহাড়ি ঢলের পানিতে বেঁড়ি বাঁধ ভেঙে গিয়ে বন্যার সৃষ্টি হয়ে রোপা জমির ফসল ও মানুষের বসত ঘর বন্যা কবলিত হয়ে পড়ার আশংকা বৃদ্ধি পাচ্ছে বলে ও স্থানীয়রা বলছেন। তাছাড়া ফসলী জমি থেকে মাটি কাটার কারনে জমি গুলো ফসল উৎপাদনে সক্ষমতা হারাচ্ছে । জমি থেকে অবৈধ ভাবে মাটি কেটে বসত ভিটে করতে গিয়ে দুই ভাবে ফসলী জমি আশংকা জনক হারে কমতে শুরু করেছে বলে ও সচেতন মহল মত প্রকাশ করছেন। এতে করে দেশের বর্ধিত জনসংখ্যার খাদ্য ও মৌসুমি তরিতরকারির চাহিদা পূরন কস্টসাধ্য হওয়ার আশংঙ্খা অমুলক নয় বলে ও উল্লেখ করা হচ্ছে। 

জানা যায়, চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের লাঘোয়া হাটহাজারী উপজেলা। এই উপজেলায় ১টি পৌরসভা, ১৪টি ইউনিয়ন রয়েছে। তাছাড়া সিটি করপোরেশনের ১নং দক্ষিণ পাহাড়তলী ওয়ার্ড ও এই উপজেলা সংলগ্ন স্থানে। চট্টগ্রাম শহরের সাথে লাগোয়া এই উপজেলার অবস্থান হওয়ায় বিশেষ করে দক্ষিণ হাটহাজারীর সীমানা চট্টগ্রাম শহরের সাথে। ফলে এখানে জায়গা জমির গুরুত্ব অপরিসীম। তাই জমির মূল্য ও প্রায় চট্টগ্রাম নগরীর মত। স্থান বিশেষে চট্টগ্রাম নগরী থেকে হাটহাজারী উপজেলায় অবস্থিত জায়গায় মূল্য অনেক বেশি। এক সময় বালুছড়া এলাকার পূর্ব পাশে, ফতেপুর, চিকনদন্ডী, শিকারপুর, বুড়িশ্চর, চারিয়া, মির্জাপুর, উত্তর এনায়েতপুর, পশ্চিম ধলই,ফরহাদাবাদ, মেখল  সহ বিভিন্ন স্থানে চট্টগ্রাম - নাজিরহাট - রাউজান  মহাসড়কের পাশে অসংখ্য ইট ভাটা ছিল। এই ইট ভাটায় মাটি ব্যবহার করতে গিয়ে মহাসড়কের পাশে বিস্তার জমি আবাদ অযোগ্য হয়ে পড়ে। তখন অবশ্য সড়কের পাশে বসত ঘর নির্মানে লোকজনের তেমন আগ্রহ ছিল না। তাছাড়া অর্থের অভাবে অনেক জমির মালিক তাদের জমি অর্থের জন্য ইটভাটা মালিকের কাছে টাকার বিনিময়ে বিক্রি করে দিয়েছিল, কেউ কেউ ফসলী জমির মাটি ভাটা মালিকের কাছে ইট তৈরির জন্য বার্ষিক  ইজারা দিয়ে ছিল। ইদানীং রাস্তা কিংবা মহাসড়কের পাশে ও সংলগ্ন স্থানে বসত ভিটে তৈরির হিড়িক শুরু হয়েছে। সেই সময়ে ইট ভাটা করতে গিয়ে ফসলী জমির মাটি কেটে ফেলার কারনে জমি গুলো অনেক নীচু হয়ে পড়েছে। এই নিচু জমিতে বসত ভিটে স্থাপন করতে গিয়ে মাটি ভরাট করতে হচ্ছে। আবার জনসংখ্যা বৃদ্ধির কারনে বসতি স্থাপন করতে গিয়ে ও ফসলী জমি কিংবা জলাশয় / জলাধার ভরাটের প্রতিযোগীতা চলছে। বসত ভিটে স্থাপনে জলাশয় ও ফসলী ভরাট করতে গিয়ে উপজেলার আওতাধীন ১৪টি ইউনিয়ন, ১ নং দক্ষিণ পাহাড়তলী সিটি করপোরেশনের ওয়ার্ড,  ১টি পৌরসভা, উপজেলার পশ্চিমের পাহাড়ের মাটি কাটার হিড়িক চলছে। 

স্বার্থান্মেসী মাটি খেকোদের কাছে ফসলী জমি, খাল, ছড়া, নদীর বেড়ি বাঁধ চরম বৈষম্যের শিকার হয়ে জমি উৎপাদন ক্ষমতা হারাচ্ছ  নিত্য সময়। সূর্যাস্তের পর বিভিন্ন ইউনিয়নে মাটি কাটার চলছে  মহোৎসব। এস্কেভেটর দিয়ে মাটি কেটে ড্রাম ট্রাকে করে মাটি বিভিন্ন স্থানে নিয়ে গিয়ে  চলে ভরাট কার্যক্রম। বৈষম্য দূরীকরণে বিগত ৫ আগস্ট (২০২৪)  এত প্রান বিসর্জন, এত প্রানের পঙ্গুত্ব বরনের পর ফসলী জমি, খাল, ছড়া, নদীর পাশের বেড়ি বাঁধের মাটির প্রতি এই চরম বৈষম্য প্রান বিসর্জন কারী ও পুঙ্গত্ব বরনকারীদের এই ত্যাগ কতটুকু সফলতা নিয়ে আসবে এই প্রশ্ন পর্যবেক্ষক মহলের। 

উপজেলা প্রশাসনের সংশ্লিষ্ট একাধিক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে গনমাধ্যমকে জানান, মাটি কাটার বিষয়ে বৈষম্য বিরোধী প্রশাসনের কর্মকর্তারা  যেন বৈষম্যকারীদের কাছে অসহায়। সন্ধ্যার পর পর অর্ধ শতাধিক স্থানে চলে মাটি কাটার মহোৎসব। তবে সময় সময় অভিযান পরিচালনা করে ও এর সুফল পাওয়া যাচ্ছেনা। কারন মাটি কাটার সাথে জড়িতরা এত বেশী  প্রভাবশালী যে তাদের দমন করা খুবই কঠিন বলে ও উল্লেখ করেন সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের কর্তাব্যক্তিরা।

আপনার জেলার সংবাদ পড়তে