গাইবান্ধায় চল্লিশার দাওয়াত খেয়ে অসুস্থ হয়ে পড়েছেন বিভিন্ন বয়সী দুই শতাধিক মানুষ। এদের মধ্যে মঙ্গলবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) দুপুর ১২টা পর্যন্ত প্রায় ২০০ রোগী বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিচ্ছেন।
হাসপাতালে ভর্তি হওয়া রোগী ও তাদের স্বজনেরা জানান, রোববার (১৬ ফেব্রুয়ারি) সকালে সদর উপজেলার বাদিয়াখালী ইউনিয়নের ফুলবাড়ী রিফাইতপুর গ্রামের ইজিবাইক চালক বেলালের মায়ের চল্লিশা (মজলিস) ছিল। সেখানে তার স্বজন ও এলাকাবাসীসহ প্রায় এক হাজার মানুষ অংশ নেন। দাওয়াত খাওয়ার পর ওইদিন মধ্যরাত থেকে অনেকে অসুস্থ হয়ে পড়েন। অনেকে প্রাথমিকভাবে বাড়িতে চিকিৎসা নিলেও অবস্থার অবনতি হওয়ায় পরদিন সোমবার সকাল থেকেই হাসপাতালে ভর্তি হতে থাকেন। অসুস্থ হওয়া রোগীরা গাইবান্ধা জেনারেল হাসপাতাল, পার্শ্ববর্তী ফুলছড়ি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নেন। আবার অনেকে স্থানীয়ভাবে চিকিৎসা নিচ্ছেন। গাইবান্ধা জেনারেল হাসপাতালের ডায়রিয়া ওয়ার্ডের মেঝেতে চিকিৎসাধীন আব্দুল হাই-মিম আক্তার দম্পতি বলেন, আমাদের আত্মীয়ের চল্লিশায় দাওয়াত খাওয়ার পর মাঝরাত থেকে দুজনের ডায়রিয়া শুরু হয়। আমাদের আরো অনেক আত্মীয় এখানে চিকিৎসাধীন আছেন।
হাসপাতালে চিকিৎসাধীন সাদা মিয়া, খালেদা আক্তার, সাইফুল ইসলামসহ আরো অনেকে বলেন, কারো মধ্যরাত থেকে ডায়রিয়া, বমি শুরু হয়। আবার কারো সকাল, দুপুর থেকে শুরু হয়। অনেক শিশু খুব অসুস্থ।
গাইবান্ধা হাসপাতাল ও ফুলছড়ি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্রে জানা গেছে, সোমবার সকাল থেকে মঙ্গলবার দুপুর ১২টা পর্যন্ত ১৮৯ জন বিভিন্ন বয়সী রোগী চিকিৎসা নিয়েছেন। এদের মধ্যে গাইবান্ধা হাসপাতালে ১২৪ জন রোগী চিকিৎসা নিচ্ছেন। চিকিৎসা নিতে আসা রোগীদের মধ্যে ৫১ জনকে ছাড়পত্র দেয়া হয়েছে।
অন্যদিকে ফুলছড়ি স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে মঙ্গলবার দুপুর ১২টা পর্যন্ত ৬৫ জন রোগী চিকিৎসাধীন রয়েছেন। এদের মধ্যে দুজনের অবস্থার অবনতি হওয়ায় রংপুর মেডিকেল কলেজে পাঠানো হয়েছে।
গাইবান্ধা জেনারেল হাসপাতালের ডায়রিয়া ওয়ার্ডের ইনচার্জ আরিফা খানম বলেন, খাদ্যের বিষক্রিয়ার কারণে অসুস্থ হয়ে তারা ডায়রিয়া ওয়ার্ডে চিকিৎসা নিয়েছেন। সোমবার সকাল থেকে এখন পর্যন্ত রোগীরা আসছেন। সবাইকে চিকিৎসা এবং প্রয়োজনীয় স্যালাইন ও ওষুধ দেয়া হয়েছে।
ফুলছড়ি উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. রফিকুজ্জামান বলেন, চল্লিশার দাওয়াতে আটার ডাল খেয়ে তারা অসুস্থ হয়েছেন। আমরা স্বল্প জনবল দিয়ে তাদের সাধ্যমত চিকিৎসাসেবা দিয়ে যাচ্ছি। অবস্থার অবনতি হওয়ায় দুইজনকে রংপুরে প্রেরণ করা হয়েছে।