ব্যাগে সূঁচ ফুটিয়ে সাফল্যের স্বপ্ন বুনন

এফএনএস (অমলেশ কুমার মালাকার; পলাশবাড়ী, গাইবান্ধা) | প্রকাশ: ১৯ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫, ০৬:২২ পিএম
ব্যাগে সূঁচ ফুটিয়ে সাফল্যের স্বপ্ন বুনন

গাইবান্ধার পলাশবাড়ীতে প্রশিক্ষণ নিয়ে এখন সাফল্যের স্বপ্ন বুনন করছেন নারী উদ্যোক্তা মোছা. সাদিনা আক্তার। উপজেলার বরিশাল ইউনিয়নের ভবানীপুর গ্রামের বাসিন্দা সাদিনা আক্তার। ২০১৮ সালে বাংলাদেশ পল্লী উন্নয়ন বোর্ড (বিআরডিবি) হতে ব্যাগ তৈরীর ১ বছরের প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেন। প্রশিক্ষণ দিয়ে অল্পকিছু টাকা পান। সেই টাকাসহ বাড়ীতে পালিত হাঁস-মুরগী বিক্রি করে ১৬শ’ টাকা একত্রে করে ব্যাগ তৈরীর কাজে পুরাতন বস্তা এবং বিভিন্ন উপকরণ কিনে প্রথম পর্যায়ে ব্যবসা শুরু করেন। পরবর্তীতে বিআরডিবি হতে ২০ হাজার টাকা ঋণ নিয়ে দু’জন নারী শ্রমিক নিয়ে নিজ বাড়ীতে ব্যাগের কারখানা শুরু করেন। ব্যবসা ভালোভাবে করতে থাকলে একবছর পর বিআরডিবি আরো ১ লাখ ৫০ হাজার টাকা ঋণ দেয়। এরপর থেকে সাদিনাকে আর পিছনে তাকাতে হয়নি। 

উদ্যোক্তা সাদিনা আক্তার বলেন, বর্তমানে পুরো উপজেলা জুড়ে তার ৭শ’র উপরে নারী শ্রমিক কাজ করছেন। তারা প্রতিদিন সর্বনিম্ন ৩শ’ হতে সাড়ে ৪শ’ টাকা করে আয় করে থাকেন।

ব্যাগ তৈরির ব্যবসায় তার আয় সম্পর্কে জানতে চাইলে উদ্যোক্তা সাদিনা বলেন, ভালোভাবে সরবরাহ করা গেলে প্রতিমাসে ৫০ হতে ৬০ হাজার টাকা আয় হয়। তিনি আরো বলেন, এ ব্যবসার আয় হতে ইতোমধ্যে ৯ লাখ টাকা দিয়ে হাইওয়ে রাস্তার পাশে ৬ শতাংশ জমি কিনেছি। এছাড়াও ২ লাখ টাকা দিয়ে একটি ফসলি জমি বন্ধক নিয়েছি। এই আয় হতে আমার ছেলে-মেয়েদের স্কুল-কলেজে পড়াচ্ছি। আল্লাহর রহমতে আমরা এখন স্বচ্ছলতার সাথে জীবন যাপন করছি। 

কারখানার নারী শ্রমিক মোছা. মর্জিনা বেগম, মোছা. জোৎস্না আক্তার ও মোছা. মঞ্জুয়ারা বেগম বলেন, আমরা ব্যাগ কারখানার শুরু থেকেই এখন পর্যন্ত কাজ করছি। ভালো আছি এখান থেকে যে উপার্জন করি তা দিয়ে আমাদের সংসারে অনেক সহযোগিতা হয়। 

উদ্যোক্ত সাদিনা আক্তারের স্বামী মো. মনোয়ারুল ইসলাম বলেন, আমি ইতোপূর্বে চায়ের দোকান এবং বেকারী পণ্যের ডেলিভারি ম্যান হিসেবে কাজ করতাম। এখন আর কাজ করি না আমার স্ত্রীর ব্যাগ কারখানায় সহযোগিতা করি। এখন আমরা স্বামী-স্ত্রী ও সন্তানদের নিয়ে আল্লাহর রহমতে ভালো আছি।

নতুন উদ্যোক্তা তৈরীতে সাদিনা আক্তার বলেন, সময় নষ্ট করবেন না। বাড়ীতে বসে যে যে কাজ পারেন তাই বাণিজ্যিক ভাবে করেন। সফলতা আসবেই প্রয়োজনে প্রশিক্ষণ নিন। শিখতে ও হালাল পথে উপর্জন করতে কোন ভয় কিংবা লজ্জা নেই। নারীরা আর অবহেলিত নয় নারীরা চাইলে অনেক কিছুই করতে পারে। তিনি আরো বলেন, আমার উৎপাদিত পণ্য এখন স্থানীয় বাজারের চাহিদা মিটিয়ে দেশের নানা প্রান্তে বিক্রি হচ্ছে। 

উল্লেখ্য; নারী উদ্যোক্তা মোছা. সাদিনা আক্তার বিভিন্ন সময়ে সরকারি এবং বে-সরকারি প্রতিষ্ঠান হতে স্বীকৃতি স্বরূপ একাধিক স্মারক পেয়েছেন।

আপনার জেলার সংবাদ পড়তে