মেডিকেলে ভর্তি হয়েও পড়াশোনা নিয়ে দুশ্চিন্তায় ভ্যানচালক বাবা

এম এম মামুন; রাজশাহী | প্রকাশ: ২০ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫, ০২:১৫ পিএম
মেডিকেলে ভর্তি হয়েও পড়াশোনা নিয়ে দুশ্চিন্তায় ভ্যানচালক বাবা
রাজশাহী নগরীর রাজপাড়া মহল্লায় হতদরিদ্র ভ্যান চালকের পরিবারের মেধাবী মেয়ে জান্নাতুল ফারজানা। তিনি এবার হবিগঞ্জ মেডিকেল কলেজে ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন। তবে তার মেডিকেল কলেজে ভর্তির বন্দোবস্ত হলেও পড়াশোনা চালিয়ে যাওয়ার খরচ নিয়ে দুশ্চিন্তায় রয়েছে পরিবার। ফারজানার বাড়ি রাজশাহী নগরীর রাজপাড়া মহল্লায়। বাবার নাম জাহিদ হাসান মুকুল। প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ পরীক্ষা দিয়ে ফারজানা রাজশাহী সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ পেয়েছিল। ২০২২ সালে এই বিদ্যালয় থেকে মাধ্যমিক উত্তীর্ণ হন সব বিষয়ে জিপিএ-৫ নিয়ে। তারপর প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ পরীক্ষা দিয়ে ভর্তি হন রাজশাহী নিউ গভ. ডিগ্রি কলেজে। গত বছর এই কলেজ থেকেই উচ্চমাধ্যমিক উত্তীর্ণ হন সব বিষয়ে জিপিএ-৫ পেয়ে। এবার তিনি হবিগঞ্জ মেডিকেল কলেজে ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন। ভর্তি হয়েছেন ৪ ফেব্রুয়ারি। ফারজানার বাড়ি গিয়ে দেখা যায়, টিনশেড বাড়িতে ছোট ছোট দুটি ঘর। একটা ঘরে থাকেন তাঁর মা-বাবা। অন্য ঘরে দাদি আর ছোট ভাইয়ের সাথে থাকেন জান্নাতুল ফারজানা। বাবা জাহিদ হাসান মুকুল ভ্যান চালক। ফারজানা বলেন, ভর্তি হতে সাড়ে ১৩ হাজার টাকা লেগেছে। এই টাকাটাই আমাদের ছিল না। আমি মেডিকেলে চান্স পেয়েছি দেখে প্রতিবেশীরা এগিয়ে এসেছেন। যে যার মতো করে সহযোগিতা করেছেন। এখন শুনছি মেডিকেল কলেজের বইয়ের অনেক দাম। তা ছাড়া বাড়ি থেকে অনেক দূরে থাকা ও খাওয়ার খরচও আছে। সব মিলিয়ে আমি খুবই দুশ্চিন্তায় আছি। কারণ, আমার ভ্যানচালক বাবার পক্ষে এত খরচ বহন করা কোনোমতেই সম্ভব না। ফারজানা আরও বলেন, অনেক স্বপ্ন ছিল ডাক্তার হব। ডাক্তার হয়ে অসহায় মানুষের সেবা করব। মেডিকেল কলেজে ভর্তির সুযোগ পেয়েছি। কিন্তু পড়াশোনা শেষ করে ডাক্তার হতে পারব কি না জানি না। আমাকে সবাই যদি সহযোগিতা করেন, তাহলে হয়তো সেটা সম্ভব হবে। তা না হলে এখানেই থেমে যেতে হবে। কারণ, এত দারিদ্র্যের মধ্যে তো সব সম্ভব না। ফারজানার বাবা জাহিদ হাসান মুকুল বললেন, ভ্যান চালিয়ে অনেক কষ্ট করেই সংসার চালাই। তারপরও যেভাবেই পারি আমি মেয়ের পড়াশোনাটা চালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেছি। মেডিকেল কলেজে ভর্তি হয়ে মেয়ে আমার মুখ উজ্জ্বল করেছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত আমি তাঁকে পড়াশোনা করাতে পারব কি না জানি না। সমাজের বিত্তবানরা যদি এগিয়ে আসেন, তাহলে আমার মেয়েটার স্বপ্নপূরণ হবে। ডাক্তার হয়ে আমার মেয়ে মানুষের সেবা করবে।
আপনার জেলার সংবাদ পড়তে