বাজারদর: মাছ ও মুরগির দামে স্বস্তি, সবজির দাম ঊর্ধ্বমুখী

নিজস্ব প্রতিবেদন
| আপডেট: ২১ এপ্রিল, ২০২৫, ০৭:২৭ পিএম | প্রকাশ: ২১ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫, ০১:০৪ পিএম
বাজারদর: মাছ ও মুরগির দামে স্বস্তি, সবজির দাম ঊর্ধ্বমুখী

শীতকালীন সবজির মৌসুম শেষ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে বাজারে সবজির দাম বাড়তে শুরু করেছে। তবে তেলাপিয়া ও পাঙ্গাসসহ কিছু মাছ এবং মুরগির মাংসের দাম তুলনামূলক কম থাকায় সাধারণ মধ্যবিত্ত ও নিম্নবিত্ত পরিবার কিছুটা স্বস্তি পাচ্ছে। গরু ও খাসির মাংসের দাম আগের মতোই স্থিতিশীল রয়েছে।

শুক্রবার (২১ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীর রামপুরা ও বনশ্রী বাজার ঘুরে দেখা গেছে, মাছের মধ্যে পাঙ্গাস ও তেলাপিয়ার দাম দুইশোর নিচে রয়েছে। মাঝারি সাইজের পাঙ্গাস বিক্রি হচ্ছে ১৮০ টাকা কেজি, বড় পাঙ্গাস ২৩০-২৫০ টাকা কেজি দরে পাওয়া যাচ্ছে। তেলাপিয়ার দামও তুলনামূলক কম; মাঝারি আকৃতির তেলাপিয়া ১৮০-১৯০ টাকায় এবং বড় তেলাপিয়া ২০০-২৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। সরপুঁটি মাছও ২০০ টাকার মধ্যেই পাওয়া যাচ্ছে।

অন্যান্য মাছের মধ্যে শিং ৩৫০-৪০০ টাকা, রুই ৩০০-৩৫০ টাকা, পাবদা ৪০০ টাকা, কার্প ২২০-২৪০ টাকা, চিংড়ি ৭০০-৮০০ টাকা, মলা ৩৫০ টাকা এবং শোল ৭০০-৮০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

মুরগির বাজারে গত সপ্তাহের তুলনায় কিছুটা দাম কমেছে। ব্রয়লার মুরগি ১৯০-২০০ টাকায়, সাদা লেয়ার ২৫০ টাকা, লাল লেয়ার ৩০০ টাকা এবং সোনালি মুরগি ৩০০-৩২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। দেশি মুরগির দাম এখনও ৫০০-৫৫০ টাকার মধ্যে রয়েছে।

গরু ও খাসির মাংসের বাজার স্থিতিশীল রয়েছে। গরুর মাংস বিক্রি হচ্ছে ৭৫০-৭৮০ টাকায়, খাসির মাংস ১১০০-১২০০ টাকা এবং ছাগলের মাংস ১০০০ টাকা কেজিতে। গরুর কলিজা ৭৫০ টাকা এবং খাসির কলিজা ৫৫০-৬০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।

শীতকালীন সবজির সরবরাহ কমে আসায় সবজির দাম বাড়তে শুরু করেছে। রাজধানীর শেওড়াপাড়া ও তালতলা বাজারে গ্রীষ্মকালীন সবজির দামও বেশ চড়া।

শিম ৩০-৫০ টাকা, বড় ফুলকপি ৩০-৪০ টাকা, বাঁধাকপি ২০-৩০ টাকা, লাউ ৪০-৫০ টাকা, পাকা টমেটো ২০-৪০ টাকা, গাজর ৩০-৪০ টাকা, মটরশুঁটি ৭০-৮০ টাকা, শসা ৬০ টাকা, করলা ৮০-১০০ টাকা, বরবটি ১০০ টাকা, কাঁচা কলা হালি ৪০ টাকা, কাঁচামরিচ ৪০-৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

শাকসবজির মধ্যে লাল শাক, মূলা শাক, পালং শাক ১০ টাকায় পাওয়া গেলেও লাউ শাক ৪০ টাকা, পুঁই শাক ৫০ টাকা এবং ধনেপাতা ১৪০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।

নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের মধ্যে আলু ও পেঁয়াজের দাম স্থিতিশীল রয়েছে। দেশি পেঁয়াজ ৪৫ টাকা, পুরাতন পেঁয়াজ ৮০ টাকা, নতুন আলু ২০-২৫ টাকা এবং লাল আলু ২৫ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে।

আদা ১৪০-২৮০ টাকা, রসুন ২৩০-২৪০ টাকা, মশুর ডাল ১৪০ টাকা, মুগ ডাল ১৮০ টাকা, ছোলা ১১০ টাকা, মিনিকেট চাল ৭৮-৮৬ টাকা, নাজিরশাইল ৭৬-৮৪ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

ডিমের বাজারেও সামান্য ঊর্ধ্বগতি রয়েছে। লাল ডিম এক ডজন ১৩০ টাকা, হাঁসের ডিম ২২০ টাকা এবং দেশি মুরগির ডিমের হালি ৯০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

পূর্ব রামপুরা বাজার থেকে ১৮০ টাকা কেজি দরে পাঙ্গাস মাছ কিনেছেন শহিদুল ইসলাম। তিনি জানান, “মাছ-মাংসের দাম কিছুটা কম থাকায় সংসার চালাতে সুবিধা হচ্ছে। তবে বাজারের দামের আরও নিয়ন্ত্রণ প্রয়োজন।"

বনশ্রী বাজারের মাওলানা রফিকুল ইসলাম বলেন, “এখানে দাম একটু বেশি। ব্রয়লার মুরগি ২০০ টাকায় কিনেছি, অথচ পাশের বাজারে ১৯০ টাকায় পাওয়া যায়। বাজারে স্থিতিশীলতা নেই। আজ কম তো কাল বেড়ে যাবে।”

অন্যদিকে বিক্রেতারা বলছেন, মাছের দাম কিছুটা কম থাকায় বিক্রি ভালো হচ্ছে। রামপুরা বাজারের মাছ বিক্রেতা শওকত মিয়া বলেন, “দাম কম থাকলে বিক্রি ভালো হয়। সকালে সব মাছ বিক্রি হয়ে যায়, কিন্তু দাম বেশি থাকলে বরফ দিয়ে রাখতে হয়।”

মুরগির বিক্রেতা আব্দুল হামিদ জানান, “গত সপ্তাহে মুরগি ২২০ টাকা কেজিতে বিক্রি করেছি, এখন ২০০ টাকা। তবে শুক্রবার সাপ্তাহিক ছুটির দিন হওয়ায় মুরগির চাহিদা বেশি।”

আপনার জেলার সংবাদ পড়তে