চাটমোহরে দুইদিনব্যাপী কবিতা উৎসব

এফএনএস (হেলালুর রহমান জুয়েল; চাটমোহর, পাবনা) : | প্রকাশ: ২২ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫, ০৭:২৩ পিএম
চাটমোহরে দুইদিনব্যাপী কবিতা উৎসব

বাংলা কবিতাকে তৃণমুল মানুষের মাঝে ছড়িয়ে দিতে ‘কবিতা আনুক চিত্তের মুক্তি’ এই শ্লোগানে পাবনার চাটমোহরে অনুষ্ঠিত হয়েছে দুইদিনব্যাপী কবিতা উৎসব। শুক্রবার (২১ ফেব্রুয়ারি) সকাল ১১টায় চাটমোহরের কুমারগাড়া গ্রামে ছায়াঘেরা বাড়ি একান্তে'র কাঞ্চনতলায় উৎসবের উদ্বোধন করেন বিশিষ্ট কবি সাহিত্যিক,নাট্যকার,নির্দেশক ড. ভাস্বর বন্দোপাধ্যায়। স্বাগত বক্তব্য দেন, একান্তের প্রধান নির্বাহী পরিচালক আব্দুর রশিদ। অমর একুশের দলীয় গান দিয়ে শুরু হয় অনুষ্ঠান। এরপর একে একে কবিতা আবৃত্তি করেন ঢাকা,চট্টগ্রাম, রাজশাহীসহ দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে আগত কবি সাহিত্যিকরা। যাদের সবার কণ্ঠে ছিল একুশের কবিতা। পরে সাংবাদিক ও সঙ্গীত শিল্পী মাসুদ রানার একক চিত্র প্রদর্শনী উদ্বোধন ও ঘুরে দেখেন অতিথিরা। 

উৎসবে অংশগ্রহণ ও কবিতা আবৃত্তি করেন বিশিষ্ট কবি সাহিত্যিক নাট্যকার ড. ভাস্বর বন্দ্যোপাধ্যায়,সাবেক সংস্কৃতি সচিব আক্তারী মমতাজ,বাসসের বার্তা সম্পাদক মাহফুজা জেসমিন,অধ্যাপক মনোয়ার হোসেন শাহীন,কথা কবিতা আবৃত্তি চর্চা কেন্দ্র,প্রকৌশলী উত্তম কুমার দাস,আশরাফুল হাসান বাবু,এনামুল হক বাবু,রিচি, প্রজ্ঞা,কাজী বুশরা আহমেদ তিথি,মঞ্জুয়ারা রশিদ,রকিবুর রহমান টুকুন,সৈয়দ শহিদুল ইসলাম নাজু,তিতাস রোজারিও,চিত্রা রোজারিও,রানা আহমেদ,লাবন্য হাসান, মাহফুজ হাসান,শিক্ষার্থী শাপলা খাতুন,শিশু রোকাইয়া সহ অনেকে।

আয়োজক একান্তের প্রধান নির্বাহী পরিচালক আব্দুর রশিদ বলেন,'আজ বিশ্বব্যাপী চিন্তার,চেতনার,বোধের যে অন্ধকার,তার বিরুদ্ধ মানুষ নানাভাবে লড়াই করছে। গানে,কবিতায়,সাহিত্যে,চিত্রকলায়, রাজনীতিতে বিভিন্নভাবে এ লড়াই চলছে। তার অন্যতম একটি মাধ্যম হলো কবিতা। আর এই কবিতাকে দেশের নানা প্রান্তের মানুষকে যুক্ত করা, অনুপ্রাণিত করা এবং এর মাধ্যমে তার চিত্তের মুক্তি ঘটলো। মুলত এই লক্ষ্য নিয়ে আমাদের এই আয়োজন।' আয়োজকদের ধন্যবাদ জানিয়ে উৎসবে অংশগ্রহণকারীরা জানান,এমন আয়োজন ছড়িয়ে দেয়া দরকার।

বিশিষ্ট কবি সাহিত্যিক নাট্যাকার ড. ভাস্বর বন্দোপাধ্যায় বলেন,'দেশে ইংলিশ মিডিয়াম স্কুল বাড়ছে। কথায় কথায় বাংলার মধ্যে ইংরেজি ঢুকে যাচ্ছে। সবমিলিয়ে জগাখিচুরির পরিবেশ তৈরী হচ্ছে। এটি কাম্য নয়। বাংলা ভাষাকে ভালোবেসে গ্রামের মানুষদের সাথে এমন আয়োজন আমাদের আশান্বিত করে,স্বপ্ন দেখায়। এমন আয়োজন সবখানে ছড়িয়ে পড়ুক।' বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থা (বাসস) এর বার্তা সম্পাদক মাহফুজা জেসমিন বলেন,'বাংলা কবিতাকে নিয়ে এত গভীরভাবে শেকড়ের মানুষদের নিয়ে এমন আয়োজন খুব একটা দেখা যায় না। আমাদের শিল্প সংস্কৃতিকে বাঁচিয়ে রাখতে এই ধরণের আয়োজনের সবাইকে যুক্ত করতে হবে। এটি একটি আন্দোলন। সংস্কৃতির এই আন্দোলন এখন অপরিহার্য।' সাবেক সংস্কৃতিক সচিব আক্তারী মমতাজ বলেন,'আমার খুব ভালো লাগছে এমন একটি আয়োজনে অংশ নিতে পেরে। ঢাকা থেকে আসা আবৃত্তি শিল্পীদের সাথে স্থানীয় আবৃত্তি শিল্পীরা,শিশুরা যেভাবে কবিতা আবৃত্তি করলো তা সত্যিই আমিও অভিভূত। এই উদ্যোগকে অভিনন্দন জানাই। এর মাধ্যমে কবিতা ছড়িয়ে যাচ্ছে সাধারণ মানুষের মাঝে।' দুইদিনব্যাপী উৎসবের সারাদিন কবিতা আবৃত্তি ও সন্ধ্যায় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। উৎসব শেষ হয় গতকাল শনিবার। 

আপনার জেলার সংবাদ পড়তে