ঝিনাই নদীর ওপর সেতু: সময়ের দাবি

এফএনএস
| আপডেট: ২৩ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫, ০৭:৩৯ পিএম | প্রকাশ: ২৩ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫, ০৭:৩৯ পিএম
ঝিনাই নদীর ওপর সেতু: সময়ের দাবি

যোগাযোগব্যবস্থা উন্নত না হলে কোনো এলাকার সার্বিক অগ্রগতি সম্ভব নয়। জামালপুর সদর উপজেলার মেষ্টা ইউনিয়নের চান্দের হাওড়া এলাকায় ঝিনাই নদীর ওপর একটি সেতুর অভাবে দীর্ঘদিন ধরে দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন চার উপজেলার দুই লাখের বেশি মানুষ। প্রতিনিয়ত জীবনের ঝুঁকি নিয়ে নৌকায় পারাপার হওয়া, কৃষিপণ্যের ন্যায্যমূল্য থেকে বঞ্চিত হওয়া, শিক্ষার্থীদের বিদ্যালয়ে যেতে না পারা এবং রোগীদের হাসপাতালে নেওয়ার মতো জরুরি কাজেও অসহনীয় দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে এলাকাবাসীকে। এটি শুধু যোগাযোগের সমস্যা নয়, বরং সামগ্রিক উন্নয়ন ও জীবনমানের ব্যাঘাত ঘটানোর বড় কারণ। প্রতিবছর বর্ষা মৌসুমে নৌকায় পারাপারের সময় দুর্ঘটনা ঘটে, প্রাণহানির ঘটনাও নতুন কিছু নয়। শুষ্ক মৌসুমেও দুর্ভোগ কমে না, বরং হাঁটুসমান পানি কিংবা কাদামাটির কারণে চলাচল আরও কষ্টসাধ্য হয়ে ওঠে। সবচেয়ে সংকটপূর্ণ অবস্থা তৈরি হয় মুমূর্ষু রোগীদের জন্য। সময়মতো হাসপাতালে নেওয়া সম্ভব হয় না, ফলে মৃত্যুর ঝুঁকি বেড়ে যায়। এ ছাড়া শিক্ষার্থীরা বিদ্যালয়ে যাওয়া-আসার পথে মারাত্মক ঝুঁকিতে থাকে, অনেক অভিভাবক সন্তানদের স্কুলে পাঠাতেও ভয় পান। অর্থনৈতিক দিক থেকেও সেতুর অভাব চরম নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে। কৃষকদের উৎপাদিত ফসল শহরে নেওয়া কষ্টকর হয়ে পড়েছে, ফলে ন্যায্যমূল্য থেকে তারা বঞ্চিত হচ্ছেন। এ অঞ্চলের কৃষি ও ব্যবসার প্রসারে সহজ যোগাযোগব্যবস্থা জরুরি। শুধু তাই নয়, স্থানীয়রা জানান, সেতুর অভাবে সামাজিক সমস্যাও দেখা দিচ্ছে, বিশেষ করে ছেলে-মেয়েদের ভালো পরিবারে বিয়ে দেওয়া কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছে। জনদাবি উপেক্ষা করে কম গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় সেতু নির্মাণের বিষয়টি প্রশ্নবিদ্ধ। এলাকাবাসী দীর্ঘদিন ধরে আন্দোলন করে আসলেও সেতু নির্মাণের কার্যকর কোনো উদ্যোগ দেখা যায়নি। তবে জামালপুর এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী জানিয়েছেন, তারা কেন্দ্রীয় দপ্তরে সেতুর প্রস্তাব পাঠিয়েছেন। এ বিষয়ে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া প্রয়োজন, যেন আর কোনো মানুষ ঝুঁকিপূর্ণ নৌপথে প্রাণ হারাতে না হয়। একটি সেতু শুধু কংক্রিটের কাঠামো নয়, এটি মানুষের জীবন ও জীবিকার সঙ্গে সরাসরি যুক্ত। তাই চান্দের হাওড়ায় সেতু নির্মাণকে আর বিলম্ব করা চলবে না। সরকারের উচিত দ্রুত প্রয়োজনীয় বরাদ্দ দিয়ে প্রকল্প বাস্তবায়ন করা, যাতে চার উপজেলার মানুষের দুর্ভোগ কমে এবং এলাকার সার্বিক উন্নয়ন ত্বরান্বিত হয়।