এস আলম পরিবারের ৮১৩৩ কোটি টাকার শেয়ার ফ্রিজের আদেশ

নিজস্ব প্রতিবেদক
| আপডেট: ২১ এপ্রিল, ২০২৫, ০৭:২৭ পিএম | প্রকাশ: ২৩ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫, ০৮:০৮ পিএম
এস আলম পরিবারের ৮১৩৩ কোটি টাকার শেয়ার ফ্রিজের আদেশ

বিতর্কিত ব্যবসায়ী মো. সাইফুল আলম (এস আলম) ও তার পরিবারের সদস্যদের নামে থাকা ৮ হাজার ১৩৩ কোটি ৫৬ লাখ ৭২ হাজার টাকার শেয়ার অবরুদ্ধ (ফ্রিজ) করার নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকা মহানগর সিনিয়র স্পেশাল জজ মো. জাকির হোসেন গালিব এ আদেশ দেন।

দুদকের উপপরিচালক তাহাসিন মুনাবীল হক আদালতে শেয়ার অবরুদ্ধের জন্য আবেদন করেন। আবেদনে উল্লেখ করা হয়, এস আলম গ্রুপের কর্ণধার মো. সাইফুল আলম ও তার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে মানিলন্ডারিং ও বিধিবহির্ভূত ঋণ গ্রহণের মাধ্যমে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ তদন্তাধীন রয়েছে।

অনুসন্ধান চলাকালে দেখা গেছে, এস আলম গ্রুপের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও ব্যক্তিরা নামে-বেনামে ব্যাংক থেকে বিপুল অঙ্কের ঋণ নিয়ে তা আত্মসাৎ করেছে এবং দেশ-বিদেশে বিপুল সম্পদের মালিক হয়েছে। এ ছাড়া, এসব সম্পদ অন্যত্র স্থানান্তর কিংবা বেহাত করার প্রচেষ্টা চলছিল। তাই ন্যায়বিচার নিশ্চিত করতে শেয়ারগুলো অবরুদ্ধ করা জরুরি হয়ে পড়ে। শুনানি শেষে আদালত এই আদেশ দেন।

এর আগে, ১২ ফেব্রুয়ারি এস আলম ও তার পরিবারের সদস্যদের ৪২টি কোম্পানির ৫ হাজার ১০৯ কোটি টাকার শেয়ার অবরুদ্ধের আদেশ দেওয়া হয়েছিল। ১৬ জানুয়ারি একই আদালত ৩ হাজার ৫৬৩ কোটি ৮৪ লাখ ২১ হাজার টাকার শেয়ার অবরুদ্ধ করে।

এছাড়া, এস আলম ও তার পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে সিঙ্গাপুর, ব্রিটিশ ভার্জিন আইল্যান্ড ও সাইপ্রাসসহ বিভিন্ন দেশে অর্থ পাচারের অভিযোগ রয়েছে, যার পরিমাণ এক বিলিয়ন ডলার বলে ধারণা করা হচ্ছে।

গত বছরের ৭ অক্টোবর আদালত এস আলম ও তার পরিবারের ১১ সদস্যের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা জারি করেন। ১৪ জানুয়ারি তাদের ২০০ কোটি টাকার স্থাবর সম্পদ ক্রোক করা হয় এবং ৮৭টি ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধ করা হয়। সর্বশেষ ৩০ জানুয়ারি আরও ৩৬৮ কোটি টাকার সম্পদ ক্রোকের আদেশ দেওয়া হয়।

বিশ্লেষকরা মনে করছেন, এই অবরুদ্ধ আদেশ দেশের আর্থিক খাত ও বিনিয়োগের ক্ষেত্রে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। এটি দুর্নীতির বিরুদ্ধে সরকারের কঠোর অবস্থানের প্রতিফলন। তবে এস আলম গ্রুপের পক্ষে এখনো আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।

বিশেষজ্ঞদের মতে, যদি আদালতের আদেশ কার্যকরভাবে বাস্তবায়ন হয়, তবে দেশে অর্থপাচার ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে একটি শক্তিশালী বার্তা যাবে। তবে একই সঙ্গে বিনিয়োগকারীদের মধ্যেও এক ধরনের অস্থিরতা তৈরি হতে পারে, যা বাজারের ওপর প্রভাব ফেলতে পারে।

আপনার জেলার সংবাদ পড়তে