রমজানে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অধিক তৎপরতা জরুরি

এফএনএস | প্রকাশ: ২৪ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫, ০৮:২০ পিএম
রমজানে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অধিক তৎপরতা জরুরি

দাবিদাওয়া নিয়ে মানুষকে জিম্মি করে গত কয়েক মাস ধরেই রাজপথ গরম করা কর্মসূচি দিচ্ছে বিভিন্ন গোষ্ঠী। এটি শুধু জনভোগান্তিই সৃষ্টি করছে না, জননিরাপত্তাকে হুমকির মুখে ঠেলে দিচ্ছে। নানা সংঘর্ষের সৃষ্টি হচ্ছে। সংঘর্ষের ঘটনা ছাড়াও প্রতিদিন কোথাও না কোথাও ছিনতাইকারীদের কবলে পড়ছে সাধারণ মানুষ। এমনকি দিনদুপুরেও বিভিন্ন যানবাহনে ছিনতাই হচ্ছে অভিনব কায়দায়। ছিনতাইকালে ছিনতাইকারীরা ব্যবহার করছে দেশীয় ধারালো অস্ত্র এবং আক্রান্তরা বাধা দিতে গেলে কুপিয়ে জখম করা হচ্ছে তাদের। রাজধানীর প্রধান সড়কগুলো তো বটেই, অলিগলিতেও হরদম ছিনতাই হচ্ছে এবং এ অপকর্ম করছে প্রধানত কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যরা। প্রতিদিনই ঘটছে একাধিক খুনের ঘটনা। ইতোমধ্যে ছিনতাইকারীদের ছুরিকাঘাতে চারজনের মৃত্যু হয়েছে, আহত হয়েছেন অনেকে। শুধু পথেই নয়, বাড়িতেও নিরাপত্তা পাচ্ছেন না সাধারণ মানুষ। পথেঘাটে হানা দেওয়ার পাশাপাশি বাসায়ও হানা দিচ্ছে দুর্বৃত্তরা। অবৈধ আগ্নেয়াস্ত্রের ব্যবহার বাড়ছে। বাড়ছে খুনখারাবি, চাঁদাবাজি, চুরি, ডাকাতি, ছিনতাই, অপহরণ, রাহাজানি, লুটতরাজের মতো ঘটনা। ফলে মানুষের মধ্যে নিরাপত্তার অভাববোধ ক্রমেই তীব্র হচ্ছে। সারা দেশেই অপরাধ কর্মকাণ্ড বাড়ছে। প্রায় প্রকাশ্যে অবৈধ আগ্নেয়াস্ত্র প্রদর্শন করা হচ্ছে। চাঁদাবাজি বন্ধ হওয়ায় বেড়েছে চুরি, ডাকাতি ও ছিনতাই। রমজানে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি খারাপ হতে পারে। ছিনতাইয়ের এ প্রবণতার নেপথ্যে অন্যতম দুর্বলতা হিসেবে কাজ করছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী এবং শাস্তি অপ্রতুল ও জামিনযোগ্য হওয়া। জামিনে বেরিয়ে এসে এরা আবারও বেপরোয়া হয়ে উঠছে। রাজধানীতে শতাধিক ছিনতাই হটস্পট তৈরি হয়েছে। এর মধ্যে বেশকিছু এলাকায় ছিনতাইকারীরা প্রকাশ্যে বিচরণ করে। এমন অবস্থায় স্বাভাবিকভাবেই রাজধানীজুড়ে আতঙ্ক বিরাজ করছে। উদ্বেগের বিষয় হচ্ছে, ছিনতাইয়ের ঘটনার প্রতিকার তথা আসামিদের গ্রেফতারের উদ্যোগ দৃশ্যমান নয়। পুলিশের পক্ষ থেকে অবশ্য বলা হচ্ছে, ছিনতাইকারীদের গ্রেফতার করা হলেও অনেক সময় আইনের ফাঁক গলে তারা বেরিয়ে যায়। এটি যে সন্তোষজনক উত্তর নয়, তা বলাই বাহুল্য। কারণ জনগণের করের টাকায় বেতনভুক পুলিশ বাহিনী সাধারণ মানুষের নিরাপত্তা নিশ্চিত করবে এবং সমাজে আইনশৃঙ্খলা বজায় রাখবে, এটাই প্রত্যাশিত। কিন্তু অপরাধ নিয়ন্ত্রণে যদি তারা নির্বিকার ভূমিকা পালন করে, তা শুধু অনভিপ্রেতই নয়, উদ্বেগজনকও বটে। মানুষ এমন অস্থিরতার মধ্যে চলতে পারে না! সমাজের মানুষ নিরাপত্তায় জীবনযাপন করতে চায়। এ নিশ্চয়তা শুধু সরকারই দিতে পারে। তাই আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর নজরদারি বাড়ানোসহ কঠোর আইন প্রণয়ন ও সঠিক প্রয়োগের মাধ্যমে এ অপরাধ কমতে পারে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় সরকারের দৃঢ় অবস্থান নেওয়ার বিকল্প নেই।