ঝিকরগাছায় লাশের সাথে অমানবিকতা এবং নিষ্ঠুরতা

এফএনএস (মোঃ ইলিয়াস উদ্দিন; ঝিকরগাছা, যশোর) : | প্রকাশ: ২৬ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫, ০৭:০৭ পিএম
ঝিকরগাছায় লাশের সাথে অমানবিকতা এবং নিষ্ঠুরতা

যশোরের ঝিকরগাছায় সন্ত্রাসী পিয়াল হত্যা মামলার আসামি হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে আমিরুল ইসলাম (৫৬) মঙ্গলবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) রাতে মারা গেলে মৃতের পৈত্রিক কবরস্থানে দাফন করতে দেয়া হয়নি। সেই সাথে সন্ত্রাসী পিয়ালের বাবা-মা, আত্মীয়-স্বজন মৃত আমিরুলের স্ত্রী আইশা বেগম, বড় মেয়ে রিনিকে বেদম মারপিট করে মোবারকপুর গ্রাম থেকে মরদেহ সহ তাড়িয়ে দেয়।

তাদের ভয়ে ওই রাতে মঙ্গলবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) ঝিকরগাছা থানায় রাতভর লাশ নিয়ে আশ্রয় নিয়েছিল। বুধবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) সকালে মৃত আমিরুল ইসলামকে নিয়ে তার বোন পলি খাতুন নিজ শশুরালয় কাটাখাল বেলে বটতলার কবরস্থানে বুধবার আসরের নামাজের পর দাফন করেন। এলাকাবাসী সন্ত্রাসী পিয়ালের পরিবার-পরিজনের এ ধরনের কর্মকাণ্ডের বিচার দাবি করেছেন।

পারিবারিক সূত্র জানিয়েছে, সন্ত্রাসী পিয়াল হত্যার ১০ নম্বর আসামি আমিরুল ইসলাম (৫৬) খুলনা জেলখানায় অসুস্থ হয়ে পড়লে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তার চিকিৎসার ব্যবস্থা করেন। মহামান্য আদালত গত ২৩ জানুয়ারি জামিন মঞ্জুর করলে ২৭ জানুয়ারি জেলখানা থেকে বেরিয়ে আসেন। এরপর যশোর সদর উপজেলার পুলেরহাট গ্রামে  আমিরুল ইসলামের (৫৬) মেয়ে রিনির বাড়ি থেকে চিকিৎসাধীন ছিলেন। বুধবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) রাতে আমিরুল ইসলাম অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে যশোর কুইন্স হাসপাতালে নিয়ে গেলে ডাক্তার মৃত্যু ঘোষণা করেন।

মেয়ে রিনি পিতা আমিরুল ইসলামের মরদেহ নিয়ে ঝিকরগাছা পৌর সদরের মোবারকপুর গ্রামে পৈত্রিক বাড়িতে ওঠেন। সাথে তার মা আয়েশা বেগম (মৃতের স্ত্রী) ছিলেন।  আমিরুলের মরদেহ নিয়ে মেয়ে রিনি এবং তার মা আয়েশা বেগমকে দেখে সন্ত্রাসী পিয়ালের পরিবার পরিজন তাদের উপরে হামলা চালায়। মরদেহ সহ তাদেরকে বাড়ি থেকে তাড়িয়ে বের করে দেয়। এরপর তারা মরদেহ নিয়ে সারারাত ঝিকরগাছা থানায় অবস্থান করেন। সকাল হলে মৃত আমিরুলের মরদেহ নিয়ে তোর বোন পলি খাতুন ঝিকরগাছা পৌর সদরের কাটাখাল বেলে বটতলা গ্রামে নিয়ে যান। পলি খাতুন ওই গ্রামের বাবলু হোসেনের স্ত্রী। বুধবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) বিকালে তাকে কাটাখাল কবরস্থানে দাফন করা হয়।

বুধবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) বিকালে মৃত আমিরুল ইসলামের বোন পলি খাতুন জানান, মঙ্গলবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) রাতে আমার ভাবি আয়েশা খাতুন এবং ভাইঝি রিনি, মৃত ভাইকে নিয়ে মোবারকপুর গ্রামের বাড়িতে উঠলে ওই গ্রামের হত্যার শিকার সন্ত্রাসী পিয়ালের পিতা কিতাব আলী, তার মা বিলকিস বেগম ভাই সুমন হোসেন এবং রহমান, আমার ভাবি এবং ভাইঝির উপরে হামলা চালিয়ে তাদেরকে আহত করেন।

ঝিকরগাছা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) বাবলুর রহমান খান জানান, একজন মৃত ব্যক্তিকে এবং তার পরিবারের লোকজনদেরকে তাড়িয়ে দিলে তারা ঝিকরগাছা থানা আশ্রয় নিয়েছিলেন। এ ব্যাপারে অভিযুক্ত কিতাব আলীকে ফোন করেও যোগাযোগ করা যায়নি। এ ঘটনায় গ্রামবাসী ফুসে উঠেছে এবং কিতাব এবং তার সাথে সম্পৃক্ত ব্যক্তিদের কে শাস্তি মূলক ব্যবস্থা গ্রহণের দাবী জানিয়েছে।

আপনার জেলার সংবাদ পড়তে