অসাধু ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিন

এফএনএস | প্রকাশ: ২৭ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫, ০৬:৫৪ পিএম
অসাধু ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিন

তেলের দাম কোনোভাবেই সাধারণ মানুষের নাগালের মধ্যে থাকছে না। ছয়-সাতটি কোম্পানির সিন্ডিকেট এবং পাইকারি ও খুচরা ব্যবসায়ীদের কারসাজিতে পণ্যটির দাম ক্রমেই বাড়ছে। সিন্ডিকেট কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করে ভোক্তাদের জিম্মি করে হাজার হাজার কোটি টাকা পকেট থেকে নিয়ে যাচ্ছে। অথচ আন্তর্জাতিক বাজারে সয়াবিন তেলের দাম নিম্নমুখী। বাংলাদেশে ব্যাংকের প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, গত অক্টোবর থেকে চলতি বছরের জানুয়ারি পর্যন্ত দেশে ৫ লাখ ৯৮ হাজার ২৫২ মেট্রিক টন সয়াবিন তেল আমদানি হয়েছে, যা আগের অর্থ বছরের একই সময়ের তুলনায় ৩৪ শতাংিেশ বশি। তাহলে সয়াবিন তেলের দাম বাড়বে কেন? এর পেছনে যে, অসাধু ব্যবসায়ীদের সিন্ডিকেট কাজ করছে, তাতে সন্দেহ নেই। ক্ষমতার পালাবদলের পর স্থানীয় বাজারে ভোজ্য তেলের দর স্থিতিশীল রাখতে ভ্যাট ছাড়ের পাশাপাশি সরবরাহ সংকট কাটাতে দাম বাড়ানো হয়েছিল; তারপরও রমজানের আগে আরেক দফা সয়াবিন তেলের দাম বাড়তে সরকারের কাছে প্রস্তাব দিয়ে কৌশলী বিপণনের পথ ধরেছে উৎপাদনকারী ও বাজারজাতকারীরা। খুচরা পর্যায়ে কমিশন কমিয়ে দেওয়ার পাশাপাশি বাকিতে তেল দেওয়া বন্ধ করা হয়েছে মিলার ও ডিলার পর্যায়ে। যার প্রভাবে পাড়ায় মহল্লার দোকানগুলোতে কমেছে বোতলজাত তেলের সরবরাহ। তবে নিয়মিত সরকারি তদারকির আওতায় থাকা কারওয়ান বাজার, শান্তিনগর, কমলাপুর টিঅ্যান্ডটি কলোনি, মহাখালীর কাঁচাবাজারগুলোতে তেলের যথেষ্ট সরবরাহ দেখা গেছে। বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশনের গবেষণা তথ্য অনুযায়ী, দেশে বছরে ভোজ্যতেলের চাহিদা ২৩ থেকে ২৪ লাখ টন। এর মধ্যে রমজান মাসে চাহিদা ৩ লাখ টন। দেশে ২০২৪ সালের ১ জানুয়ারি থেকে চলতি বছরের ৫ জানুয়ারি পর্যন্ত আমদানি হয়েছে ১৮ লাখ ৫৭ হাজার ৫৪৮ টন। এছাড়া দেশে উৎপাদিত হয়েছে ২ লাখ ৫০ হাজার টন। এছাড়া আমদানি পর্যায়ে পাইপলাইনে রয়েছে ৮ লাখ ১২ হাজার ৫৬৫ টন। বর্তমানে আন্তর্জাতিক বাজারে ভোজ্যতেলের মূল্য নিম্নমুখী। এ তথ্য থেকেই বোঝা যায়, দেশে ভোজ্যতেলের সংকটের কোনো কারণ নেই। বিশেষজ্ঞদের মতে, ভোজ্যতেলের সংকটের মূলে রয়েছে কিছু প্রতিষ্ঠানের কারসাজি। কারা কোন পর্যায়ে কারসাজি করছে, তা চিহ্নিত করে দায়ীদের দ্রুত আইনের আওতায় আনতে হবে। অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব পাওয়ার পরপর বাজার সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে কড়া হুঁশিয়ারি দিয়েছিল। সিন্ডিকেট ভেঙে ফেলা হবে বলে ঘোষণা দিয়েছিল। বাস্তবে এসব হুঁশিয়ারি ‘আষাঢ়ে তর্জনগর্জন সারে’ পরিণত হয়েছে। পণ্যমূল্য আরও বেড়েছে। তারা সরকারের হুঁশিয়ারিকে তোয়াক্কা করেনি। নিত্যপণ্যের ঊর্ধ্বগতিতে নাভিশ্বাস ওঠা মানুষের স্বস্তি ফিরেনি। যেকোনো সরকারের সাফল্যের অন্যতম মাপকাঠি হচ্ছে, পণ্যমূল্য মানুষের সামর্থ্যরে মধ্যে রাখা। বিপুল জনসমর্থন নিয়ে আসা অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে তাদের প্রত্যাশা অকাশচুম্বী। তাই পণ্যের ঊর্ধ্বমুখী মূল্য নিয়ন্ত্রণে কঠোর পদক্ষেপ নিতে হবে। সিন্ডিকেট ভেঙ্গে দিতে হবে।

আপনার জেলার সংবাদ পড়তে