রাজশাহীতে বহুতল ভবনে ঢুকে ‘হাওয়া’ হয়ে গেলেন আ,লীগ নেতা ব্যাটারি বাবু

এম এম মামুন; রাজশাহী | প্রকাশ: ৭ মার্চ, ২০২৫, ১২:১২ পিএম
রাজশাহীতে বহুতল ভবনে ঢুকে ‘হাওয়া’ হয়ে গেলেন আ,লীগ নেতা ব্যাটারি বাবু
রাজশাহী নগরীর একটি বহুতল ভবনে ঢুকে ‘হাওয়া’ হয়ে গেছেন আওয়ামী লীগ নেতা মোস্তাক আহমেদ বাবু। এলাকার সবার কাছে 'ব্যাটারি বাবু' নামে পরিচিত। সিসি ক্যামেরার ফুটেজে দেখা যায় ভবনের নিরাপত্তা প্রহরীর খাতায় তার নাম লিখে স্ত্রী-সন্তানদের সাথে নিয়ে সিঁড়ি দিয়ে ভবনে উঠতে দেখা যাচ্ছে। তবে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর দীর্ঘ অভিযানেও তাকে পাওয়া যায়নি। মোস্তাক আহমেদ বাবু নগরীর বোয়ালিয়া (পশ্চিম) থানা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক। ছাত্র-জনতার ওপর হামলার মামলার এজাহারভুক্ত আসামি তিনি। গত ৫ আগস্ট হাসিনা সরকারের পতনের পর থেকেই তিনি আত্মগোপনে ছিলেন। গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে ছাত্র-জনতা খবর পায় যে, বাবু নগরীর কাদিরগঞ্জ এলাকার একটি বহুতল ভবনে নিজের ফ্ল্যাটে উঠেছেন। প্রথমে ছাত্র জনতা ভবনটি ঘেরাও করে রাখে। এরপর পুলিশ, ডিবি পুলিশ, সিআরটি, সেনাবাহিনী এবং র‌্যাব ভবনটি ঘেরাও করে তল্লাশি শুরু করে। দীর্ঘ সময় তাকে খুঁজে পাওয়া যায়নি। ভোররাত পর্যন্ত আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ভবনটি ঘিরে রেখেছিল। মোস্তাক আহমেদ বাবু রাজশাহীতে একটি ব্যাটারি দোকান পরিচালনা করেন, যার নাম ‘সাব্বির আয়রন স্টোর’। এ কারণেই তাকে সবাই 'ব্যাটারি বাবু' নামে চিনতেন বা ডাকতেন। ব্যাটারির ব্যবসা ছোট হলেও তিনি অত্যন্ত বিলাসী জীবনযাপন করেন। তার বিরুদ্ধে আন্ডারওয়ার্ল্ডের সঙ্গে সম্পৃক্ততার অভিযোগ রয়েছে। তিনি গোদাগাড়ীর শীর্ষ মাদক ব্যবসায়ীদের সাথে হেরোইনের কারবার চালাতেন এবং সারাদেশে নারী সাপ্লাই সিন্ডিকেটে জড়িত ছিলেন বলে অভিযোগ রয়েছে। ব্যাটারি বাবু ২০০৩ সালে ক্রিকেটার জিকো হত্যার মামলার আসামিও ছিলেন। ওই মামলার পর তিনি মধ্যপ্রাচ্যে পালিয়ে যান এবং ২০১২ সালে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর দেশে ফিরে মহানগর ছাত্রলীগের তৎকালীন সাধারণ সম্পাদক মীর তৌহিদুর রহমান কিটুর ছত্রছায়ায় রাজনীতি শুরু করেন। পরবর্তীতে তিনি রাজশাহী মহানগরের বোয়ালিয়া (পশ্চিম) থানা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদকের পদ পান। ব্যাটারি বাবুর খোঁজ পাওয়া না যাওয়ায় ছাত্র-জনতার মধ্যে ক্ষোভ সৃষ্টি হয়েছে। ওই রাতে ভবনের সামনে এক নারী সাংবাদিকদের কাছে অভিযোগ করেন, “আমরা তাকে ঢুকতে দেখেছি। তারপর কীভাবে তিনি হাওয়া হয়ে গেলেন, তা বুঝতে পারছি না।” অন্য একজন ছাত্র জানান, ফ্ল্যাটের সামনে গেলে তার পরিবারের সদস্যরা পাঁচ লাখ টাকা দিতে চেয়েছিলেন তাকে গ্রেপ্তার না করানোর জন্য, কিন্তু তারা টাকা না নিয়ে পুলিশকে খবর দিয়েছিলেন। রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত উপপুলিশ কমিশনার (মিডিয়া) সাবিনা ইয়াসমিন বলেন, রাত ৩টা পর্যন্ত অভিযান চলেছে, কিন্তু আসামিকে পাওয়া যায়নি। তাকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।
আপনার জেলার সংবাদ পড়তে