রামগতিতে ধর্ষণের বিচার না পেয়ে কিশোরীর আত্মহত্যা

এফএনএস (নজরুল ইসলাম; রামগতি, লক্ষ্ণীপুর) :
| আপডেট: ৭ মার্চ, ২০২৫, ০৭:৪২ পিএম | প্রকাশ: ৭ মার্চ, ২০২৫, ০৭:০৯ পিএম
রামগতিতে ধর্ষণের বিচার না পেয়ে কিশোরীর আত্মহত্যা

লক্ষ্ণীপুরের রামগতি উপজেলার পশ্চিম চর কলাকোপা গ্রামে জান্নাত বেগম (১৬) নামের এক কিশোরী বৃহস্পতিবার বেলা ১২ টার দিকে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছে। তার পরিবারের অভিযোগ, ধর্ষণের বিচারের নামে সালিসে তাকে উল্টো ভর্ৎসনা করেছিলেন গ্রামের মাতব্বরেরা। এই অপমান সইতে না পেরে জান্নাত আত্মহননের পথ বেছে নিয়েছে।

এ ঘটনায় ধর্ষণ এবং আত্মহত্যায় প্ররোচনার অভিযোগে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে ধর্ষক মো. রাকিবসহ প্রতিবেশী ১২ জনের বিরুদ্ধে গতকাল শুক্রবার সকালে রামগতি থানায় মামলা দায়ের করেছেন জান্নাত বেগমের মা সেলিনা আক্তার। এর মধ্যে ওই গ্রামের মো. হেলাল নামের এক অভিযুক্তকে গ্রেফতার করে আদালতে সোপর্দ করেছে পুলিশ।

জান্নাতের পরিবারের অভিযোগ, প্রতিবেশী মো. খবিরের ছেলে মো. রাকিবের সাথে গত ৬-৭ মাস ধরে জান্নতের প্রেমের সম্পর্ক চলে আসছে। সম্পর্কের জের ধরে গত শনিবার দিবাগত গভীর রাতে জান্নাতের বসতঘরে ড়ুকে জোরপুর্বক ধর্ষণ করে তাকে। এসময় জান্নাতের মা সেলিনা আক্তার টের পেয়ে মেয়ের কক্ষে গেলে রাকিব পালিয়ে। ইতিপূর্বে বিয়ের প্রলোভন দিয়ে রাকিব কয়েকবার ধর্ষণ করেছে বলে জান্নাত তার মাকে জানান। ঘটনাটি তাৎক্ষনিক রাকিবের বাবা-মাসহ পরিবারের লোকজনকে জানালে তারা বিষয়টি কাউকে না বলার জন্য বারণ করে এবং জান্নাতকে রাকিবের বউ করে নিয়ে যাবে বলে আশ্বাস দেন।

পরের দিন বিষয়টি এলাকায় জানাজানি হলে মো. হেলাল, মো. আজাদসহ অভিযুক্তরা গত মঙ্গলবার শালীস বৈঠকের আয়োজন করে। বৈঠকে মো. বাশার, জামশেদ উদ্দিনসহ অভিযুক্তরা জান্নাতকে চরিত্রহীনাসহ বিভিন্ন ধরণের অপবাদ দেয়। বৃহস্পতিবার সকালে জান্নাতকে বাড়িতে রেখে বাড়ির পাশে ফসল দেখতে যায় তার মা সেলিনা। এসময় অভিযুক্ত হেলাল তাদের বাড়িতে গিয়ে জান্নাত ও তার মা সেলিনার চুল কেটে এলাকায় ঘুরাবে বলে হুমকি দিয়ে আসে। এতে মানসিক চাপে বেলা ১২টার দিকে বসতঘরের আড়ার সাথে ওড়না দিয়ে গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যা করে জান্নাত। খবর পেয়ে পুলিশ মরদেহ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য লক্ষ্ণীপুর সদর হাসপাতালে প্রেরন করে।

রামগতি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. কবির হোসেন বলেন, এই ঘটনায় রামগতি থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। ঘটনার সাথে জড়িত মো. হেলাল নামের একজন আটক করে ওই মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে। অপর অভিযুক্তদের গ্রেফতারে অভিযান অব্যাহত আছে।

আপনার জেলার সংবাদ পড়তে