সাতকানিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর একটি আবেদনে দস্তখত করায় ক্ষিপ্ত হয়ে এক ব্যবসায়ীর কান ফাটিয়ে দিয়েছে এক আওয়ামী ভূমিদস্যু ও তার অনুসারীরা।
গতকাল ৭ মার্চ ২০২৫ জুমাবার বাদে জুমা চট্টগ্রাম জেলার সাতকানিয়া উপজেলার ছদাহা ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ডের হরিণতোয়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনা সাতকানিয়াস্থ আর্মি ক্যাম্পে অবহিত করা হয়েছে এবং সাতকানিয়া থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।থানায় দায়েরকৃত অভিযোগ এবং ঘটনাস্থলের ভিডিও সূত্রে জানা যায়, হরিণতোয়া বায়তুচ্ছালাম জামে মসজিদ ও ইসলামিয়া মাদরাসার পূর্ব ও উত্তর পাশে বেশ কিছু সরকারি খাস জায়গা রয়েছে। কিন্তু গ্রামে কোনো জানাযার মাঠ না থাকায় কোনো মুসলিম মারা গেলে রাস্তায় জানাযার নামাজ আদায় করতে হয়।
গত ২৫/২/২৫ তারিখে হরিণতোয়ার একদল সচেতন ব্যক্তি বিষয়টি সাতকানিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মিল্টন বিশ্বাস মহোদয়কে মৌখিকভাবে অবহিত করলে তিনি তাৎক্ষণিক ছদাহা ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মোরশেদুর রহমান চৌধুরীকে এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেয়ার নির্দেশনা দেন। পরে ৩/৩/২৫ তারিখে লিখিত নির্দেশনা দেন।
গতকাল জুমাবার ছদাহা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোরশেদুর রহমান এবং ১ নম্বর ওয়ার্ডের মেম্বার মুজিবুর রহমান উক্ত জায়গা পরিদর্শণের জন্য হরিণতোয়া গমন করেন।
জুমার নামাজের পর তারা জায়গা পরিদর্শণ করেন। এ সময় ইউএনও বরাবর প্রদত্ত আবেদনে অন্যতম স্বাক্ষরকারী জিয়াউর রহমান সওদাগরকে দেখে স্থানীয় মৃত মতিয়র রহমানের ছেলে আব্দুল ছাত্তার, তার ছেলে কিশোর গ্যাং লীডার সাইফুর রহমান সানি, সাত্তারের ভাতিজা মৃত বাঁচা মিয়ার ছেলে জামাল সহ আরো ৫/৬ জন জিয়াউর রহমানের উপর চেয়ারম্যান - মেম্বারের সামনেই সন্ত্রাসী কায়দায় আক্রমণ করে। এতে তার বাম কান ফেটে গিয়ে রক্তাক্ত হয়। শরীরে ফুলা জখম হয়।
স্থানীয়রা তাকে দ্রুত সাতকানিয়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে চিকিৎসার ব্যবস্থা করেন ও আর্মি ক্যাম্প কমান্ডার এবং থানার অফিসার ইনচার্জকে সরাসরি দেখান।
সবার তরে অতি প্রয়োজনীয় জানাযার মাঠের জন্য আবেদনে স্বাক্ষর করায় একজন ফ্যাসিবাদ বিরোধী ব্যবসায়ী সমাজকর্মীর উপর চেয়ারম্যান - মেম্বারের সামনে এরকম ন্যাক্কারজনক আওয়ামী সন্ত্রাসী ভূমিদস্যু গং কতৃক ন্যাক্কারজনক হামলার তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন স্থানীয় সচেতনমহল।
এ বিষয়ে সাতকানিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ জাহেদুল ইসলাম বলেন, "আহত ব্যক্তির লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। হামলা ও আঘাতের বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।"
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, যে জায়গায় জানাযার মাঠের জন্য আবেদন করা হয়েছে তা সরকারি খাস খতিয়ানভুক্ত এবং মসজিদের সাথে লাগোয়া। তাতে জানাযার মাঠ করলে সব দিক দিয়ে সুবিধা হবে। জায়গাটি খালি আছে। তবে উক্ত জায়গাটিতে হামলাকারী আব্দুল ছাত্তারের লুলুপ দৃষ্টি পড়েছে। সে উক্ত জায়গা অবৈধভাবে জোরপূর্বক নিজের দখলে নিতে চায়।
আব্দুল ছাত্তার সাতকানিয়া উপজেলা শ্রমিক লীগের সদস্য। সে আগেও এরকম জায়গা অবৈধভাবে দখলে নেয়ার পায়তারায় লিপ্ত ছিল। তার বিরুদ্ধে হামলা ও মামলাবাজি, দখলবাজি, ৩ লাখ টাকায় রোহিঙ্গাদেরকে অবৈধভাবে এন আই ডি তৈরিতে সহযোগিতাসহ বিভিন্ন অপকর্মে সম্পৃক্তার অভিযোগ রয়েছে।
এমনকি একটি সরকারি খাস জায়গায় তার অবৈধ নির্মাণাধীন পাকা স্থাপনার নির্মাণ কাজ সাতকানিয়া উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভূমি) ফারিস্তা করিমের নির্দেশে বন্ধ রয়েছে।