রাজশাহী পুঠিয়ায় ভেজাল বালাইনাষকে হাট-বাজার ছয়লাভ। বালাইনাষক ব্যবহার করে কৃষকরা প্রতারণার শিকার হচ্ছে। আর কৃষি কর্মকর্তা ঘুষের বিনিময়ে বালাইনাষকের লাইসেন্স নবায়ন করে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। বিসিআইসির সার ডিলারা বলেন,উপজেলায় বালাইনাষকের ডিলার রয়েছে প্রায় তিন শতাধিক। শুধুমাত্র কৃষি অফিসের তদারকির অভাব এবং ব্যবসায়ীদের নিকটে বিশেষ সুবিধা নেওয়ায়। তারপর কৃষি অফিসের কোনো বড় প্রোগ্রাম করতে হলে আমাদের শ্রেনি মোতাকে টাকা দিতে হয়। বর্তমানে যে কর্মকর্তা আছেন, সে আসার পর সবকিছুতে ঘুষ বেশি পরিমাণে নিচ্ছেন। শিলমাড়িয়ার ইউনিয়নের কৃষক গিয়াস উদ্দিন বলেন, আমাদের এলাকায় সবচেয়ে বেশি তাহেরপুরি জাতের পেঁয়াজ ও বিভিন্নরকম সবজি উৎপাদন হয়ে থাকে। কৃষি অফিস সরকারি বরদ্দগুলো প্রান্তিক কৃষকদের মাঝে সঠিকভাবে বিতরণ না করে। বরং অতীতে বেশিরভাগ কৃষি অফিসের সরকারি সুযো-সুবিধাগুলো আ.লীগের নেতাকর্মীদের মাঝে বিতারণ করেছেন। ভালুকগাছি কান্তার বিলের কৃষক করিম মৃধা বলেন, কৃষি অফিসের সঙ্গে বিশেষ সমঝোতা থাকায়, উপজেলা জুড়ে কয়েকজন মিলেমিশে বালাইনাশকের হরমোন, জৈব, দস্তা, জীংক তৈরি করে বাজারজাত করছে। তাদের কোনো আধুনিক মেশিন কিংবা ভালোমানের কোনো কারখানায় নেই। এরা ঘরে বসে বিভিন্ন প্রকার সার বালাইনাষক তৈরি করছে। জানা গেছে, ঢাকার খামার বাড়ি হতে দুই/একটি তৈরির অনুমোদন নিয়ে একাধিক পণ্য বাজার জাত করছে। এলাকার বড় সার বালাইনাষক ডিলারদের সঙ্গে চুক্তি করে ব্যবসা করছে বলে অভিযোগ রয়েছে। ডিলারা কৃষকদের যখন বলছেন, এই সার ও বালাইনাষক ভালো কোম্পানির চেয়ে অনেক ভালো জমিতে কাজ করে। ডিলারদের কথা শুনে ওষুধ দিয়ে জমির রোগ-বালাই যাচ্ছে না। বরং ফসল ও জমির উর্বরতা কমে যাচ্ছে। তারাপুর গ্রামের কৃষক জোব্বার হোসেন বলেন,উপজেলার সব হাট-বাজারে ভেজাল বালাইনাষক বিক্রি হচ্ছে। কোথায় বিক্রি হচ্ছে তা কৃষি অফিস জানে। কিন্তু টাকা ঘুষ নিয়ে কোনো রকম কঠোর পদক্ষেপ গ্রহন করে না। কৃষি অফিসের একজন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, বালাইনাষকের ডিলারদের নিকট হতে কয়েক বছর ধরে উপজেলা কৃষি অফিসের উদ্ভিদ সংরক্ষণ কর্মকর্তা গোলাম সাকলাইন প্রতিবছর মোটা অংকের টাকা ঘুষ নিয়ে বালাইনাষকের লাইসেন্স নবায়ন করে আসছেন। ঘুষের বিষয়টি যা বর্তমান কৃষি কর্মকর্তা জানেন। সাকলাইনকে তিনি কিছু না বলার কারণ হলো,তার মামা আ.লীগের এমপি ছিলেন। এ বিষয়ে উদ্ভিদ সংরক্ষণ কর্মকর্তা গোলাম সাকলাইন বলেন, বালাইনাষকের ডিলারা আমার নিকটে সরকারি নবায়নের ফি জমা দিয়ে তারা আমার কাছে আসেন। আমি কোনো প্রকার টাকা নেয় না। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একটি মালটি ন্যাসনাল কোম্পানির উধবর্তন কর্মকর্তা বলেন,বাংলাদেশের ৬০% বালাইনাষক আমরা কৃষকদের মাঝে বিক্রি করে থাকি। আমাদের কোম্পানি সরকারকে মোটা অংকের কর দিয়ে থাকেন। যে কোম্পানির মালিকরা সরকারকে কর দেয় না, ভূইফোর তাদের কথা কৃষি কর্মকর্তা শুনে। কারণ কোম্পানির পক্ষ থেকে তাদেরকে উপঢোকন দেওয়া হয়। এ জন্য উপজেলায় ভেজাল অবৈধ বালাইনাষকে ছয়লাভ হয়ে গেছে। এ ব্যাপারে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা স্মৃমি রানী সরকার বলেন, আমার বালাইনাষক নবায়ন সংক্রান্ত বিষয়ে কোনো প্রকার টাকা ঘুষ নেয় না। আমারা উপজেলার ডিলারদের মাঝেমধ্যে ভেজাল সার ও বালাইনাষক সঠিক বিক্রি হচ্ছে কিনা তা চেক করে থাকি।