ভেড়ামারায় কলেজের অধ্যক্ষ’র চেয়ার দখলে নিল জাসদ নেতা

এফএনএস (শাহ্ জামাল; ভেড়ামারা, কুষ্টিয়া) : | প্রকাশ: ১০ মার্চ, ২০২৫, ০৪:৪২ পিএম
ভেড়ামারায় কলেজের অধ্যক্ষ’র চেয়ার দখলে নিল জাসদ নেতা

কুষ্টিয়ার ভেড়ামারায় ফিল্মী ষ্টাইলে আর্দশ ডিগ্রী কলেজের অধ্যক্ষ’র চেয়ার দখলে নিয়েছে কলেজেরই সাবেক ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ ও চাঁদগ্রাম ইউনিয়ন জাসদের সহ-সভাপতি মিজানুর রহমান মিজান। রবিবার সকাল সাড়ে ১১টার দিকে কতিপয় ব্যাক্তিকে সাথে নিয়ে কলেজের নিয়মতান্ত্রিক ভাবে নিয়োগ পাওয়া বৈধ অধ্যক্ষ শামসুজ্জামান রঞ্জু কে চেয়ার থেকে জোর পূর্বক উঠিয়ে তিনি চেয়ার দখল করেন। এ ঘটনায় হতবাক হয়ে পড়েছে কলেজে কর্মরত বিএনপি ও জামায়াত সমর্থিত সহকারী অধ্যাপক, প্রভাষক এবং ভেড়ামারার সুশীল সমাজ।

সূত্র জানায়, এক সময় বিএনপির রাজনীতির সাথে সক্রিয় ছিল ভেড়ামারা আর্দশ কলেজের প্রভাষক মিজানুর রহমান মিজান। পরবর্তীতে আওয়ামীলীগ-জাসদ সরকার গঠন করলে তিনি জাসদে যোগদান করেন। পদ পান চাঁদগ্রাম ইউনিয়ন জাসদের সহ-সভাপতির। ফ্যাসিবাদ আওয়ামীলীগ ও জাসদ’র ক্ষমতাকে ব্যবহার করে ২০১৪ সালে আর্দশ কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ’র চেয়ার দখলে নেয় মিজানুর রহমান। তৎকালীন সময় থেকে ২০২৪ সালের ৫ অগাষ্ট পর্যন্ত তিনি অধ্যক্ষের চেয়ার দখল করে রাখেন। ৫ অগাষ্ট স্বৈরাচার আওয়ামীলীগ সরকারের পতন হলে সে আত্ম গোপনে চলে যায়। ১৯ অগাষ্ট বিধি মোতাবেক এবং নিয়মতান্ত্রিক ভাবে আর্দশ কলেজের অধ্যক্ষ’র দায়িত্ব গ্রহন করেন কলেজের সহকারী অধ্যাপক শামসুজ্জামান রঞ্জু। এরপর থেকেই তিনি কলেজ কে ঢেলে সাজানোর চেষ্টা করে আসছেন। গতকাল রবিবার সকাল সাড়ে ১১টার দিকে হঠাৎ করেই কলেজ পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি ফারিহা আক্তার কলেজের সাবেক ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মিজানুর রহমান মিজান সহ কয়েক জন সাঙ্গ পাঙ্গ নিয়ে কলেজে প্রবেশ করেন। এসময় অধ্যক্ষ’র রুমে আকষ্মিক প্রবেশ করেই দেখতে পান কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ শামসুজ্জামান রঞ্জু অধ্যক্ষ’র চেয়ারে বসে নিজ দায়িত্ব পালন করছেন। এসময় জোর পূর্বক তাকে চেয়ার থেকে উঠিয়ে অফিস থেকে বের করে দেন। এরপরই অনিয়ম তান্ত্রিক ভাবে অধ্যক্ষের চেয়ার দখলে নেন, জাসদ নেতা মিজানুর রহমান মিজান।

কলেজের অধ্যক্ষ শামসুজ্জামান রঞ্জু অভিযোগ করে বলেছেন, ১৯ অগাষ্ট কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের দায়িত্ব পায় বিধি মোতাবেক। হঠাৎ করেই কোন কারন ছাড়াই কলেজ পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি ফারিহা আক্তার, সাবেক ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ ও জাসদ নেতা কে নিয়ে কলেজে প্রবেশ করে এবং নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করেই আমাকে অধ্যক্ষের চেয়ার থেকে জোর পূর্বক উঠিয়ে দেয়। এটি একটি চরম ন্যাক্কারজনক ঘটনা। যা চরম ভাবে অবৈধ। একজন কলেজ অধ্যক্ষকে কোন আইনের বলে এবং ক্ষমতার অপব্যবহার করে এহেন কর্মকান্ড ঘটিয়েছে।

ভেড়ামারা পৌর বিএনপির সদস্য সচিব শফিকুল ইসলাম ডাবলু বলেন,  মিজানুর রহমান মিজান আওয়ামীলীগ  ও জাসদ সরকারের শাসনামলে ২০১৪ সাল থেকে ২০২৪ সালের ৫ অগাষ্ট পর্যন্ত অধ্যক্ষের চেয়ারে বসে ক্ষমতার অপব্যবহার করেছে। জাসদের গর্ভে লালিত ও আওয়ামীলীগের পৃষ্টপোষকতায় বেড়ে উঠা সে একজন ফ্যাসিবাদের দোসর। রাজনৈতিক ভাবে চাঁদগ্রাম ইউনিয়ন জাসদের সহ-সভাপতি হিসাবে দীর্ঘদিন দায়িত্ব পালন করে আসছে। তার মতো একজন চিহ্নিত ফ্যাসিষ্ট সরকারের দোসর কলেজের অধ্যক্ষ’র চেয়ার দখলে নেওয়ার প্রচেষ্টা সত্যিই লজ্জাজনক। 

এ বিষয়ে অধ্যক্ষ’র চেয়ার জবর দখল করে নেওয়া জাসদ নেতা মিজানুর রহমান মিজানের সাথে যোগাযোগ করা হলে , তার ব্যবহৃত মোবাইল ফোন বন্ধ পাওয়া গেছে।

আপনার জেলার সংবাদ পড়তে