রামগতিতে কিশোরীকে ধর্ষণের ঘটনায় গ্রেফতার ১

এফএনএস (নজরুল ইসলাম; রামগতি, লক্ষ্ণীপুর) : | প্রকাশ: ১০ মার্চ, ২০২৫, ০৮:১৮ পিএম
রামগতিতে কিশোরীকে ধর্ষণের ঘটনায় গ্রেফতার ১

লক্ষ্ণীপুরের রামগতিতে ধর্ষণের বিচার না পেয়ে কিশোরী আত্মহত্যার ঘটনায় দায়ের করা মামলার প্রধান অভিযুক্ত ধর্ষক মো. রাকিবকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। সোমবার ভোরে কুমিল্লার লাকসাম এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারকৃত রাকিব উপজেলার চর বাদাম ইউনিয়নের পশ্চিম চর কলাকোপা গ্রামের মো. খবিরের ছেলে। গত বৃহস্পতিবার বেলা ১২ টার দিকে উপজেলার পশ্চিম চর কলাকোপা গ্রামে গলায় ফাঁস দিয়ে ওই কিশোরী আত্মহত্যা করে। তার পরিবারের অভিযোগ, ধর্ষণের বিচারের নামে সালিসে তাকে উল্টো ভর্ৎসনা করেছিলেন গ্রামের মাতব্বরেরা। এই অপমান সইতে না পেরে কিশোরী আত্মহননের পথ বেছে নিয়েছে। সোমবার দুপুরে গ্রেফতারকৃত রাকিবকে আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে বলে পুলিশ জানায়। 

এ ঘটনায় ধর্ষণ এবং আত্মহত্যায় প্ররোচনার অভিযোগে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে ধর্ষক মো. রাকিবসহ প্রতিবেশী ১২ জনের বিরুদ্ধে গতকাল শুক্রবার সকালে রামগতি থানায় মামলা দায়ের করেছেন কিশোরীর মা। এর আগে ওই গ্রামের মো. হেলাল নামের এক অভিযুক্তকে গ্রেফতার করে আদালতে সোপর্দ করেছে পুলিশ। এনিয়ে ওই মামলায় দুইজনকে গ্রেফতার করা হলো।

কিশোরীর পরিবারের অভিযোগ, প্রতিবেশী মো. খবিরের ছেলে মো. রাকিবের সাথে গত ৬-৭ মাস ধরে কিশোরীর প্রেমের সম্পর্ক চলে আসছে। সম্পর্কের জের ধরে গত শনিবার দিবাগত গভীর রাতে কিশোরীর বসতঘরে ড়ুকে জোরপুর্বক ধর্ষণ করে তাকে। এসময় মা টের পেয়ে মেয়ের কক্ষে গেলে রাকিব পালিয়ে যায়। ইতিপূর্বে বিয়ের প্রলোভন দিয়ে রাকিব কয়েকবার ধর্ষণ করেছে বলে কিশোরী তার মাকে জানান। ঘটনাটি তাৎক্ষনিক রাকিবের বাবা-মাসহ পরিবারের লোকজনকে জানালে তারা বিষয়টি কাউকে না বলার জন্য বারণ করে এবং কিশোরীকে রাকিবের বউ করে নিয়ে যাবে বলে আশ্বাস দেন।

পরের দিন বিষয়টি এলাকায় জানাজানি হলে মো. হেলাল, মো. আজাদসহ অভিযুক্তরা গত মঙ্গলবার শালীস বৈঠকের আয়োজন করে। বৈঠকে মো. বাশার, জামশেদ উদ্দিনসহ অভিযুক্তরা কিশোরীকে চরিত্রহীনাসহ বিভিন্ন ধরণের অপবাদ দেয়। বৃহস্পতিবার সকালে জান্নাতকে বাড়িতে রেখে বাড়ির পাশে ফসল দেখতে যায় তার মা। এসময় অভিযুক্ত হেলাল তাদের বাড়িতে গিয়ে কিশোরী ও তার মার চুল কেটে এলাকায় ঘুরাবে বলে হুমকি দিয়ে আসে। এতে মানসিক চাপে বেলা ১২টার দিকে বসতঘরের আড়ার সাথে ওড়না দিয়ে গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যা করে কিশোরী। খবর পেয়ে পুলিশ মরদেহ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য লক্ষ্ণীপুর সদর হাসপাতালে প্রেরন করে।

রামগতি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. কবির হোসেন বলেন, এই ঘটনায় প্রধান অভিযুক্ত মো. রাকিবকে গ্রেফতার করে আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে। এর আগে মো. হেলাল নামের অভিযুক্ত একজনকে গ্রেফতার করে আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে। অপর অভিযুক্তদের গ্রেফতারে অভিযান অব্যাহত আছে।

আপনার জেলার সংবাদ পড়তে