রাজশাহীর তানোরে এক ইফতার অনুষ্ঠানের অতিথিকে বরণ করতে গিয়ে দুই পক্ষের সংঘর্ষে রামেক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় এক বিএনপি নেতার ভাই নিহত হন। এঘটনায় বুধবার মধ্যরাতে নিহত বিএনপি কর্মী গনিউল হকের বড় ভাই বিএনপি নেতা সাবেক চেয়ারম্যান মোমিনুল হক মোমিন বাদী হয়ে তানোর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছেন। কিন্তু ঘটনার ৩ দিনেও জড়িতদের গ্রেফতার করা হয়নি। নিহতের বাড়ি উপজেলার পাঁচন্দর ইউপির (কৈচ্যা) মোহনপুর গ্রামে।
থানা পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, ওই মামলায় মোট ৩৭ জনকে আসামি করা হয়েছে। এছাড়া অজ্ঞাত আসামি করা হয় ৫০ থেকে ৬০ জনকে। এতে প্রধান আসামি করা হয় রাজশাহী জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য ও তানোর পৌরসভার সাবেক মেয়র মিজানুর রহমান মিজান। তার বাড়ি তানোর সদরের গুবিরপাড়া গ্রামে। তিনি হুকুমের আসামি হয়েছেন। দ্বিতীয় আসামি পাঁচন্দর ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি প্রভাষক মুজিবুর রহমান। তার বাড়ি কোয়েলহাট গ্রামে। তিনি পেশায় কয়েলহাট কলেজের প্রভাষক। মূলত তারই নেতৃত্বে অনুষ্ঠানে সংঘর্ষ বাধে। এসময় পিটিয়ে হত্যা করা হয় ওই ইউনিয়ন বিএনপির একাংশের সভাপতি ও সাবেক চেয়ারম্যান মোমিনুল হক মোমিনের ছোট ভাই বিএনপি কর্মী গনিউল হককে।
তবে, নিহতের পরিবারের দাবি লোক দেখানোর জন্য এজাহারের ২৫ নম্বর আসামি কচুয়া আইডিয়াল কলেজের অধ্যক্ষ ফুল মোহাম্মাদকে বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে গ্রেফতার করা হয়। কিন্তু এমন লোমহর্ষক হত্যাকান্ডের সব আসামিরা রহস্যজনক কারণে আজো অধরা। ঘটনার ৩ দিনেও জড়িতদের গ্রেফতার করা হয়নি।
দলীয় সূত্রে জানা গেছে, বিএনপির দলীয় ইফতার আয়োজনে শৃংখলা ভঙ্গ করে হত্যাকান্ডের সুনির্দিষ্ট প্রমানের প্রেক্ষিতে মিজান ও মজিবরকে প্রাথমিকসহ বিএনপির দলীয় সকল প্রকার পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়। গত ১৩ মার্চ রাজশাহী জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আবু সাইদ চাঁদ, যুগ্ন-আহ্বায়ক সাইফুল ইসলাম মার্শাল ও সদস্য সচিব বিশ্বনাথ সরকার স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়। এর অনুলিপি বিএনপির দলীয় প্রধানসহ সংশ্লিষ্টদের প্রদান করা হয়।
প্রসঙ্গ, গত ১১ মার্চ মঙ্গলবার তানোর উপজেলার পাঁচন্দর ইউনিয়ন বিএনপির ইফতারে প্রধান বক্তা হিসাবে অংশ নিয়েছিলেন মিজানুর রহমান মিজান। আর প্রধান অতিথি ছিলেন, দলের চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য ও রাজশাহী-১ আসনের মনোনয়নপ্রত্যাশি মেজর জেনারেল (অব.) শরীফ উদ্দিন। ওই ইফতারে শরীফ উদ্দিন আসার আগে তাকে বরণ করে নিতে বিএনপির দুই গ্রুপের নেতাকর্মীরা আগে থেকেই কৃষ্ণপুর-প্রাণপুর মোড়ে অপেক্ষা করছিলেন ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সভাপতি মোমিনুল হকের অনুসারীরা। এসময় প্রধান অতিথিকে বরণ করতে চাইলে বাধা দেন বর্তমান সভাপতি মুজিবুর রহমানের অনুসারীরা। তখন দুই গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষ বাধে। এ সময় গনিউল হক গুরুতর আহত হন। তাকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল। বুধবার সন্ধ্যায় চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান।
এব্যাপারে তানোর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আফজাল হোসেন বলেন, এজাহারভুক্ত এক আসামি প্রিন্সিপাল ফুল মোহাম্মাদকে গ্রেফতার করা হয়েছে। অন্য আসামিদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে বলে জানান ওসি। ই/তা