বিএনপির দুই পক্ষের সংঘর্ষে গানিউল হত্যাকারীদের ‘ফাঁসি’ দাবি করে রাজশাহীর তানোর উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় পোস্টার সাঁটানো হয়েছে। শুধু তানোরে নয়, রাজশাহী নগরীর কোর্ট চত্বর এলাকাতেও এমন পোস্টার সাঁটানো হয়েছে বলে নির্ভরযোগ্য সূত্রে জানা গেছে। বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে কে বা কারা তানোর ও মুন্ডুমালা সদর ছাড়াও উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় এসব পোস্টার সাঁটান হয়। তবে, শুক্রবার সকালের দিকে কিছু এলাকা থেকে বিএনপি নেতা মিজান অনুসারীরা পোস্টারগুলো ছিঁড়ে ফেলেছে বলে জানা গেছে। আজ ২১ মার্চ শুক্রবার এরির্পোট পর্যন্ত মিজানের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রমুলক মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার চেয়ে তার অনুসারীরাও তানোরজুড়ে পোস্টারিং করেছেন। পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, পোস্টারে লেখা রয়েছে তানোর উপজেলার পাঁচন্দর ইউনিয়নের মোহনপুর গ্রামের বিএনপি নেতা ও সাবেক চেয়ারম্যান মোমিনুল হক মোমিনের ছোটভাই বিএনপিকর্মী গানিউল হককে নৃশংসভাবে হত্যাকারী খুনিদের দ্রুত গ্রেফতার ও ফাঁসি চাই। প্রচারে তানোর-গোদাগাড়ী উপজেলাবাসী। পোস্টারে ডানপাশে ফাঁসির দড়ির মধ্যে গানিউল হত্যার হুকুমদাতা প্রধান আসামি রাজশাহী জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য ও তানোর পৌরসভার সাবেক মেয়র মিজানুর রহমান মিজানের ছবি। তার বাড়ি তানোর সদরের গুবিরপাড়া গ্রামে। পাশে পাঁচন্দর ইউনিয়ন বিএনপির একাংেশর সভাপতি প্রভাষক মজিবুর রহমানের ছবি। তার বাড়ি কোয়েলহাট গ্রামে। নিচে উপজেলা যুবদলের সাবেক সদস্য সচিব গোলাম মোর্তুজা, বিএনপি নেতা লুৎফর রহমান, গাফফার মেম্বার ও লফর আলীর ছবি দেওয়া হয়েছে। আর বামে সম্প্রতি বিএনপির দুই পক্ষের সংঘর্ষে নিহত গানিউল হকের ছবি দেওয়া হয়েছে। কে বা কারা এসব পোস্টার লাগিয়েছে। তবে, সে সম্পর্কে স্থানীয়ভাবে কেউ কোনো তথ্য দিতে না পারলেও ধারণা করা হচ্ছে বিরোধীপক্ষের লোকজনই ওই কাজটি করেছে। প্রসঙ্গ, সম্প্রতি ১১ মার্চ মঙ্গলবার পড়ন্ত বিকেলে রাজশাহীর তানোর উপজেলার পাঁচন্দর ইউনিয়ন বিএনপির এক ইফতার অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য ও রাজশাহী-১ আসনের এমপি মনোনয়নপ্রত্যাশি মেজর জেনারেল (অব.) শরীফ উদ্দিনকে বরণ করতে গিয়ে দুই পক্ষের সংঘর্ষ বাধেঁ। ওই সংঘর্ষে বিএনপির কর্মী সমর্থক গানিউল হক মারাত্নক গুরুত্বর আহত হন। পরদিন ১২ মার্চ বুধবার বিকেল পৌনে ৪টার দিকে তিনি রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। ওই ঘটনায় সাবেক চেয়ারম্যান মোমিন বাদি হয়ে মোট ৩৭ জনকে আসামি করে থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। এছাড়া অজ্ঞাত আসামি করা হয় ৫০ থেকে ৬০ জনকে। মামলায় মিজানকে হুকুমের প্রধান আসামি করা হয়। তার বাড়ি তানোর সদরের গুবিরপাড়া গ্রামে। দ্বিতীয় আসামি পাঁচন্দর ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি মুজিবুর রহমান। তার বাড়ি কোয়েলহাট গ্রামে। তিনি পেশায় কয়েলহাট কলেজের প্রভাষক। মূলত তারই নেতৃত্বে অনুষ্ঠানে সংঘর্ষ বাধে। এঘটনায় এজাহারভুক্ত ৪ জন আসামিকে গ্রেফতার করে পুলিশ। তবে, মিজান ও মজিবুরসহ অন্য আসামিরা গা-ঢাকা দেওয়ায় গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ। এব্যাপারে তানোর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আফজাল হোসেন বলেন, এজাহারভুক্ত ৪ জন আসামিকে গ্রেফতার করা হয়েছে। অন্য আসামিদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে বলে জানান ওসি। ই/তা