ফুলবাড়ীতে ধরলা নদীর বন্যা নিয়ন্ত্রণে প্রয়োজন টেকশই বাঁধ

এফএনএস (ফুলবাড়ী, কুড়িগ্রাম) :
| আপডেট: ৫ জানুয়ারী, ২০২৫, ১২:৩৫ পিএম | প্রকাশ: ৯ ডিসেম্বর, ২০২৪, ০৪:৪৪ এএম
ফুলবাড়ীতে ধরলা নদীর বন্যা নিয়ন্ত্রণে প্রয়োজন টেকশই বাঁধ

দেশের উত্তরাঞ্চলের ভারত সীমান্ত ঘেঁষা জেলা কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী উপজেলাটি শীত, খরা ও বর্ষা মৌসূমে নানা প্রকিৃতিক দুর্যোগ প্রবণ এলাকা।  এরমধ্যে খরা মৌসূমে এখানে কাঠ ফাঁটা রোদ, ভ্যাপসা গরম, বর্ষা মৌসূমে ভারতের উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে বন্যা প্রবণ ও শীতকালে হিমালয় থেকে হিম বাতাসে তীব্র ঠান্ডার কাতর হয় এখানকার মানুষরা। এরমধ্যে বন্যার প্রভাবে এ উপজেলার ৬ টি ইউনিয়নের মধ্যে ৫ ইউনিয়নের মানুষ ক্ষতির সম্মূখীন হন বেশি। এখানে বর্ষা এলোই ভারতের উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে বন্যা এখানকারা লাখো মানুষের ঘর-বাড়ি ফসলি জমি বন্যার পানিতে নিম্মজিত হয়। বন্যা কবলিত ও প্রাকৃতিক দুর্যোগ প্রবণ ইউনিয়ন গুলো হচ্ছে-নাওডাঙ্গা, শিমুলবাড়ী, ফুলবাড়ী, বড়ভিটা ও ভাঙ্গামোড় ইউনিয়ন। এই ৫ ইউনিয়নের পাশ দিয়ে বয়ে যাওয়া ধরলা নদী বর্ষাকালসহ জলবায়ু পরিবর্তনের কবলে পড়ে পানিতে ভরে গেলে বন্যার সৃষ্টি করে। বন্যা নিয়ন্ত্রণে এখানে টেকশই বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ না থাকায় প্রতিবছর বর্ষা মৌসূমে ধরলা নদী ঘেঁষা ২৮ কিলোমিটারের একটি মাত্র বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ বিভিন্ন সময় ভেঙে গিয়ে বন্যার পানিতে নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হয়। ফলে প্রতিবছর বন্যা এখানকার হাজার হাজার মানুষ বন্যা কবলিত হয়। উপজেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন অফিস সূত্র জানিয়েছে, নাওডাঙ্গা, শিমুলবাড়ী, ফুলবাড়ী, বড়ভিটা ও ভাঙ্গামোড় ইউনিয়ন ধরলা নদী বেষ্টিত প্রতিবছর বন্যায় এখানকার হাজার হাজার মানুষ বন্যাকবলিত হয়ে পড়ে। এসব মানুষের ঘর-বাড়ি বন্যার পানিতে নিম্মজিত হয়।  ফুলবাড়ী উপজেলার কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্র জানায়, প্রতিবছর ফুলবাড়ী উপজেলার ৬ টি ইউনিয়নের মধ্যে ৫ ইউনিয়নের মানুষ ক্ষতির সম্মূখীন হন বেশি। ৫ ইউনিয়ন নাওডাঙ্গা, শিমুলবাড়ী, ফুলবাড়ী, বড়ভিটা ও ভাঙ্গামোড়ে বন্যায় ২ হাজারেও বেশি হেক্টর জমির ফসল ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এরমধ্যে রোপা আমন, কলা, আখ ও সবজির ফসলের ক্ষতির পরিমান বেশি। এতে প্রায় ১০ হাজার কৃষক বন্যার ক্ষতির শিকার হয় বলে সূত্রটি জানিয়েছে।  স্থানীয় কৃষক ও সাধারন মানুষের অভিমত, ফুলবাড়ী উপজেলার ৫ ইউনিয়ন নাওডাঙ্গা, শিমুলবাড়ী, ফুলবাড়ী, বড়ভিটা ও ভাঙ্গামোড়ের বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত জনসাধারণের জন্য ২৮ কিলোমিটারের একটি মাত্র বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ নির্মাণ হলেও তা টেকসই মজবুত নয়। প্রায় ৩৪ বছরের পুরনো এই বাঁধটি নিমার্ণের পর থেকেই প্রায় সংস্কার হচ্ছেনা।  তবে কিছু স্থানে বাঁধের সংস্কার কাজ চলমান হলেও কাজের মান ভালোনা থাকায় বন্যার পানির তোড়ে ভেঙে সংস্কার বাঁধগুলো ভেঙে যেতে পারে বলে এলাকাবাসী আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন। স্থানয়িদের দাবি, ফুলবাড়ীতে বন্যা থেকে রক্ষা পেতে বন্যা নিয়ন্ত্রণে টেকসই বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ জরুরী। তা না হলে এখানকার মানুষরা বন্যার আক্রমণ থেকে রক্ষা পাবেনা। স্থানীয় সচেতন বাসিন্দা নুর ইসলাম জানান, দীর্ঘদিন পর কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ড কর্তৃক শিমুলবাড়ী ইউনিয়নের ফুলবাড়ী সেতু পাড় থেকে ফুলবাড়ী ইউনিয়নের কিষামত প্রাণকৃষ্ণ ও বড়ভিটা ইউনিয়নের পশ্চিম ধনিরাম গেটের বাজার পর্যন্ত ৩ কি.মি বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের সংস্কার কাজ চলছে। কিন্তু কাজ গুলো নিম্ন মানের হওয়ায় বন্যার পানির তোড়ে বাঁধের অংশ ভেঙে যেতে পারে। এ ব্যাপারে কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রতিনিধি জানান, ফুলবাড়ীতে প্রায় ২৮ কিলোমিটারের মতো বন্য নিয়ন্ত্রণ বাঁধ রয়েছে। বাঁধের ৯ কিলোমিটারের গুরুত্বপূর্ণ কিছু কিছু জায়গায় কাজের টেন্ডার হয়েছে। কাজের জন্য আমরা ঠিকাদার নামানোর চেষ্টা করছি। তবে ভুমি অধিগ্রহণের জটিলতায় পূর্ণাঙ্গভাবে কাজ করা যাচ্ছেনা। আমরা জটিলতা নিরসনে চেষ্টা চালাচ্ছি।

আপনার জেলার সংবাদ পড়তে