সিএনজি চালিত অটোরিকশা চুরির ঘটনা ও পূর্ব বিরোধের জেরে দুই গোষ্ঠীর দফায় দফায় সংঘর্ষে রণক্ষেত্রে পরিণত হয়েছে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইলের তেরকান্দা গ্রাম। গ্রামের চান্দের গোষ্ঠী ও বারেকের গোষ্ঠীর মধ্যে গতকাল মঙ্গলবারসহ দুই দিনের সংঘর্ষে বাড়িঘর ভাংচুর লুটপাট অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে। ইউএনও ওসি ও পাঁচ পুলিশ সদস্যসহ উভয় পক্ষের অন্তত অর্ধশতাধিক লোক আহত হয়েছে। গুরূতর আহত আমির আলী (২৬) ও শানু মিয়াকে (৫৫) ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে ওই গ্রামে পুলিশ অবস্থান করছেন। পুলিশ ও স্থানীয় প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, চান্দের গোষ্ঠীর শাহ নেওয়াজের সিএনজি চালিত অটোরিকশা চুরির ঘটনায় বারেকের গোষ্ঠীর ইরা মিয়ার ছেলে আমির আলীকে দায়ী করা হয়। এ ঘটনায় সালিস বৈঠকও হয়েছে। এর জের ধরে গত সোমবার বাদ মাগরিব তাদের মধ্যে প্রথমে বাকবিতন্ডা ও পরে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। এতে ক্ষুদ্ধ হয়ে রাতেই উভয় পক্ষের কয়েকশত লোক দেশীয় অস্ত্রে সজ্জিত হয়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। পরিস্থিতি সামাল দিতে একদল পুলিশ নিয়ে ঘটনাস্থলে ছুটে যান ওসি রফিকুল হাসান ও ইউএনও মো. মোশারফ হোসাইন। প্রায় দুই ঘন্টার সংঘর্ষে ইউএনও, ওসি ও পাঁচ পুলিশ সদস্য আহত হন। আহত পুলিশ সদস্যরা হলেন- এস আই মো. কবির হোসেন, এ এস আই আলাউদ্দিন, মো. কামরূজ্জামান, কন্সটেবল মো. কুদ্দুছ ও মো. মশিউর। এই সংঘর্ষের জের ধরে গতকাল মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ৬ টার দিকে উভয় পক্ষের সহস্রাধিক নারী পুরূষ ও শিশু আবারও দেশীয় অস্ত্রে সজ্জিত হয়ে সংঘর্ষে লিপ্ত হয়। বেলা বাড়ার সাথে সংঘর্ষের ভয়াবহতা বৃদ্ধি পেতে থাকে। এক সময় সংঘর্ষ সমগ্র গ্রামে ছড়িয়ে পড়ে। দফায় দফায় সংঘর্ষে গোটা তেরকান্দা গ্রামটি রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। শুরূ হয়ে যায় বসতবাড়ি ভাংচুর লুটপাট ও অগ্নিসংযোগ। গ্রামের প্রায় ৭-৮ টি বসতঘর আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেওয়া হয়। লুটপাট ও ভাংচুরের শিকার ১০-১২ টি বসত ঘর। সকাল প্রায় সাড়ে ১০ টা পর্যন্ত চলে এই তান্ডব। দুই দিনের প্রায় ৬ ঘন্টা সংঘর্ষে উভয় পক্ষের প্রায় অর্ধশতাধিক লোক আহত হয়েছে। পুলিশি গ্রেপ্তার এড়াতে আহতরা সরাইল, শাহবাজপুর, কালিকচ্ছ, চান্দুরা ও মাধবপুর এলাকায় প্রাইভেট চিকিৎসা নিয়েছে। ঘটনার সাথে জড়িত সন্দেহে পুলিশ ৪ ব্যক্তিকে আটক করেছেন। সরাইল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. রফিকুল হাসান ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, বর্তমানে ওই গ্রামের পরিস্থিতি শান্ত আছে। গ্রামে পুলিশ অবস্থান করছেন। আইন নিজের হাতে তুলে নিয়ে বিশৃঙ্খলা তৈরীর সাথে জড়িত কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না।