ভারতের ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল: ‘চাপ সামাল দিতে প্রস্তুত’ বাংলাদেশ

নিজস্ব প্রতিবেদক : | প্রকাশ: ১০ এপ্রিল, ২০২৫, ০২:০৮ পিএম : | আপডেট: ২১ এপ্রিল, ২০২৫, ০৭:২৭ পিএম
ভারতের ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল: ‘চাপ সামাল দিতে প্রস্তুত’ বাংলাদেশ

ভারতের দেওয়া ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা হঠাৎ করেই বাতিল করা হয়েছে। তবে এতে বাংলাদেশের পণ্য রপ্তানি কার্যক্রমে দীর্ঘমেয়াদে কোনো বড় সংকট তৈরি হবে না বলে আশ্বস্ত করেছেন বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন। তিনি বলেন, বাংলাদেশ নিজস্ব সক্ষমতায় সংকট মোকাবিলায় প্রস্তুত এবং বিকল্প ব্যবস্থাপনায় আগেই কাজ শুরু হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (১০ এপ্রিল) সচিবালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি বলেন, “ভারত তাদের সিদ্ধান্ত জানিয়ে দিয়েছে। আমাদেরও প্রস্তুতি আছে। আমরা ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলেছি, ক্রেতাদের অবস্থানও বুঝে নিয়েছি। আমাদের লক্ষ্য হচ্ছে—বাণিজ্যিক সক্ষমতা বাড়িয়ে এই পরিস্থিতি অতিক্রম করা।”

তিনি আরও জানান, ভারতের তিনটি বন্দর ব্যবহার করে প্রতিবছর প্রায় ৪০ থেকে ৫০ হাজার মেট্রিক টন পণ্য ট্রান্সশিপমেন্টের মাধ্যমে তৃতীয় দেশে রপ্তানি হতো। এখন সরকার বিকল্প পথ ও কৌশল খুঁজছে—যার মাধ্যমে এই পরিমাণ পণ্য স্থানান্তরের ব্যবস্থা সম্ভব।

ভারতের সেন্ট্রাল বোর্ড অব ইনডাইরেক্ট ট্যাক্সেস অ্যান্ড কাস্টমস (CBIC) গত মঙ্গলবার (৮ এপ্রিল) এক নোটিশের মাধ্যমে বাংলাদেশকে দেওয়া ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিলের সিদ্ধান্ত জানায়। ভারতীয় সংবাদমাধ্যম 'দ্য ট্রিবিউন' ও 'ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস' জানিয়েছে, বিমানবন্দর ও সমুদ্রবন্দরে লজিস্টিক জট এবং খরচ বৃদ্ধি এই সিদ্ধান্তের পেছনে প্রধান কারণ।

ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, "আমরা বাংলাদেশের সঙ্গে গঠনমূলক ও ইতিবাচক সম্পর্ক চাই। তবে আমাদের বিমানবন্দর ও বন্দরে দীর্ঘজট, দেরি ও খরচ বেড়ে যাওয়ায় সিদ্ধান্তটি নিতে হয়েছে।"

তবে তিনি এটিও স্পষ্ট করেন যে, ব্যাংককে দুই দেশের শীর্ষ নেতাদের আলোচনায় যেসব অগ্রাধিকারমূলক বিষয় ছিল, ভারত সেই আলোচনা ও সম্পর্ককে গুরুত্ব দিয়েই দেখে।

বাণিজ্য উপদেষ্টা জানান, “পরিস্থিতি যেমন-ই হোক, পাল্টা ব্যবস্থা নেওয়া আমার কাজ নয়। বরং আমরা যা করতে পারি, তা হলো—আমাদের সক্ষমতা বাড়ানো এবং বিকল্প যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন।”

তিনি বলেন, অবকাঠামোগত উন্নয়ন, পরিবহন খরচ হ্রাস ও যোগাযোগ ব্যবস্থার বিস্তারে সরকার এখন থেকে আরও মনোযোগ দেবে। এতে ভবিষ্যতে শুধু এই সংকট নয়, সামগ্রিকভাবে রপ্তানিতে প্রতিযোগিতামূলক অবস্থানও মজবুত হবে।

সামাজিক মাধ্যমে 'পাল্টা ট্রান্সশিপমেন্ট বা ট্রানজিট বাতিল' নিয়ে আলোচনা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “এটি আমার বিবেচ্য বিষয় নয়। আমরা গঠনমূলকভাবেই অগ্রসর হতে চাই।”

আন্তর্জাতিক বাণিজ্য পরিস্থিতি প্রসঙ্গে বাণিজ্য উপদেষ্টা আরও জানান, যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশি পণ্যের ওপর বাড়তি শুল্ক আরোপের সিদ্ধান্ত ৩ মাসের জন্য স্থগিত করেছে। এই সিদ্ধান্ত দুই দেশের মধ্যকার শুল্কসংক্রান্ত আলোচনায় ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।

0 LIKE
0 LOVE
0 LOL
0 SAD
0 ANGRY
0 WOW
আপনার জেলার সংবাদ পড়তে