সুজানগরে সনাতন পদ্ধতিতে পেঁয়াজ সংরক্ষণ, পচনে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক

এফএনএস (সুজানগর, পাবনা) : | প্রকাশ: ১৯ এপ্রিল, ২০২৫, ০২:০২ পিএম
সুজানগরে সনাতন পদ্ধতিতে পেঁয়াজ সংরক্ষণ, পচনে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক

বাংলাদেশের মধ্যে পেঁয়াজ আবাদে পাবনার সুজানগর উপজেলা প্রথম। সেকারণে এ উপজেলা দেশের পেঁয়াজ ভাণ্ডার হিসেবে খ্যাত। অথচ উপজেলার অধিকাংশ কৃষক বছরের পর বছর টিনের ঘর বা সেমিপাকা ঘরে বাঁশের মাচা তৈরী করে সনাতন পদ্ধতিতে পেঁয়াজ সংরক্ষণ করে আসছেন। এ পদ্ধতিতে পেঁয়াজ ]সংরক্ষণ করায় ব্যাপক পচন ধরে। এতে পেঁয়াজ চাষীদের প্রতি বছর লক্ষ লক্ষ টাকার ক্ষতি হয়। 

উপজেলার দুর্গাপুর গ্রামের বড় পেঁয়াজ চাষী মোঃ কামরুজ্জামান বলেন সনাতন পদ্ধতিতে বাঁশের মাচায় পেঁয়াজ সংরক্ষণ করলে প্রয়োজনীয় আলো-বাতাসের স্বল্পতা দেখা দেয়। এতে একদিকে পেঁয়াজে ব্যাপক পচন ধরে, অন্যদিকে শুকিয়ে ওজন একদম কমে যায়। তাছাড়া বাঁশের মাচা তৈরী করতে অনেক খরচ হয়। সব চেয়ে বড় সমস্যা সনাতন পদ্ধতিতে পেঁয়াজ দীর্ঘ মেয়াদে সংরক্ষণ করা যায়না। আর সেকারণে পেঁয়াজ চাষীরা ন্যায্য মূল্য পাওয়ার আগেই বিক্রি করে দিতে বাধ্য হয়। ফলে বেশিরভাগ সময় পেঁয়াজ বিক্রি করে কৃষকের উৎপাদন খরচই উঠেনা। উপজেলার মানিকহাট গ্রামের পেঁয়াজ চাষী ওমর আলী প্রামাণিক বলেন সনাতন পদ্ধতির পরিবর্তে বিদ্যুৎ চালিত এয়ার ফ্লো মেশিনের মাধ্যমে আধুনীক পদ্ধতিতে পেঁয়াজ সংরক্ষণ করতে পারলে কৃষক বেশ লাভবান হতো। এ পদ্ধতিতে পেঁয়াজ সংরক্ষণ করলে পেঁয়াজে পচন ধরেনা। তাছাড়া ওজনও তেমন কমেনা। পাশাপাশি ওই পদ্ধতিতে একটি সেমিপাকা ঘরের মেঝেতে মাত্র দশ ফুট দৈর্য্য এবং দশ ফুট প্রস্থের একটি বাঁশের মাচা ও ইটের দেয়াল তৈরী করে তার মাঝে প্রায় তিন‘শ মণ পেঁয়াজ সংরক্ষণ করা যায়। এ পদ্ধতিতে সব চেয়ে বড় সুবিধা ন্যায্য মূল্য পাওয়ার জন্য দীর্ঘ মেয়াদে পেঁয়াজ ঘরে সংরক্ষণ করা যায়। অবশ্য উপজেলার কিছু সংখ্যক কৃষক আধুনীক ওই পদ্ধতিতে পেঁয়াজ সংরক্ষণ শুরু করেছেন। কিন্তু এয়ার ফ্লো ওই মেশিন কিছুটা ব্যয়বহুল হওয়ায় উপজেলার  অধিকাংশ কৃষক সনাতন পদ্ধতিতেই পেঁয়াজ সংরক্ষণ করছেন। উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ রাফিউল ইসলাম বলেন এ উপজেলার কৃষকেরা যাতে তাদের উৎপাদিত পেঁয়াজ আধুনীক পদ্ধতিতে সংরক্ষণ করে দীর্ঘ মেয়াদে ঘরে রাখতে পারে সে জন্য কৃষি বিভাগ প্রণোদনা কর্মসূচি ও প্রকল্প গ্রহণ করেছে। আশা করি ওই প্রকল্প বাস্তবায়িত হলে কৃষক দীর্ঘ মেয়াদে পেঁয়াজ সংরক্ষণ করে ন্যায্য মূল্য নিশিচত করতে পারবে। সেই সঙ্গে পেঁয়াজের আমদানি নির্ভরতাও  হ্রাস পাবে।

আপনার জেলার সংবাদ পড়তে