কালীগঞ্জে স্ত্রীর নাম ব্যবহার করে শুমারির টাকা আত্মসাৎ পরিসংখ্যান কর্মকর্তার

এফএনএস (টিপু সুলতান; কালীগঞ্জ, ঝিনাইদহ) : | প্রকাশ: ১৯ এপ্রিল, ২০২৫, ০৪:৫৪ পিএম
কালীগঞ্জে স্ত্রীর নাম ব্যবহার করে শুমারির টাকা আত্মসাৎ পরিসংখ্যান কর্মকর্তার

নিজ স্ত্রীর তথ্য গোপন করে ও ভুয়া ঠিকানা দেখিয়ে অর্থনৈতিক শুমারির কাজে "সুপারভাইজার"পদে নিজ স্ত্রীর নাম ব্যবহার করে গোপনে সরকারি অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে পরিসংখ্যান তদন্তকারী কর্মকর্তার বিরুদ্ধে। এমন ঘটনা ঝিনাইদের কালীগঞ্জ উপজেলা পরিসংখ্যান অফিসে। কালীগঞ্জ অফিসের পরিসংখ্যান তদন্তকারী কর্মকর্তা পুলক কুমার দত্ত তার স্ত্রী বনি দত্তকে কাগজে-কলমে নিয়োগ দেথিয়ে "সুপারভাইজার"পদের সকল সুবিধা ভোগ ও পারিশ্রমিকের টাকা আত্মসাৎ করেছেন। স্ত্রী বনি দত্ত কালীগঞ্জ উপজেলার স্থায়ী বাসিন্দা না হলেও অর্থনৈতিক শুমারি-২০২৪ এর মূল শুমারি কার্যক্রমে সরকারি শর্ত ভেঙে অস্থায়ী ভাবে নিয়োগ কমিটি "সুপারভাইজার"পদে তাকে নিয়োগ দেন। তাকে  উপজেলার ৭ নং রায়গ্রাম ইউনিয়নের একজন সুপারভাইজার হিসেবে দায়িত্ব দেখানো হয়। 

এ ব্যাপারে রায়গ্রাম ইউনিয়নের অর্থনৈতিক শুমারি কার্যক্রমে ১২ জন তথ্য সংগ্রহকারী ও ২ জন সুপারভাইজার পদে নিয়োগ পেয়েছিলেন। স্বশরীরে মাঠ পর্যায়ে নিয়োগ প্রাপ্ত ১৩ জন কাজ করলেও তারা কখনো বনি দত্তকে কাজ করতে দেখেননি। ইউনিয়নের তথ্য সংগ্রহ কারীরা এবং বাকি একজন সুপারভাইজার পরিসংখ্যান অফিসের সহায়ক বানি দত্তের কাজ সম্পন্ন করে দিতেন। এমনকি কাজ শুরুর পূর্বের ট্রেনিং চলাকালীন সময় বনি দত্তকে দেখা যায়াস ও ট্রেনিংয়ে অংশ গ্রহন করেনি। দুর্নীতি পরায়ন স্বামী এবং অস্বচ্ছ  নিয়োগ কমিটির কারণে পরিসংখ্যান ও তথ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের আওতায় বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো কর্তৃক বাস্তবায়নকৃত অর্থনৈতিক মূল শুমারি কার্যক্রমে কাগজ কলমে নিয়োগ পেয়ে সরকারি অর্থ লোপাট করেন বনি দত্ত। 

কালীগঞ্জ রায়গ্রাম ইউনিয়নের তথ্য সংগ্রহ কারী মিতু দাস, আখি দাস ও জয়ার সঙ্গে কথা বলে জানা যায়,বনি দত্ত নামে একজন সুপারভাইজার এর নাম কাগজে কলমে দেখলেও মাঠ পর্যায়ে কাজ করতে তাকে কখনো দেখিনি। তবে কাগজে তার নাম ঠিকানা গ্রাম উল্লেখ ছিল রায়গ্রাম,কিন্তু এ নামে রায়গ্রামে কেউ আছে কিনা আমার জানা নেয়।অর্থনৈতিক শুমারিটি শুরু হয় ১০ ডিসেম্বর ২০২৪। যা চলে ২৬ ডিসেম্বর ২০২৪ পর্যন্ত মোট ১৫ দিনব্যাপী। সারা দেশে ৯৫ হাজার তথ্য সংগ্রহ কারী এ শুমারিতে তথ্য সংগ্রহ করেন। দুর্নীতিবাজ স্বামীর সহায়ক ভুল ঠিকানা উল্লেখ করে কাজ না করে শুধুমাত্র কাগজে-কলমে নিয়োগ পেয়ে অর্থ আত্মসাতের ব্যাপারে কথা বলতে বনি দত্তের মোবাইল ফোনে একাধিকবার ফোন দিলেও তিনি  রিসিভ করেননি। বনি দত্তের স্বামী পরিসংখ্যান তদন্তকারী কর্মকর্তা পুলক কুমার দত্ত অনৈতিক উপায়ে স্ত্রীর নিয়োগ দেওয়ার ব্যাপারটি স্বীকার করে বলেন,তার নাম ব্যবহার হলেও কাজগুলো তো আমি করে দিয়েছি। এখানে সমস্যা কোথায়। স্থায়ী বাসিন্দা না হয়ে অসত্য তথ্য দিয়ে বনি দত্ত কিভাবে নিয়োগ পেলেন এমন প্রশ্নের উত্তর তিনি কৌশলে এড়িয়ে যান।  

ঝিনাইদহ জেলা পরিসংখ্যান অফিসের উপ-পরিচালক আব্দুল আলিম বলেন,ওই ইউনিয়নের একজন সুপারভাইজার নিয়োগ দেওয়া হয়েছিল যিনি কাজ করেননি। তার পরিবর্তে বনি দত্তকে দেওয়া হয়। স্থায়ী বাসিন্দা না হওয়ায় এবং কাজ না করে সরকারি অর্থ গ্রহনের ঘটনাটি অনিয়ম করা হয়েছে বলে জানান। 

অর্থনৈতিক শুমারির নিয়োগ কমিটির সভাপতি ও কালীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা দেদারুল ইসলাম বলেন, দুর্নীতির ব্যাপারটি আমার জানা ছিল না। আমি খতিয়ে দেখবো।

আপনার জেলার সংবাদ পড়তে