ত্রিশালের ইউপি প্রশাসনিক কর্মকর্তা আব্দুল লতিফের বদলী

এফএনএস (ত্রিশাল, ময়মনসিংহ) : | প্রকাশ: ২৩ এপ্রিল, ২০২৫, ০৭:২৭ পিএম
ত্রিশালের ইউপি প্রশাসনিক কর্মকর্তা আব্দুল লতিফের বদলী

হবিগঞ্জের বাসিন্দা হয়ে ভারতে থেকে ত্রিশাল থেকে অবৈধভাবে জন্মনিবন্ধন করা, জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধন কার্যালয়ের সহকারী রেজিস্ট্রারের আদেশ উপেক্ষা করে কাজ করে যাওয়া ভূয়া জন্ম নিবন্ধন করে আলোচনা সৃষ্টিকারী ময়মনসিংহের ত্রিশাল উপজেলার কানিহারী ইউনিয়ন পরিষদের বিতর্কিত প্রশাসনিক কর্মকর্তা আব্দুল লতিফের বিরুদ্ধে অবশেষে ব্যবস্থা নিল সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।

গত ২১ এপ্রিল জনপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল ফেয়ার নিউজ সার্ভিস (এফএনএস)-এ ‘ভারতে থেকেও হবিগঞ্জের হয়ে ত্রিশালে জন্ম নিবন্ধন, ইউপি প্রশাসনিক কর্মকর্তা আব্দুল লতিফের ভূয়া জন্ম নিবন্ধন কেলেংকারী’ শিরোনামে সংবাদ প্রকাশিত হওয়ার পর তোলপাড় সৃষ্টি হয়। নজরে আসে সশ্লিংষ্ট কর্তৃপক্ষের।

অবশেষে সোমবার (২২ এপ্রিল) ওই বিতর্কিত ইউপি প্রশাসনিক কর্মকর্তা আব্দুল লতিফের বদলীর আদেশ দিয়েছেন স্থানীয় সরকার বিভাগ ময়মনসিংহের উপপরিচালক (ভারপ্রাপ্ত) লুৎফুন নাহার। জেলা প্রশাসকের কার্যালয় ময়মনসিংহের স্থানীয় সরকার শাখার ০৫.৪৫.৬১০০.০১৫.০১৯.০১.২৩-২৩৯নং স্মারক মূলে বদলীর আদেশ প্রদান করা হয়।

আদেশে বলা হয় কানিহারী ইউপি প্রশাসনিক কর্মকর্তা আব্দুল লতিফকে ফুলবাড়ীয়া উপজেলার ভবানীপুর ইউনিয়নে ও ভবানীপুর ইউনিয়নের প্রশাসনিক কর্মকর্তা কামাল হোসেনকে কানিহারী ইউনিয়ন পরিষদে বদলীর আদেশ প্রদান করা হয়। উভয় ইউপি প্রশাসনিক কর্মকর্তাকে আগামী ২৪ এপ্রিলের মধ্যে ইউনিয়ন পরিষদের আর্থিক বিষয়াদিসহ যাবতীয় দায়-দায়িত্ব বুঝিয়ে দিয়ে বদলীকৃত কর্মস্থলে যোগদানের উদ্দেশ্যে বর্তমান কর্মস্থল হতে অবমুক্ত হবেন; অন্যথায় ২৪ এপ্রিল অপরাহ্নে হতে তাৎক্ষনিকভাবে অবমুক্ত বলে গণ্য হবেন।

ভূয়া জন্ম নিবন্ধনের মতো এতো বড় অপরাধ করেও পারস্পারিক বদলী পাশ্ববর্তি উপজেলায় হওয়ায় প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছে জনসাধারণের কাছে। ভূয়া জন্ম নিবন্ধনের বিভাগীয় শাস্তি যদি হয় স্টেশন পরিবর্তন তাহলে এসকল অন্যায় আরও বৃদ্ধি পাবে বলে মনে করেন স্থানীয়রা। 

কানিহারী ইউনিয়নের বাসিন্দা বীর মুক্তিযোদ্ধার সন্তান আনোয়ার হোসেন ইকবাল জানান, কানিহারী ইউপি প্রশাসনিক কর্মকর্তা আব্দুল লতিফের বিরুদ্ধে জন্ম নিবন্ধন কেলেংকারির বিষয়টি প্রকাশ্যে থাকলেও অদৃশ্য শক্তির কারণে এর কোনো শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। বরং পারস্পারিক বদলী করে অন্যায় কে আরও প্রশ্রয় দেওয়া হয়েছে বলে তিনি মনে করেন। তথ্য প্রযুক্তি ও অনলাইন যুগেও দীর্ঘদিন যাবত ভারতে অবস্থানরত দেশের অন্যপ্রান্তে অবস্থান করা ব্যাক্তির নামে আমাদের ইউনিয়ন থেকে সচিবের সহযোগিতায় অবৈধভাবে জন্মন নিবন্ধন করে দেওয়ার কেলেঙ্কারির মতো অপরাধ করলেও দৃষ্টান্ত মূলক কোন ব্যবস্থা না নেওয়ায় আমরা হতাশ হয়েছি।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার আব্দুল্লাহ আল বাকিউল বারি বলেন, দৈনিক আমাদের সময়ে সংবাদ প্রকাশের পর উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষ ও ডিডিএলজি স্যারকে বিষয়টি অবহিত করেছি। প্রাথমিকভাবে কানিহারী ইউপি প্রশাসনিক কর্মকর্তা আব্দুল লতিফকে বদলীর আদেশ পেয়েছি।

উল্লেখ্য; কানিহারী ইউপি প্রশাসনিক কর্মকর্তা আব্দুল লতিফ অবৈধ পন্থায় ভূয়া জন্ম নিবন্ধন, জন্ম ও মৃত্যু সনদ, ওয়ারিশান সনদ ও কর্মরত ইউনিয়ন পরিষদগুলোতে কোটি কোটি টাকার নামে মাত্র এবং কাগজে কলমে পাওয়া প্রকল্পের মাধ্যমে গড়েছেন অবৈধ সম্পদের পাহাড়। তার বিরুদ্ধে অবৈধ জন্মনিবন্ধনের সত্যতা মিললেও দীর্ঘদিনেও মেলেনি প্রশাসনিক ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। তবে গত ২১ এপ্রিল জনপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল ফেয়ার নিউজ সার্ভিস (এফএনএস)-এ ‘ভারতে থেকেও হবিগঞ্জের হয়ে ত্রিশালে জন্ম নিবন্ধন, ইউপি প্রশাসনিক কর্মকর্তা আব্দুল লতিফের ভূয়া জন্ম নিবন্ধন কেলেংকারী’ শিরোনামে সংবাদ প্রকাশিত হওয়ার পর তোলপাড় সৃষ্টি হয়। নজরে আসে সশ্লিংষ্ট কর্তৃপক্ষের। আর বদলীর আদেশ দেন ময়মনসিংহ জেলার স্থানীয় সরকার শাখা।

আপনার জেলার সংবাদ পড়তে