দেশে ডাকাতি, চোরাচালান ও অপহরণ বাড়ছে। হত্যা, ধর্ষণ, ছিনতাই, নারী নির্যাতনের মতো অপরাধ নিয়মিত চলছে দেশব্যাপী। কিশোর বয়সীরা হয়ে উঠছে সহিংস। ফলে নিরাপত্তাহীনতা গ্রাস করছে জনজীবন। রাজধানীসহ দেশের কয়েক শহর ও গ্রামে জননিরাপত্তার ব্যত্যয় ঘটায় এবং সমাজে অপরাধপ্রবণতা বৃদ্ধিতে নির্দিষ্ট কর্তৃপক্ষ, মন্ত্রণালয় এবং খোদ সরকার প্রশ্নের মুখে পড়ছে। সংবাদপত্র ও গণমাধ্যমে চোখ রাখলেই আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতির খবর। নাগরিকের ক্ষোভেরও শেষ নেই। আমরা মনে করি, যেকোনো মূল্যে নিরাপত্তাহীনতার আশঙ্কা দূর করতে হবে। একটি সরকারের প্রাথমিক দায়িত্ব জনগণের জানমালের নিরাপত্তা দেওয়া। তাই আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির দায় সরকার কোনোভাবেই এড়াতে পারে না। পাশাপাশি মানসিক স্বাস্থ্য, শিক্ষার ভূমিকা এবং সমাজের দায়িত্বের প্রতি গভীর অবহেলার ফলে ঘটছে নানা ধরনের সহিংসতা। পারিবারিক সহিংসতা, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে সহপাঠীদের মধ্যে সহিংস প্রতিযোগিতা, রাজনৈতিক সহিংসতা-এগুলো আমাদের ভেতরকার নৈতিকতা, সহানুভূতি ও মানবিকতাকে মেরে ফেলছে। নানা ধরনের অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের ঘটনায় পুরো দেশের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির ক্রমাগত অবনতির প্রেক্ষাপটে চলছে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীর বিশেষ তিনটি অভিযান, যার মধ্যে রয়েছে অপারেশন ডেভিল হান্ট, ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) সাঁড়াশি অভিযান এবং যৌথ বাহিনীর অভিযান। কিন্তু আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতিতে সরকারের এমন প্রচেষ্টায়ও থেমে নেই অপরাধ ও সহিংসতা। প্রচলিত আইনের কঠোর প্রয়োগের পাশাপাশি সামাজিক অনুশাসন ও মূল্যবোধগুলো ফিরিয়ে আনতে হবে। সরকারের দায়িত্ব হচ্ছে নাগরিকের মনে নিরাপত্তাবোধ তৈরি করা। আমরা আশা করি, সরকার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতিকে আরও গুরুত্বের সাথে দেখবে এবং অপরাধ দমনে সর্বোচ্চ শক্তি প্রয়োগ করবে। জনজীবনে নিরাপত্তাহীনতার যে আশঙ্কা সৃষ্টি হয়েছে -তা দ্রুত দূর করতে হবে।