পাঠদান চালু থাকবে অন্নদা’র

ইউএনও’র হস্তক্ষেপে সরাইলে ৯শতাধিক পরীক্ষার্থীর দূর্ভোগ লাঘব

এফএনএস (মাহবুব খান বাবুল; সরাইল, ব্রাহ্মণবাড়িয়া) : | প্রকাশ: ২৯ এপ্রিল, ২০২৫, ০৫:৫৮ পিএম
ইউএনও’র হস্তক্ষেপে সরাইলে ৯শতাধিক পরীক্ষার্থীর দূর্ভোগ লাঘব

শিক্ষা বোর্ডের নতুন নির্দেশনায় ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইল ও অরূয়াইল কেন্দ্রের ২০২৫ খ্রিষ্টাব্দের প্রায় ৯ শতাধিক উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার্থী চরম দূর্ভোগে পড়ে যায়। এতে সরাইলের ৭৪৫ জন পরীক্ষার্থীকে অরূয়াইলে ও অরূয়াইলের ১৭৭ জন পরীক্ষার্থীকে সরাইলে আসতে হবে। কর্তপক্ষের আকস্মিক এমন সিদ্ধান্তে উভয় কেন্দ্রের পরীক্ষার্থী ও অভিভাবকদের হতাশা/টেনশন বেড়ে যায়। অবশেষে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মোশারফ হোসেনের হস্তক্ষেপে এই দূর্ভোগ লাঘব হয়েছে। আর পাঠদান বন্ধের হাত থেকে রক্ষা পেয়েছে সরাইল অন্নদা সরকারী উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।  তাই ইউএনও কে বাহবা দিচ্ছেন পরীক্ষার্থী, অন্নদা স্কুলের শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা। 

ইউএন’ও দফতর, মাধ্যমিক শিক্ষা অফিস ও স্থানীয় সূত্র জানায়, দীর্ঘদিন  ধরে সরাইল কেন্দ্রে পরীক্ষা দিচ্ছে সরাইল সরকারী কলেজ, মহিলা কলেজ ও তিতাস মডেল কলেজের পরীক্ষার্থীরা। আর অরূয়াইল বহুমূখী উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে পরীক্ষা দিচ্ছে অরূয়াইল আব্দুস সাত্তার ডিগ্রী কলেজের পরীক্ষার্থীরা। আর পিএসসি, জেএসসি, এসএসসি ও উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার কেন্দ্র হওয়ায় সরাইল অন্নদা সরকারী উচ্চ বিদ্যালয়ে বছরে ৩-৪ মাস বন্ধ থাকে পাঠদান। ফলে ক্ষতিগ্রস্ত হয় শিক্ষার্থীরা। এবার শিক্ষা বোর্ডের নির্দেশে ২০২৫ খ্রিষ্টাব্দের উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীদের পূর্বের কেন্দ্র পরিবর্তন করেন। সরাইলের পরীক্ষার্থীরা যাবে অরূয়াইলে আর অরূয়াইলের পরীক্ষার্থীরা আসবে সরাইলে। আকস্মিক এমন সিদ্ধান্তে যাতায়তে দূর্ভোগের চিন্তায় হতাশ হয়ে পড়েন পরীক্ষার্থী ও অভিভাবকরা। অনেক পরীক্ষার্থী কান্নায় ভেঙ্গে পড়ে। উপজেলা সদর থেকে ভৌগোলিক ভাবে বিচ্ছিন্ন অরূয়াইলে যাতায়ত করতে চরম দূর্ভোগ পোহাতে হবে ছাত্রছাত্রীদের। অনুরূপ ভোগান্তি হবে অরূয়াইলের পরীক্ষার্থীদেরও। যানবাহন , ঝড়বৃষ্টি সময় ও ধূঁলোবালি ভাবিয়ে তুলেছে সকলকে। এই দূর্ভোগ থেকে রক্ষা পেতে গত সোমবার নির্বাহী কর্মকর্তার শরণাপন্ন হয় পরীক্ষার্থীরা। বিষয়টি পূণর্বিবেচনার আবেদন করে পরীক্ষার্থীরা ইউএনও’র কাছে একটি স্বারকলিপি প্রদান করেন। বিষয়টি আমলে নেন ইউএনও। তিনি তড়িৎ শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যানকে মুঠোফোনে পরীক্ষার্থীদের দূর্ভোগ লাঘবে ব্যবস্থা গ্রহণের আহবান জানান। ইউএনও’র আহবানে সাড়া দেন চেয়ারম্যান। অর্থাৎ গত বছরের পদ্ধতিতেই পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। তবে সরাইলের কেন্দ্র অন্নদা স্কুলের পরিবর্তে কালিকচ্ছ পাঠশালা উচ্চ বিদ্যালয়ে অনুষ্ঠিত হবে। দেড় মাস পাঠদান বন্ধের হাত থেকে রক্ষা পেল অন্নদা স্কুলের শিক্ষার্থীরা। ইউএনও’র হস্তক্ষেপে শিক্ষা বোর্ডের তড়িৎ এমন সিদ্ধান্তে আনন্দে উদ্বেলিত হয়ে উঠে পরীক্ষার্থী ও অভিভাবকরা। ইউএনও কে বাহবা আর অভিনন্দনে ভাসাতে থাকেন স্থানীয়রা। সরাইল সরকারী কলেজের অধ্যক্ষ মৃধা আহমাদুল কামাল, আব্দুস সাত্তার ডিগ্রী কলেজের মো. ইকবাল হোসেন মৃধা ও সরাইল মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ মোহাম্মদ বদর উদ্দিন বলেন, সরাইল অরূয়াইলের যাতায়ত অধিক সময় ও কষ্টসাধ্য বিষয়। যা উভয় এলাকার পরীক্ষার্থীদের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ। এ ছাড়া ঝড়বৃষ্টির প্রতিবন্ধকতা রয়েছে। ইউএনও মহোদয় সকলকে রক্ষা করেছেন।  সরাইল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মোশারফ হোসেন বলেন, উভয় কেন্দ্রের শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের দূর্ভোগ থেকে রক্ষা করতেই ব্যবস্থা নিয়েছি। সমাধান করতে পারায় ভালো লাগছে। ওদিকে অন্নদা স্কুলের পাঠদানও অব্যাহত রেখেছি। মানুষের সেবা করাই আমার কাজ। আমি সেই চেষ্টাটুকু করছি।

আপনার জেলার সংবাদ পড়তে