তানোরে পল্লীবিদ্যুৎ অফিসে

দূর্নীতিবাজ ইলেকেট্রিশিয়ান লিটন স্বপদে বহাল, জনমনে ক্ষোভ

মো: ইমরান হোসাইন; তানোর, রাজশাহী | প্রকাশ: ২ মে, ২০২৫, ০১:০৫ পিএম
দূর্নীতিবাজ ইলেকেট্রিশিয়ান লিটন স্বপদে বহাল, জনমনে ক্ষোভ
রাজশাহীর তানোরে পল্লীবিদ্যুতের উপ-মহাব্যবস্থাপক (ডিজিএম) রেজাউল করিমের বিরুদ্ধে আওয়ামী প্রীতি ও পুর্নবাসনের অভিযোগ উঠেছে। তিনি অর্থের বিনিময়ে নীতিমালা লঙ্ঘন ও সিংহভাগ কর্মকর্তা-কর্মচারীর আপত্তি উপেক্ষা করে সাসপেন্ড হওয়া দুর্নীতিবাজ ভিলেজ ইলেকেট্রিশিয়ান (কামারগাঁ ইউপি স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি) জহিরুল ইসলাম লিটনকে স্বপদে বহাল করেছেন। এখবর ছড়িয়ে পড়লে জনমনে চরম ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। পাশাপাশি পল্লীবিদ্যুৎ সমিতিতে রীতিমতো তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে, বিরাজ করছে উত্তেজনা উঠেছে সমালোচনার ঝড়। আলোচিত লিটনের যোগদান স্থগিত এবং তাকে স্বপদে বহালের ঘটনার সঙ্গে জড়িত কর্মকর্তার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করে বিক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন সচেতন মহল। জানা গেছে, বিগত আওয়ামী লীগে সরকারের সময়ে কামারগাঁ ইউপি স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি জহিরুল ইসলাম লিটন সাধারণ মানুষকে জিম্মি করে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। সংযোগ দিতে অতিরিক্ত অর্থ আদায়, টাকা নিয়েও সংযোগ না দেয়া, অবৈধ মটরে সংযোগ দেয়া ও সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে টাকা আদায়সহ তার বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ উঠে। এমনকি তার এসব অনিয়ম-দুর্নীতির নিয়ে দেশের একাধিক শীর্ষস্থানীয় টিভি চ্যানেল ও পত্রিকায় খবর প্রকাশ হয়। অন্যদিকে তার বিরুদ্ধে তদন্ত কমিটি অভিযোগের সত্যতা পায়। এঘটনায় তাকে সাময়িক ভাবে বরখাস্ত করা হয়। বরখাস্তের পর লিটন তার ভাই জাহাঙ্গীরকে দিয়ে কাজ করানো শুরু করেন। এদিকে পল্লীবিদ্যুৎ অফিসকে না জানিয়ে গোপণে মিটারের সিল কেটে মিটার স্থানান্তর চক্রের মুলহোতা লিটনের ভাই জাহাঙ্গীর আলমের বিরুদ্ধে থানায় মামলা করেন পল্লীবিদ্যুৎ অফিসের ডিজিএম (তৎকালীন) জহুরুল ইসলাম। মামলার এজাহারে উল্লেখ, রাজশাহী পল্লীবিদ্যুৎ সমিতির প্যাডে ১৯৬ নম্বর স্বারকের প্রেক্ষিতে জানানো যাচ্ছে যে, জাহাঙ্গীর পিতা জয়মতুল্লাহ সাং মাদারিপুর। উক্ত ব্যক্তি তানোর জোনাল অফিসের আওতাধীন বিভিন্ন এলাকায় অর্থের বিনিময়ে অবৈধভাবে বৈদ্যুতিক মিটার এক স্থান থেকে অন্য স্থানে স্থানান্তর করে দিচ্ছেন। যেমন হিসাব নম্বর ৪৬৪-২৬২০ গ্রাহকের নাম আব্দুর রশিদ পিতা বদের আলী ও হিসাব নম্বর ৪৬৪-২৬৫০ গ্রাহক বদের আলী পিতা মাশি উভয়ের গ্রাম, ধানোরা। এই দু’জন গ্রাহকের আবাসিক মিটার অফিসকে অবহিত না করে অবৈধভাবে এক স্থান থেকে অন্য স্থানে স্থানান্তর করে দিয়েছেন। যা বিদ্যুৎ আইন ২০১৮ অনুযায়ী কর্তৃপক্ষের অনুমোদন ব্যতিত বৈদ্যুতিক স্থাপনা/ইক্যুইপমেন্টে দন্ডনীয় অপরাধ। অথচ এতো অভিযোগ থাকার পরেও এই স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা আলোচিত জহিরুল ইসলাম লিটনকে কি বিবেচনায় স্বপদে ফেরানো হয়? সম্প্রতি ১০ এপ্রিল লিটনকে যোগদানের আদেশ দিয়েছেন তানোর ডিজিএম রেজাউল করিম। গত ৫ আগস্ট সকালেও জহিরুল ইসলাম লিটন কামারগাঁ ইউপির নেতাকর্মীদের নিয়ে তানোর যায় এবং আওয়ামী লীগের ছাত্র আন্দোলন বিরোধী মিছিলে যোগ দেয়। গত ৫ আগস্টের পর আওয়ামী লীগ নেতারা যখন গ্রেফতার আতঙ্কে দিশেহারা ও আত্মগোপনে, তখন বির্তকিত স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা লিটনকে স্বপদে বহাল করার হেতু কি? এটা অধিকতর তদন্ত হওয়া প্রয়োজন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সুত্র জানায়, উপজেলার কামারগাঁ ইউপির চৌবাড়িয়া এলাকার এক যুবদল নেতা বড় অঙ্কের অর্থের বিনিময়ে লিটনকে স্বপদে ফেরাতে তদ্বির করেছেন। এবিষয়ে জানতে চাইলে কামারগাঁ ইউপি স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি জহিরুল ইসলাম লিটন এসব অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, তাকে ষড়যন্ত্র করে ফাঁসানো হয়েছে। তিনি ঘাটে ঘাটে টাকা দিতে দিতে হাপিয়ে উঠেছেন। তিনি আরও বলেন, এখন তিনি কোনো রাজনীতি করেন না। এব্যাপারে তানোর পল্লীবিদ্যুতের (ডিজিএম) রেজাউল করিমের মুঠোফোনে একাধিকবার ফোন দেওয়া হলে তিনি ফোন রিসিভ করেননি। পরে রাজশাহী পল্লীবিদ্যুতের সিনিয়র জেনারেল ম্যানেজার (জিএম) রমেন্দ্র চন্দ্র রায়কে ফোন দেওয়া হলে তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ নেতাকে পূর্ণবাসনের কোন সুযোগ নেই। বিষয়টি ব্যাপারে বিস্তারিত খোঁজখবর নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। ই/তা