চাঁপাইনবাবগঞ্জে আমজাত পণ্যে ২০ হাজার কোটি টাকার বাণিজ্যের সম্ভাবনা

এফএনএস (ফয়সাল মাহমুদ; চাঁপাইনবাবগঞ্জ) : | প্রকাশ: ৬ মে, ২০২৫, ০৩:৪২ পিএম
চাঁপাইনবাবগঞ্জে আমজাত পণ্যে ২০ হাজার কোটি টাকার বাণিজ্যের সম্ভাবনা

চাঁপাইনবাবগঞ্জে আমজাত পণ্যে ২০ হাজার কোটি টাকার বাণিজ্যের সম্ভাবনা রয়েছে। পাশাপাশি এ বাণিজ্য ঘিরে কর্মসংস্থান তৈরী হবে প্রায় ৪০ হাজার মানুষের। মঙ্গলবার চাঁপাইনবাবগঞ্জের কানসাট রাজবাড়ি মাঠে আয়োজিত আম সম্মেলনে এ তথ্য তুলে ধরা হয়।

ম্যাংগো ডেভেলপমেন্ট ফোরাম প্রথমবারের মতো এ আম সম্মেলনের আয়োজন করে। সকালে আম সম্মেলনের উদ্বোধন করেন জেলা প্রশাসক মো আব্দুস সামাদ।

সম্মেলনে আরও বক্তব্য রাখেন শিবগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) তৌফিক আজিজ, হর্টিকালচার সেন্টারের উপ-পরিচালক এ কে এম মুনজুরে মাওলা, শিবগঞ্জ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. নয়ন মিয়া, চাঁপাইনবাবগঞ্জ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি আব্দুল ওয়াহেদ, ম্যাংগো ডেভেলপমেন্ট ফোরামের এডমিন শামীম খান, চাঁপাইনবাবগঞ্জ কৃষি অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মুনজের আলম মানিকসহ অন্যরা।

সম্মেলনে জানানো হয়, উদ্যোক্তরা এখন আম প্রক্রিয়াজাতকরণেই বেশি গুরুত্ব দিচ্ছেন। আমকে ঘিরে শিল্প-কারখানা গড়ে তোলা গেলে শুধু চাঁপাইনবাবগঞ্জে উৎপাদিত আমজাত ও উপজাত পণ্যের (বাই প্রোডাক্ট) ২০ হাজার কোটি টাকার বাণিজ্য হবে। এটি জিডিপিতে (মোট দেশজ উৎপাদন) অবদান রাখার পাশাপাশি কর্মসংস্থান হবে ৪০ হাজার মানুষের। এ জন্য সরকারি উদ্যোগ প্রয়োজন বলে জানান উদ্যোক্তরা।

ম্যাংগো ডেভেলপমেন্ট ফোরামের এডমিন শামীম খান বলেন, প্রক্রিয়াজাতকরণে শিল্প-কারখানা গড়ে না উঠলে আমের ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত করা যাবে না। তাই আমরা সবেচেয়ে গুরুত্ব দিচ্ছি। সহজে এবং কম খরচে কিভাবে আম প্রক্রিয়াজাত করা যায় এবং আমজাত পণ্য উৎপাদন করা যায় এ ব্যাপারে পদক্ষেপ নেয়ার জন্য সরকারের কাছে আবেদন জানাচ্ছি।

চাঁপাইনবাবগঞ্জ কৃষি অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মুনজের আলম মানিক বলেন, পুরো মৌসুমে ৩০ থেকে ৪০ শতাংশ আম ঝরে পড়ে। এই আম এখন কোন কাজেই আসে না। অথচ এই আম দিয়ে বাণিজ্যিকভাবে আচার বা আমচুর তৈরী করা যেতে পারে। ঝরে পড়া এই আম প্রক্রিয়াজাত করা যেত তাহলে এর বাজারমূল্য হত ৬ হাজার কোটি টাকা। সব মিলিয়ে আমাদের হিসাব অনুযায়ী আমজাত পণ্য ও আমের উপজাত পণ্য থেকে ২০ হাজার কোটি টাকার বাণিজ্য সম্ভব।

চাঁপাইনবাবগঞ্জ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি আব্দুল ওয়াহেদ বলেন, আম রপ্তানি করেও বিপুল বৈদেশিক মূদ্র অর্জন করা সম্ভব। এ জন্য সরকারকে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে হবে। আম রপ্তানি প্রক্রিয়া আরও সহজ করতে হবে। পাশাপাশি চাঁপাইনবাবগঞ্জে যেহেতু দেশের এক তৃতীয়াংশ আম উৎপাদন হয়, এ জেলাকে ‘আমের রাজধানী’ হিসেবে সরকারি স্বীকৃতি দিতে হবে।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে জেলা প্রশাসক আব্দুস সামাদ বলেন, আমকে ঘিরে যে সব সম্ভাবনার কথা আজকের সম্মেলনে উঠে এসেছে তা ঊর্ধতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হবে। সরকারিভাবে আম নিয়ে নানান প্রকল্প গ্রহন করা হয়েছে। এর বাইরে বেসরকারি উদ্যোক্তাদেরও এগিয়ে আসতে হবে।  

দিনব্যাপি আম সম্মেলনে দেশের তিন শতাধিক উদ্যোক্তা ও ব্যবসায়ী অংশ নেন।

আপনার জেলার সংবাদ পড়তে