নীলফামারীর ডোমার উপজেলার সোনারায় গ্রামের এক সময় শাহ কলন্দর পীরের মাজারে আয়োজন হতো ধর্মীয় মিলাদ মাহফিল ও আত্মিক শুদ্ধির অনুষ্ঠান। এখন সেই পবিত্র স্থানেই বসেছে বাণিজ্যিক মেলা, চলছে নানা কুসংস্কারমূলক কার্যকলাপ।
রেওয়াজ অনুযায়ী, নীলফামারীর ডোমার উপজেলার সোনারায় এলাকায় প্রতি বছর বৈশাখ মাসের ২৬, ২৭ ও ২৮ তারিখে ওরশ অনুষ্ঠিত হয়। মুসলিমসহ অন্যান্য ধর্মালম্বী মানুষও অংশ নেয় এই আয়োজনে। দেশের বিভিন্ন স্থান হতে আগত হাজার হাজার মানুষের সমাগম ঘটে মাজার এলাকায়। মাজারে আগত ভক্তদের অনেকের বিশ্বাস মানত করার মাধ্যমে পূরন হয় মনোবাসনা।
মনোবাসনা পূরণের আশায় অনেকে মাজারে মানত করেন। কেউ নগদ অর্থ, ছাগল, হাঁস-মুরগী ও ফল-মূল দান করেন। যা দীর্ঘ দিন ধরে চলে আসছে। এ ছাড়া মাজারের আশে পাশে ওরশ উপলক্ষে বসে মেলা, চলে পণ্যের বিকিকিনি। সেই পুরোনো ঐতিহ্য হারিয়ে সেই ওরশ এখন রুপ নিয়েছে নানা অ-নৈসলামিক কর্মকান্ডে। শুরু হয়েছে মাজার পুজা সহ নানা অ-নৈসলামিক কর্মকান্ডে। স্থানীয়দের অভিযোগ, গেল কয়েক বছর ধরে এই ধর্মীয় ভাবগাম্বীর্যতা হারিয়ে ঐতিহ্যবাহী ওরস পরিনত হয়েছে বানিজ্যিক কর্মকান্ডে। মাজারে চুমু খাওয়া, সিজদা দেয়া, মাজারে এক সাথে নারী পুরুষের নামাজ আদায় সহ বেপরোয়া নারী-পুরুষের চলাফেরা ও নানা কুসংস্কারে ঘেরা আয়োজনে পরিনত হয় বিশৃঙ্খল পরিবেশ। এলাকাবাসীর দাবী, ইসলামের সাথে অসামঞ্জস্যপুর্ণ এসব কর্মকান্ড দ্রুত বন্ধ করা হোক। এ ব্যাপারে সকল অভিযোগ অস্বীকার করে মাজার পরিচালনা কমিটির সেক্রেটারি হেফাজুল ইসলাম জানায়, বিশৃঙ্খলা ছাড়াই সুন্দরভাবে ওরশ ও মেলা পরিচালিত হচ্ছে।
এ ব্যাপারে ডোমার থানার অফিসার ইনচার্জ আরিফুল ইসলাম সাংবাদিকদের জানান, ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্যতা বজায় রাখার পদশাপাশি ওরশের সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিতে সব ধরনের ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।
ডোমার ইসলামিয়া ফাজিল মাদরাসার অধ্যক্ষ মাওলানা শামছুদ্দিন হোছাইনী জানান, ইসলামী শরিয়াহর নামে মাজার ঘিরে এমন কর্মকান্ড শুধু মাজারের পবিত্রতাই নষ্ট করছেনা, একই সাথে ইবাদতের ক্ষেত্রেও বড় প্রভাব ফেলছে।