ব্লক ঘেঁষে বালু উত্তোলন

করতোয়ায় হুমকির মুখে নদীর পাড়, মসজিদ ও ঘরবাড়ি

এফএনএস (মোহাম্মদ মোস্তাফিজুর রহমান; পীরগঞ্জ, রংপুর) : | প্রকাশ: ১৭ মে, ২০২৫, ০৩:৪৫ পিএম
করতোয়ায় হুমকির মুখে নদীর পাড়, মসজিদ ও ঘরবাড়ি

পানি উন্নয়ন বোর্ড কর্তৃক নদী শাসন ব্যবস্থায় করতোয়া পাড়ে ব্লক স্থাপন ঘেঁষে দেদারসে বালু উত্তোলন করছেন কতিপয় বালু ব্যবসায়ী। ব্লক বসানো পাড় সংলগ্ন স্থান থেকে প্রকাশ্যে বালু উত্তেলন ও বিক্রি করছেন স্থানীয় অর্ধ শতাধিক ব্যক্তি। প্রশাসনের নাকের ডগায় দিবারাত্র বালু উত্তোলন ও বিক্রি হলেও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কাজের চাপের অযুহাতে হাত পা গুটিয়ে বসে আছেন।

সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে,উপজেলার চতরা ইউনিয়নের কুমারপুর গ্রামের করতোয়া নদীতে স্যালো মেশিন বসিয়ে দিবালোক বালুর ব্যাবসা করেছেন চতরা ইউনিয়নের ৮ নং ওয়ার্ডের সাবেক আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক সিরাজুল ইসলাম। অই গ্রামের রাস্তা নির্মাণ কাজের বালু সরবরাহের দায়িত্ব নিয়ে বালু উত্তোলন করে সরবরাহ করছেন তিনি। এছাড়াও চুক্তি ভিত্তিক এলাকার লোকজনের বাড়িঘরেও বালু ভরাট করে আসছেন দীর্ঘদিন ধরে। করতোয়া নদী ঘেঁষে বালু উত্তোলনের ফলে ওই স্থানে নদীর গভীরতা বাড়ছে এবং পাশের বাড়িঘর এবং ব্লক ধ্বসে যাওয়ার আশংকা করা হচ্ছে। এদিকে প্যতিবছর বালু বিক্রি করে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছেন সিরাজুল ইসলাম। 

নাম প্রকাশের অনিচ্ছুক স্থানীয়রা জানান,কুমারপুর গ্রামের করতোয়া নদীর ধারেই বাড়ি সিরাজুল ইসলামের। বিগত শেখ হাসিনা সরকারের সময় থেকে এখন পর্যন্ত বালু বিক্রি করে লাখ লাখ টাকা কামিয়েছেন তিনি এবং এখনও তার বালু উত্তোলন-বিক্রি চলমান। কযেক বছর ধরে নদী থেকে বালু উত্তোলন ও বিক্রি করায় ওই স্থানে নদীর গভীরতা বেড়েছে। সেখানে গত বছর এক যুবক রাতের বেলায় নদী পারাপারের সময় ডুবে মারা যায়। এছাড়াও একই স্থানে এক শিশুও গোসল করতে গিয়ে ডুবে মারা গেছে। কুমারপুর গ্রামের মধ্যে দিয়ে প্রবাহিত হওয়া করতোয়া নদী দুই পাড়ের লোকজন স্কুল কলেজ এবং কৃষি কাজের জন্য  সবসময়ই ইক্ত স্থান দিয়ে পারাপার হয়। জনমনে ভয়ভীতি নিয়েই গভীর নদী পারাপার হতে হয় তাদের। এলাকায় প্রভাবশালী হওয়ায় এলাকাবাসী অভিযুক্তের বিরুদ্ধে কথা বলতে সাহস করছে না। যে কারনে সুযোগ বুঝে নির্বিবাদে বালুর রমরমা ব্যাবসা করছেন তিনি। নিজস্ব ড্রেজিং মেশিন দিয়ে প্রায়ই বালু উত্তোলন করে সরকারি এবং বেসরকারি কাজেও বালু বিক্রি করে থাকেন তিনি। কুমারপুর গ্রামের মসজিদ এর পশ্চিম পাশে নদীর পাড়ে  সরকার কোটি টাকা ব্যায়ে নদীর পাড়ে ব্লক স্থাপন করেছে। সেই স্থানে ব্লক ঘেঁষেই বালু উত্তোলন করা হচ্ছে। বালু উত্তোলনের ফলে কৃষি আবাদি জমি, বাড়িঘর, রাস্তাঘাট, মসজিদ এবং নদীর পাড় এখন হুমকির মুখে রয়েছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এলাকাবাসী তার বিরুদ্ধে আইনগতভাবে ব্যবস্থা গ্রহনের  দাবি জানিয়েছেন। বালু উত্তোলনের বিষয় নিয়ে কথা হয় সিরাজুল ইসলাম এর সাথে। তিনি বলেন আমি নদীর পাড় থেকে বালু উত্তোলন করছি,নদী থেকে নয়। শুধু সিরাজুল ইসলাম নয়, তার মতো অর্ধ শতাধিক ব্যক্তি একই কৌশলে করতোয়া থেকে অভিন্ন কৌশলে বালু উত্তোলন ও বিক্রি করছেন দেদারসে। অবশ্য যারাই করতোয়া নদী থেকে বালু উত্তোলন করছেন,তাদের বিরুদ্ধেই ব্যাবস্থা নেয়ার কথা বললেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা খাদিজা বেগম। কিন্তু কবে নাগাদ তা করা হবে ?  তা তিনি স্পষ্ট করে বলতে পারছেন না এই মুহুর্তে !

আপনার জেলার সংবাদ পড়তে