১৩ ডিসেম্বর ছিল নীলফামারী হানাদার মুক্ত দিবস। এ দিবসটি যথাযথ ভাবে পালন করা হয়। ১৯৭১ সালের এই দিনে নীলফামারী সদর উপজেলাকে পাক-হানাদার মুক্ত করে বীরমুক্তিযোদ্ধারা। সকাল ১০ টায় জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কার্যালয়ে জাতীয় ও মুক্তিযোদ্ধা সংসদের পতাকা উত্তোলনের মধ্য দিয়ে কর্মসূচি শুরু হয়। এরপর বেলা সাড়ে ১০টার দিকে জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কার্যালয় থেকে একটি বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা বের করা হয়। জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের আয়োজনে ও সদর উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সহযোগীতায় শোভাযাত্রায় বীর মুক্তিযোদ্ধা ও তাদের পরিবারের সদস্যবৃন্দসহ সর্বস্তরের মানুষ অংশ গ্রহণ করে। শোভাযাত্রাটি শহর প্রদক্ষিণ করে পুনরায় জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কার্যালয়ে এসে এক আলোচনা সভায় মিলিত হয়। এতে প্রধান অতিথির বক্তব্য বলেন, জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ নায়িরুজ্জামান। সদর উপজেলা নির্বাহী কর্তকর্তা মো.আশরাফুল হক সভায় সভাপতিত্ব করেন। এতে আরো বক্তব্য রাখেন, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মো.ফারুক আল মাসুদ, বীর মুক্তিযোদ্ধা মনিরুজ্জামান মন্টু,জেলা বিএনপির সভাপতি আ.খ.ম আলমগীর সরকারসহ অনেকে। উল্লেখ্য, ১৯৭১ সালে নীলফামারীতে দেশ মাতৃকার টানে ছাত্র-জনতা ঝাঁপিয়ে পড়েন মুক্তির সংগ্রামে। শুরুতে মিটিং-মিছিল আর সভা সমারেশের মধ্য দিয়ে গড়ে ওঠে আন্দোলন। মহকুমা শহরের অস্ত্রাগারে রক্ষিত অস্ত্র ছিনিয়ে এনে নীলফামারী বড়মাঠে শুরু হয় অস্ত্র হাতে নেয়ার প্রশিক্ষণ। এরপর ভারতে প্রশিক্ষণ নিয়ে ছয় নম্বর সেক্টরের অধীনে অস্ত্র হাতে পাক হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েন যোদ্ধারা। নয় মাসের গেরিলা আক্রমণ আর সম্মুখ যুদ্ধে জেলার ডোমার, ডিমলা, জলঢাকা, কিশোরগঞ্জ উপজেলা মুক্ত করে তাঁরা এগিয়ে আসেন নীলফামারী শহরের দিকে। ১৩ ডিসেম্বর ভোরে হানাদার মুক্ত হয় নীলফামারী। এরপর জেলা শহরের মহকুমা প্রশাসকের কার্যালয় ও চৌরঙ্গী মোড়ে স্বাধীন বাংলাদেশের পতাকা উত্তোলন করেন বীরমুক্তিযোদ্ধাগন। এসময় বীরযোদ্ধাদের জয় বাংলা' শ্লোগানে রাস্তায় নেমে আসেন মুক্তিকামী সকল শ্রেণি পেশার মানুষ। বিজয়ের উল্লাস আর শ্লোগানে প্রকম্পিত হয়ে ওঠে সে সময়ের মহকুমা শহর নীলফামারী।