ইউএনও বরাবর লিখিত অভিযোগ

সাটুরিয়ায় ইটখোলার গরম গ্যাসে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক

এফএনএস (মোঃ মোতালেব হোসেন; সাটুরিয়া, মানিকগঞ্জ) : | প্রকাশ: ২০ মে, ২০২৫, ০৪:২৪ পিএম
সাটুরিয়ায় ইটখোলার গরম গ্যাসে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক

মানিকগঞ্জের সাটুরিয়ার হরগজ ইউনিয়নের ৭৫ জন কৃষকের ধান খেত মেসার্স যমুনা ব্রিক্সসের গরম গ্যাস ও ক্ষতিকারক কালো ধোয়ায় প্রায় ১০০ বিঘা ধান খেত ক্ষতি  হওয়ার অভিযোগ উঠেছে। এ ব্যাপারে ভুক্তভোগী কৃষকেরা সাটুরিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর ক্ষতিপূরণ ও তিন ফসলি জায়গায় স্থাপিত ওই ব্রিকস ফিল্ড  বন্ধ করার জন্য একটি অভিযোগ পত্র জমা দিয়েছেন।

অভিযোগ পেয়েই সোমবার দুপুরে  সাটুরিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. ইকবাল হোসেন তিন সদস্য বিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটিকে এক কর্ম দিবসের মধ্যে রিপোর্ট জমা দেওয়ার জন্য নির্দেশ দিয়েছেন।

অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, সাটুরিয়া উপজেলার ফুকুরহাটী ইউনিয়নের হরগজ মৌজায় তিন ফসলী ভূমিতে  দীর্ঘদিন যাবত মেসার্স যমুনা ব্রিকস ফিল্ড নামের ইটখোলাটি পরিচালিত হয়ে আসছে। ইটখোলাটির  নির্গত গরম গ্যাস ও কালো ধোয়ায় এক কিলোমিটারের মধ্যে কৃষকদের ধান ক্ষেত সহ কৃষিজাত পণ্য ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। 

এ বিষয়ে  ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক মোঃ মোহর আলী বলেন, আমার প্রজেক্টের সাত বিঘা ধান খেত পুড়ে গেছে। যেটুকু অবশিষ্ট আছে ওই ধানে ছিটা ধরেছে। আমার অনেক ক্ষতি হয়েছে। এ ব্যাপারে আমরা ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকেরা  উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর আবেদন করেছি। 

হরগজ পূর্ব নগরের শামীম নামের এক কৃষকের সাথে তিনি বলেন ২৭ শতাংশ জমিতে বোরো আবাদ করেছিলাম চোখের সামনে ওই ইট ভাটার গ্যাসের কারণে নষ্ট হয়ে গেছে গেছে। আমি আমার ধানক্ষেতের ক্ষতিপূরণ চাই। 

জাহাঙ্গীর আলম আরেক কৃষক বলেন ১৫ শতাংশ জমির দান নষ্ট হয়ে গেছে। ইটখোলার গ্যাসের কারণে আমার এই সর্বনাশ হয়েছে। এ ব্যাপারে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তাকে জানানো হলেও এখন পর্যন্ত এর কোন  সমাধান পাইনি। তিন ফসলি জায়গায় ওই ইট ভাটা  কিভাবে চলছে স্থানীয় প্রশাসন এ ব্যাপারে কেন কোন উদ্যোগ গ্রহণ করছেন না বলে ক্ষোভ প্রকাশ করেন তিনি। 

মোঃ হালিম নামের আরেক কৃষক বলেন , আমার প্রায় লক্ষাধিক টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। ক্ষতিপূরণ ও ওই ইট ভাটার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য  ইউএনও অফিসে এসেছিলাম। উনি বলেছেন একটি তদন্ত টিম গ্রহণ করা হয়েছে একদিনের মধ্যেই ব্যবস্থা নিবেন। 

এ ব্যাপারে সাটুরিয়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, কৃষকদের ধানক্ষেতের ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নির্ধারণের জন্য  তিন সদস্য বিশিষ্ট একটি কমিটি কাজ করছি। ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকেরা যাতে ক্ষতিপূরণ পায় সে ব্যাপারে কাজ চলমান রয়েছে জানান তিনি। 

মেসার্স যমুনা ব্রিক্সসের মালিকপক্ষ আবুল কালামের মোবাইল ফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করলেও সে ফোন রিসিভ করেননি।

এ ব্যাপারে সাটুরিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. ইকবাল হোসেন বলেন, ভুক্তভোগী কৃষকদের লিখিত অভিযোগ সোমাবার দুপুরে পেয়েছি। সাথে সাথে তিন সদস্য বিশিষ্ট একটি কমিটিকে  এক কর্ম দিবসের  মধ্যে প্রতিবেদন দাখিল করার জন্য বলা হয়েছে। ঘটনার সত্যতা পেলে ইট ভাটা মালিকদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করব।

আপনার জেলার সংবাদ পড়তে