হাজতখানায় টয়লেটে পড়ে মাথা ফাটলো সাবেক খাদ্যমন্ত্রী কামরুলের

নিজস্ব প্রতিবেদক | প্রকাশ: ২৬ মে, ২০২৫, ০৪:৫৩ পিএম
হাজতখানায় টয়লেটে পড়ে মাথা ফাটলো সাবেক খাদ্যমন্ত্রী কামরুলের

দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) একটি মামলায় আদালতে হাজিরার জন্য আনা হয়েছিল সাবেক খাদ্যমন্ত্রী অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলামকে। কিন্তু হাজিরার আগেই আদালতের হাজতখানায় টয়লেটে গিয়ে পড়ে যান তিনি। এতে তার মাথায় আঘাত লাগে এবং রক্তপাত হয়। টয়লেট থেকে উদ্ধার করে প্রাথমিক চিকিৎসার পর দ্রুত কেরানীগঞ্জ কেন্দ্রীয় কারাগারের হাসপাতালে পাঠানো হয় তাকে।

এ ঘটনা ঘটে সোমবার (২৬ মে) সকালে, ঢাকার মহানগর দায়রা জজ আদালতের হাজতখানায়। পুলিশ বলছে, উচ্চ রক্তচাপের কারণে মাথা ঘুরে পড়ে যান কামরুল ইসলাম।

তার আইনজীবী অ্যাডভোকেট নাসিম মাহমুদ সাংবাদিকদের জানান, কামরুল ইসলাম দীর্ঘদিন ধরে শারীরিকভাবে অসুস্থ। তিনি ডায়াবেটিস, হাই ব্লাড প্রেশারসহ পাকস্থলীর ক্যানসারে ভুগছেন এবং দিন দিন তার ওজন কমছে। আইনজীবীর ভাষ্য, “তিনি এখন খুবই দুর্বল। টয়লেটে গিয়ে পড়ে মাথায় প্রচণ্ড আঘাত পান। সঙ্গে সঙ্গে হাজতখানায় প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে কারাগারে ফেরত পাঠানো হয়।”

ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের প্রসিকিউশন বিভাগের উপ-কমিশনার তারেক জোবায়েরও ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, “কামরুল ইসলাম হাই প্রেসারের রোগী। আদালতে হাজিরা দিতে আনার পর তিনি টয়লেটে যান। সেখানে পড়ে গিয়ে মাথায় আঘাত পান। প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে আদালতের অনুমতি সাপেক্ষে তাকে কেরানীগঞ্জ কেন্দ্রীয় কারাগারের হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।”

উল্লেখযোগ্য, কামরুল ইসলাম বর্তমানে বেশ কয়েকটি মামলার আসামি হিসেবে জেলহাজতে আছেন। গত বছর ১৮ নভেম্বর রাজধানীর উত্তরা থেকে তাকে গ্রেফতার করে পুলিশ। পরদিন, ১৯ নভেম্বর নিউমার্কেট থানার একটি হত্যা মামলায় তাকে রিমান্ডে নেওয়া হয়। পরে তার বিরুদ্ধে আরও কয়েকটি হত্যা মামলার পাশাপাশি ২৩ ডিসেম্বর জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে একটি মামলা করে দুদক। ওই মামলায় ১১ ফেব্রুয়ারি তাকে গ্রেফতার দেখানো হয়।

দুদকের এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে, কামরুল ইসলামের নামে জ্ঞাত আয়বহির্ভূত ৬ কোটি ২৯ লাখ ১৯ হাজার ১৯৫ টাকা মূল্যের সম্পত্তি রয়েছে, যা তিনি ভোগদখলে রেখেছেন। এছাড়াও ১৫টি ব্যাংক হিসাবে ২১ কোটি ১৮ লাখ ১৫ হাজার ৪৬৫ টাকার সন্দেহজনক লেনদেন রয়েছে, যা মানি লন্ডারিংয়ের সঙ্গে সম্পৃক্ত। দুদকের মতে, এসব লেনদেন ঘুষ ও দুর্নীতির মাধ্যমে প্রাপ্ত অর্থের অবৈধ উৎস গোপন করতে ব্যবহৃত হয়েছে।

আদালতের নির্ধারিত তারিখ অনুযায়ী সোমবার দুদকের মামলায় হাজিরার দিন ছিল। তবে সে দিন মামলার তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেনি দুদক। ফলে কামরুল ইসলামকে আদালতের এজলাসে তোলা না হয়ে হাজতখানাতেই স্বাক্ষর নিয়ে ফের কারাগারে পাঠানো হয়।

এই ঘটনার পর কামরুল ইসলামের স্বজন ও আইনজীবীরা তার চিকিৎসা ও স্বাস্থ্যঝুঁকি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন এবং তাকে বিশেষায়িত হাসপাতালে স্থানান্তরের দাবি তুলেছেন।

আপনার জেলার সংবাদ পড়তে