দেশের শেয়ারবাজারে টানা দরপতনের ধারাবাহিকতা মঙ্গলবার (২৭ মে) আরও গভীর হয়েছে। ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) ও চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) লেনদেনে অংশ নেওয়া অধিকাংশ প্রতিষ্ঠানের শেয়ারমূল্য কমে যাওয়ায় বাজারে ছড়িয়ে পড়েছে উদ্বেগ। বিনিয়োগ করা পুঁজি হারিয়ে ক্ষতিগ্রস্ত বিনিয়োগকারীদের মধ্যে হতাশা ও হাহাকার চরমে পৌঁছেছে।
ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক ডিএসইএক্স এদিন ৪১ পয়েন্ট কমে দাঁড়িয়েছে ৪ হাজার ৬৭৮ পয়েন্টে—যা গত চার বছর সাড়ে ৯ মাসে সর্বনিম্ন। এভাবে সূচকের পতন দেশের শেয়ারবাজারকে আবার সেই করোনাকালের (২০২০ সালের আগস্ট) স্তরে ফিরিয়ে নিয়েছে। উল্লেখযোগ্যভাবে, ডিএসই-৩০ সূচক কমেছে ১৭ পয়েন্ট, দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ৭২৪ পয়েন্টে এবং ডিএসই শরিয়াহ সূচক কমেছে ৮ পয়েন্ট, দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ২৪ পয়েন্টে।
দরপতন ও লেনদেনের চিত্র:
১. ডিএসইতে মূল্য বৃদ্ধি পেয়েছে মাত্র ৮৩টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ারের, অন্যদিকে কমেছে ২৩৭টির, অপরিবর্তিত রয়েছে ৭২টি।
২. ভালো কোম্পানি (১০% বা তার বেশি লভ্যাংশদাতা) এর মধ্যে ৪৯টির শেয়ার দাম বেড়েছে, কমেছে ১২৫টির।
৩. মাঝারি মানের কোম্পানি (১০% এর কম লভ্যাংশদাতা) এর মধ্যে ১৭টির দাম বেড়েছে, কমেছে ৫৪টির।
৪. 'জেড' ক্যাটাগরির (লভ্যাংশহীন) কোম্পানির মধ্যে ১৭টির শেয়ার দাম বেড়েছে, কমেছে ৫৮টির।
৫. তালিকাভুক্ত ৩৬টি মিউচুয়াল ফান্ডের মধ্যে দাম বেড়েছে ১টির, কমেছে ১৪টির।
লেনদেনের দিক থেকেও বাজারে মন্দাভাব দেখা গেছে। ডিএসইতে লেনদেন হয়েছে মাত্র ২৭২ কোটি ৭৪ লাখ টাকা, যা আগের কার্যদিবসের তুলনায় ৯ কোটি ৮৭ লাখ টাকা কম। এর মাধ্যমে টানা ১২ কার্যদিবস ডিএসইতে ৩০০ কোটি টাকার নিচে লেনদেন হলো।
লেনদেনে শীর্ষ ১০ কোম্পানি:
১. ব্র্যাক ব্যাংক — ১১ কোটি ২ লাখ টাকা
২. স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যালস — ১০ কোটি ৬৭ লাখ টাকা
৩. বিচ হ্যাচারি — ৮ কোটি ৩১ লাখ টাকা
৪. বারাকা পতেঙ্গা পাওয়ার
৫. আইএফআইসি ব্যাংক
৬. শাইনপুকুর সিরামিক
৭. এস আলম কোল্ড রোল্ড স্টিল
৮. মিডল্যান্ড ব্যাংক
৯. নাহি অ্যালুমিনিয়াম
১০. ব্রিটিশ আমেরিকান টোবাকো
অন্যদিকে চট্টগ্রামের শেয়ারবাজার সিএসই-তেও একই চিত্র। বাজারটির সার্বিক মূল্যসূচক সিএএসপিআই কমেছে ৪৯ পয়েন্ট। লেনদেনে অংশ নেওয়া ২০৭টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে দাম বেড়েছে ৬১টির, কমেছে ১১৫টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ৩১টির। এদিন বাজারটিতে মোট লেনদেন হয়েছে ১০ কোটি ১১ লাখ টাকা, যা আগের দিনের তুলনায় কম।