বাংলাদেশের অন্যতম বেসরকারি বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান ব্র্যাক ব্যাংক পিএলসির ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা সেলিম আর. এফ. হোসেন পদত্যাগ করেছেন। মঙ্গলবার (২৭ মে), ব্যক্তিগত কারণ দেখিয়ে তিনি ব্যাংকটির পরিচালনা পর্ষদের কাছে পদত্যাগপত্র জমা দেন এবং তাৎক্ষণিকভাবে তা গৃহীতও হয়। এখন পদত্যাগের চূড়ান্ত অনুমোদনের জন্য পদত্যাগপত্র বাংলাদেশ ব্যাংকে পাঠানো হয়েছে।
সেলিম আর. এফ. হোসেন বলেন, “এখানে কোনো চাপ নেই বা অভ্যন্তরীণ কোনো সমস্যা নেই। সম্পূর্ণ ব্যক্তিগত কারণেই আমি পদত্যাগ করেছি।” উল্লেখযোগ্যভাবে, তার মেয়াদ আরও প্রায় ৯ মাস বাকি থাকলেও তিনি স্বেচ্ছায় এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
২০১৫ সালের নভেম্বরে ব্র্যাক ব্যাংকের এমডি ও সিইও হিসেবে দায়িত্ব নেন সেলিম আর. এফ. হোসেন। দীর্ঘ প্রায় এক দশক ধরে তিনি এই দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন। তার নেতৃত্বে ব্র্যাক ব্যাংক ব্যাংকিং খাতে এক শক্তিশালী অবস্থান তৈরি করে এবং ডিজিটাল ব্যাংকিংসহ বিভিন্ন খাতে উদ্ভাবনী কার্যক্রম পরিচালনা করে। তিনি ২০২৪-২৫ মেয়াদে অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকার্স বাংলাদেশ লিমিটেড (এবিবি)-এর চেয়ারম্যান হিসেবেও দায়িত্ব পালন করছিলেন, যেখানে এখন নেতৃত্বে পরিবর্তনের সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে।
ব্যাংকটির কর্মীদের উদ্দেশে দেওয়া এক চিঠিতে সেলিম আর. এফ. হোসেন লেখেন,
“সব ভালো জিনিসেরই শেষ আছে। আর সেই ধারাবাহিকতায় ব্র্যাক ব্যাংকে আমার সময়েরও শেষ হতে চলেছে। গত প্রায় দশ বছর ধরে আপনাদের সঙ্গে কাজ করতে পারা আমার জন্য একটি বড় সম্মানের বিষয় ছিল। আমরা একসঙ্গে একটি অসাধারণ প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলেছি, যা দেশের ব্যাংকিং খাতে এক অনুকরণীয় মডেল হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।”
তিনি আরও লেখেন,
“আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি যে, ব্র্যাক ব্যাংক ভবিষ্যতেও উন্নতি অব্যাহত রাখবে এবং দেশের অর্থনীতি ও সমাজে আরও বেশি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। আপনাদের এবং আপনাদের পরিবারের সুস্বাস্থ্য ও সমৃদ্ধি কামনা করছি। অনুগ্রহ করে আমাকে ও আমার পরিবারকে আপনাদের প্রার্থনায় রাখবেন।”
পদত্যাগের পরিপ্রেক্ষিতে ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ অতিরিক্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও কর্পোরেট অ্যান্ড ইনস্টিটিউশনাল ব্যাংকিং বিভাগের প্রধান তারেক রেফাত উল্লাহ খানকে ভারপ্রাপ্ত এমডি হিসেবে নিয়োগ দিয়েছে। ব্যাংকিং খাতে অভিজ্ঞ এই কর্মকর্তার ওপরই আপাতত দায়িত্ব বর্তিয়েছে ব্র্যাক ব্যাংকের দৈনন্দিন কার্যক্রম পরিচালনার।
সেলিম আর. এফ. হোসেন জানান, মঙ্গলবারই (২৭ মে) ছিল তাঁর শেষ কর্মদিবস। এই দিনটিতেই তিনি পদত্যাগপত্র জমা দেন এবং ব্যাংকটির ইতিহাসে।