বাংলাদেশের অন্যতম কুখ্যাত সন্ত্রাসী গোষ্ঠী ‘সেভেন স্টার’-এর দুই শীর্ষ নেতা সুব্রত বাইন ও মোল্লা মাসুদ দীর্ঘদিন পলাতক থাকার পর অবশেষে সেনাবাহিনীর যৌথ অভিযানে গ্রেপ্তার হয়েছেন। একই অভিযানে গ্রেপ্তার করা হয় তাদের আরও দুই সহযোগী শ্যুটার আরাফাত ও শরীফকে। সুনির্দিষ্ট গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে চালানো এই সফল অভিযানে উদ্ধার করা হয়েছে বিপুল পরিমাণ অস্ত্র ও একটি স্যাটেলাইট ফোন।
মঙ্গলবার (২৭ মে) ভোরে কুষ্টিয়া জেলায় পরিচালিত অভিযানে সুব্রত বাইন ওরফে ফতেহ আলী এবং মোল্লা মাসুদ ওরফে আবু রাসেল মাসুদকে গ্রেপ্তার করে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ৪৬ স্বতন্ত্র পদাতিক ব্রিগেডের একটি ইউনিট। পরে তাদের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে রাজধানীর হাতিরঝিল এলাকা থেকে ধরা হয় তাদের দুই ঘনিষ্ঠ সহযোগী আরাফাত ও শরীফকে। বিকালে ঢাকা সেনানিবাসের অফিসার্স মেসে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানায় আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর)।
আইএসপিআরের পক্ষ থেকে জানানো হয়, অভিযানে উদ্ধার করা হয় ৫টি বিদেশি পিস্তল, ১০টি ম্যাগাজিন, ৫৩ রাউন্ড গুলি এবং একটি স্যাটেলাইট ফোন। এই চারজনের বিরুদ্ধেই বিভিন্ন থানায় হত্যা, চাঁদাবাজি ও নাশকতার একাধিক মামলা রয়েছে।
আইএসপিআর আরও জানায়, গ্রেপ্তারকৃত সুব্রত বাইন ও মোল্লা মাসুদ ‘সেভেন স্টার’ নামক দুর্ধর্ষ সন্ত্রাসী সংগঠনের শীর্ষ নেতা। ২০০১ সালে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ঘোষিত ‘২৩ জন শীর্ষ সন্ত্রাসী’র তালিকায় তারা অন্যতম ছিলেন। সুব্রত বাইন ১৯৯১ সালে জাসদ ছাত্রলীগ নেতা মুরাদকে হত্যার মধ্য দিয়ে সন্ত্রাস জগতে প্রবেশ করেন। ২০০৩ সালে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর চাপে তিনি ভারতে পালিয়ে যান। সেখানেও একাধিকবার অস্ত্র ও অবৈধ অনুপ্রবেশের অভিযোগে গ্রেপ্তার হন এবং একপর্যায়ে পালিয়ে যান নেপালে।
২০০৮ থেকে ২০১২ সালের মধ্যে সুব্রত বাইন ভারতের কলকাতা ও নেপালে একাধিকবার গ্রেপ্তার হলেও বারবার ছদ্মবেশে আত্মগোপনে গিয়ে ফের সক্রিয় হন। এবার বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর নেতৃত্বাধীন এই সফল অভিযানের মাধ্যমে দীর্ঘদিন পর আবারও গ্রেপ্তার হলেন তিনি।
আইএসপিআরের পক্ষ থেকে জনগণকে অনুরোধ জানানো হয়েছে, যেকোনো অপরাধমূলক তৎপরতা সম্পর্কে নিকটস্থ সেনা ক্যাম্প বা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে অবহিত করার জন্য।