দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষায় কোনো ধরনের আপসের সুযোগ নেই—এমনই অটল বার্তা দিয়েছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম। তিনি বলেন, “প্রয়োজনে জীবন দেব, রক্ত দেব; কিন্তু দেশের সার্বভৌমত্ব বিকিয়ে দেওয়ার প্রশ্নই আসে না।”
বৃহস্পতিবার (২৯ মে) দুপুরে লালমনিরহাটের পাটগ্রাম পৌর শহরের চোরঙ্গী মোড়ে এনসিপি আয়োজিত এক পথসভায় এসব কথা বলেন তিনি। একই দিন বিকেলে হাতীবান্ধা মেডিকেল মোড়সহ জেলার আরও কয়েকটি স্থানে পথসভা ও লিফলেট বিতরণ কর্মসূচিতে অংশ নেন তিনি।
পথসভায় সারজিস আলম ভারতের প্রতি ইঙ্গিত করে বলেন, “যতদিন শেখ হাসিনা ভারতে আশ্রয় নেবেন, ততদিন দুই দেশের সম্পর্ক স্বাভাবিক হবে না। বাংলাদেশ কোনো দেশের দাসত্ব স্বীকার করে না। সম্পর্ক হতে হবে সম্মানের, দাসত্বের নয়।” তিনি আরও বলেন, “আগের পতিত আওয়ামী লীগ সরকারের মতো পরিস্থিতি আর হবে না। বাংলাদেশ পৃথিবীর কারও দাসত্ব করার দেশ নয়।”
সারজিস আলম অভিযোগ করেন, বিদ্যুৎ প্রকল্পের নামে বাংলাদেশ থেকে বিপুল পরিমাণ অর্থ ভারতীয় কোম্পানি আদানিদের পকেটে দেওয়া হয়েছে। তার দাবি, “খুনি হাসিনার পরিবার ভারতীয় কোম্পানিগুলোর সঙ্গে সমঝোতা করে লাখ লাখ কোটি টাকা নিয়েছে। সেই অর্থ দিয়ে দেশের ভেতরে ও বাইরে থেকে ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে।”
বিজিবির সক্ষমতা নিয়ে আশাবাদী বক্তব্য দিয়ে তিনি বলেন, “সক্ষমতা শুধু অস্ত্র নয়, কলিজারও। সেই কলিজার জোরেই ১৯৭১ সালে আমরা অস্ত্র ছাড়াই স্বাধীনতা অর্জন করেছি।” এ সময় তিনি উপস্থিত জনতার উদ্দেশে বলেন, “শুধু বিজিবি নয়, আপনারাও প্রত্যেকে একেকজন করে সীমান্ত রক্ষী। সজাগ থাকতে হবে, কোনো আপস নয়—লড়াই চলবেই।”
পথসভায় সারজিস আলমের সঙ্গে ছিলেন এনসিপির যুগ্ম মুখ্য সংগঠক অ্যাডভোকেট আলী নাসের খান, ডা. মাহমুদা মিতু, সাদিয়া ফারজানা দিনা, কেন্দ্রীয় সদস্য রফিকুল ইসলাম কনক ও সংগঠক রাসেল আহমেদ। তাঁরা জেলার বিভিন্ন উপজেলায় পথসভা ও লিফলেট বিতরণ কর্মসূচিতে অংশ নেন।
জাতীয় রাজনীতির এই উত্তপ্ত সময়ে এনসিপি নেতৃত্বাধীন এসব কর্মসূচি সীমান্ত নিরাপত্তা, দেশের সার্বভৌমত্ব ও সরকারের কার্যক্রম নিয়ে নতুন করে প্রশ্ন তুলেছে। সামনের দিনগুলোতে এসব বক্তব্য জাতীয় রাজনৈতিক আলোচনায় কী প্রভাব ফেলে, সেটাই এখন দেখার বিষয়।