গাইবান্ধার পলাশবাড়ীতে নবজাতক হত্যার ঘটনায় অবশেষে মা ও মেয়েকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। শনিবার (৩১ মে) তাদেরকে গাইবান্ধা আদালতের মাধ্যমে কোর্টহাজতে প্রেরণ করা হয়েছে।
শুক্রবার (৩০ মে) উপজেলার কিশোরগাড়ী ইউনিয়নের আসমতপুর গ্রামের নিজ বাড়ী থেকে মা গোলাপী বেগম (৪২) ও মেয়ে ফাতেমা আক্তারকে (২০) গ্রেফতার করা হয়।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, উপজেলার কিশোরগাড়ী ইউনিয়নের আসমতপুর গ্রামের মঞ্জুরের মেয়ে ফাতেমা আক্তার গত ১৬ মে গাইবান্ধা সদরের রাবেয়া ক্লিনিকে ভর্তি হয়। ভর্তির পর সে দিনই একটি পুত্র সন্তানের জন্ম দেয়। তবে ফাতেমা বিবাহ না হওয়ার কারণে সন্তান জন্মের বিষয়টি সামাজিক লজ্জা ও পরিচয় গোপন করতে গত ১৭ মে রাতে মা গোলাপী বেগম ও বাবা মঞ্জুরের পরামর্শে নবজাতক শিশুটিকে নাক-মুখ চেপে শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়। পরে শিশুটির মরদেহ ওই গ্রামের বালেগাড়ী বিলে ফেলে রেখে দেয়।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গত ১৯ মে কিশোরগাড়ী ইউনিয়নের আসমতপুর গ্রামের বালেগাড়ী বিল থেকে নবজাতকের মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। পরিচয় অজ্ঞাত থাকায় স্থানীয় গ্রাম পুলিশ সাহেব মিয়ার ছেলে মশিউর রহমান বাদী হয়ে ওইদিনই থানায় একটি অপমৃত্যু মামলা (নং-১৭) দায়ের করেন। নবজাতকের মরদেহ উদ্ধারের ঘটনায় এলাকায় তোলপাড়সহ জল্পনা-কল্পনার সৃষ্টি হয়। পরবর্তীতে এলাকাবাসীর সন্দেহের কারণে মায়ের পরিচয় পাওয়া গেলেও ওই গ্রামের শফিকুল মন্ডলের ছেলে ইয়াছিন মন্ডল বাদী হয়ে ৩ জনকে আসামী করে থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। এ ঘটনায় গত ৩০ মে থানা পুলিশ ফাতেমা আক্তার ও তার মা গোলাপী বেগমকে গ্রেফতার করে। তবে অভিযুক্ত মঞ্জুর এখনও পলাতক রয়েছে। গত ২০ মে (মঙ্গলবার) নবজাতকের মরদেহ ময়না তদন্তের জন্য গাইবান্ধা সদর হাসপাতালের মর্গে প্রেরণসহ ডিএনএ নমুনা সংগ্রহ করা হয়।
থানা অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. জুলফিকার আলী ভূট্টো গ্রেফতারের বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, শনিবার তাদেরকে গাইবান্ধা আদালতের মাধ্যমে কোর্টহাজতে প্রেরণ করা হয়।
তিনি আরো জানান, ডিএনএ পরীক্ষার পর নিশ্চিত হওয়া যাবে উদ্ধারকৃত নবজাতকের মরদেহ ফাতেমার কি না?
এ ঘটনায় এলাকায় তীব্র প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে। স্থানীয়রা নবজাতকের পিতৃপরিচয় শনাক্তের পাশাপাশি দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবী জানান।