সৈয়দপুর রেলওয়ে হাসপাতাল। বিশাল এলাকা জুড়ে এ হাসপাতালটির অবস্থান। এ হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হত শুধু রেলওয়ে কারখানায় কর্মরতদের। পাশাপাশি যে সকল কর্মকর্তা ও কর্মচারি অবসরে গেছেন তাদের পরিবারকেও দেয়া হয়ে থাকে চিকিৎসা সেবা।
বর্তমানে রেলওয়ে কারখানায় কর্মরত কর্মচারি ও কর্মকর্তাদের সাথে যে কোন সাধারণ মানুষের চিকিৎসা দেয়ার প্রক্রিয়া চলছে এ হাসপাতালে। তাই এ সৈয়দপুর রেলওয়ে হাসপাতালটিকে জেনারেল হাসপাতালে পরিণত করার কাজ শুরু হয়েছে।
বর্তমানে সৈয়দপুর রেলওয়ে কারখানার কর্মকর্তা ও কর্মচারির সংখ্যা কমে গেছে। খালি পদগুলো দীর্ঘদিন থেকে হয়নি পুরণ করা। যার ফলে ৮২ শয্যার এ হাসপাতালটি দীর্ঘদিন ধরে রোগীর অভাবে রুগ্ন হয়ে পড়ে আছে। ঠিক।একই অবস্থা বিরাজ করছিল চট্টগ্রাম রেলওয়ে হাসপাতালেও। সেটি জেনারেল হাসপাতালে রুপ দেয়ায় চট্টগ্রামবাসী বাড়তি চিকিৎসা সেবা পাচ্ছে। প্রাণ ফিরে পেয়েছে হাসপাতালটি। এরই প্রেক্ষিতে সৈয়দপুর রেলওয়ে হাসপাতালটিকেও সাধারণ হাসপাতালে পরিণত করার কাজ শুরু হয়েছে। এটি হলে হাসপাতালটি হয়তো প্রান ফিরে পাবে।
ইতোমধ্যে প্রশাসনিক ভবনটিকে উপযোগী করতে সংস্কার কাজ চলছে। বিগত সরকারের আমলে গোল্ডেন হ্যান্ডশেকের নামে রেলওয়ে বিভাগ থেকে অনেক কর্মকর্তা কর্মচারিকে বিদায় দেয়া হয়। সেই সময়ে সৈয়দপুর রেলওয়ে কারখানা থেকেও প্রায় ৪ হাজার শ্রমিক কর্মচারীর কার্যচ্যুতি ঘটে। এদিকে দীর্ঘদিন আইনী জটিলতার মারপ্যাচে রেলওয়েতে নিয়োগ প্রক্রিয়া স্থবির হয়ে পড়ে। তাছাড়া আরো ২ হাজার ৩শ দক্ষ কর্মকর্তা কর্মচারি বিদায় নেয় সৈয়দপুর রেলওয়ে কারখানা থেকে। নতুন লোক দিয়ে শূন্যস্থান পূরণ না করায় বর্তমানে সৈয়দপুর রেলওয়ে কারখানায় মাত্র ৭শ জনের মত লোক। কাজ করছে। ২৯টি উপশপের মধ্যে ইতোমধ্যে বন্ধ হয়ে গেছে অনেক শপ। ফলে ৮২ শয্যার সৈয়দপুর রেলওয়ে হাসপাতালটি রোগীর অভাবে রোগাক্রান্ত হয়ে পড়ে আছে।
হাসপাতালের আউটডোরে প্রতিদিন অবসরপ্রাপ্ত ও বর্তমান শ্রমিক কর্মচারীর পরিবারের সদস্য মিলে শতাধিক মানুষ চিকিৎসা নিতে আসে। এখন একজন চিকিৎসক দিয়ে সৈয়দপুর রেলওয়ে হাসপাতালটি পরিচালিত হচ্ছে। চিকিৎসা দিচ্ছেন ডা.পারথী সারতী রায়। তাও আবার তিনি সপ্তাহে একদিন বসেন। চিকিৎসকার এমন নড়বড়ে অবস্থায় পড়েছেন সৈয়দপুরে কর্মরত রেল অঙ্গনের কর্মচারি ও কর্মকর্তারা। আগে ওই হাসপাতালে চিকিৎসা সেবায় নিয়োজিত ছিলেন ১৫৩ জন চিকিৎসক ও কর্মচারী। হাসপাতালের ইনডোরে রোগী ভর্তি থাকেন গড়ে ৫ থেকে ৭ জন। সেজন্য অনেক কর্মচারী কর্মকর্তাকে কর্মপালন ছাড়াই সরকারি কোষাগার থেকে প্রতিমাসে কয়েক লাখ টাকা বেতন ভাতা পরিশোধ করতে হচ্ছে। এসব তথ্য মিলেছে সংশ্লিষ্ট দপ্তরের একাধিক ব্যক্তির সঙ্গে কথা বলে। সরেজমিন গিয়েও তথ্যের সত্যতা মিলে।