আইন না থাকলেও ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইলে কলেজ মাঠে নিয়মিত বসছে পশুর হাট। উপজেলার অরূয়াইল আব্দুস সাত্তার ডিগ্রী কলেজের প্রভাষক গোলাম রাব্বানীর নামেই টেন্ডার হয়েছে এই অস্থায়ী হাটটি। কাগজে কলমে হাটের স্থান কলেজ সংলগ্ন বালুর মাঠ হলেও বাস্তবে হাট বসছে কলেজের সামনের এসেম্বলি ও খেলার জন্য বরাদ্ধ মাঠে। ইজাদার বলেন পিছনে বালুর মাঠে জায়গা হয় না। তাই কলেজের সামনের মাঠে হাট বসাতে হয়। ওই প্রভাষকের নামে ডাকা হাটটি ৫ই আগষ্টের আগে বর্তমানে ফ্যাসিস্ট স্থানীয় আওয়ামী লীগ ও সহযোগি অঙ্গসংগঠনের লোকজন পরিচালনা আর ভাগ বাটোয়ারা করতেন। এবার পরিচালনা করছেন অরূয়াইল পাকশিমুলের বিএনপি ও দলটির সহযোগি অঙ্গসংগঠনের লোকজন। হাট শুরূর আগে কমিটির তালিকায় নাম থাকা না থাকায় নিয়ে নিজেদের মধ্যে বাকবিতন্ডা মারধর ও দেশীয় অস্ত্রের মহড়াও হয়েছে।
স্থানীয় একাধিক সূত্র জানায়, অরূয়াইলের অস্থায়ী পশুর হাটটি দীর্ঘ সময় ধরে স্থানীয় আব্দুস সাত্তার ডিগ্রী কলেজই ইজারা নিচ্ছেন। এবারও তারা ১ লাখ ৫৪ হাজার টাকা ইজারা মূল্য দিয়ে হাটটি ডেকে নিয়েছেন। নির্বাহী কর্মকর্তার পত্রে কলেজ সংলগ্ন বালুর মাঠে হাটের কথা উল্লেখ রয়েছে। কিন্তু কলেজের সামনের মাঠে বসে পশুর হাট। যদিও আইন হচ্ছে কোন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সামনে পশুর হাট বসানো যাবে না। অরূয়াইলের ইজারাদার গত রোববার সকাল সন্ধ্যা পর্যন্ত কলেজের সামনের মাঠেই পশুর হাট চালিয়েছেন। রাতে এক অফিসে বসে টাকার হিসাব নিকাশ হয়। কলেজের ভাগে যায় এক অংশ। আর পরিচালনা কমিটির ভাগে যায় আরেক অংশ। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় একাধিক অভিভাবক ও শিক্ষার্থী বলেন, যে লাউ সেই কদু। নাম কলেজের। কিন্তু সম্পুর্ণ টাকা কলেজ পায় না। একটা অংশ স্থানীয় রাজনৈতিক দলের নেতা কর্মীদের মধ্যে ভাগ হয়। আগে পরিচালনা কমিটিতে প্রভাব বিস্তার করতো ও টাকার ভাগ নিতো স্থানীয় আওয়ামী লীগ। এখন পরিচালনা ও টাকার ভাগ যাচ্ছে অন্যদলের লোকজনের পকেটে। সবচেয়ে বড় কথা হচ্ছে কলেজ মাঠে বাজার বসিয়ে মাঠ ও কলেজের পরিবেশ ধ্বংস করা হচ্ছে। পশুর মল ও প্রস্রাবের গন্ধ দীর্ঘদিন থাকে। কলেজ ভবনের বারান্দা লোকজন ময়লায় সয়লাভ করেন। ঈদের বন্ধের পর দূর্গন্ধে শ্রেণি কক্ষের বারান্দা ও কক্ষে বসা কঠিন হয়ে পড়ে। ইজারাদার আব্দুস সাত্তার ডিগ্রী কলেজের প্রভাষক গোলাম রাব্বানী কলেজের সামনে পশুর হাট বসানোর কথা স্বীকার করে বলেন, মূলত কলেজের পশ্চিম পাশের বালুর মাঠে জায়গা সংকুলান হয় না। তাই কলেজের সামনের মাঠে বাজার বসায়। পরিচালনা কমিটির আহবায়ক কে? তা আমি জানি না। সব বিষয় জানেন প্রিন্সিপাল স্যার। আমি তো শুধু নামমাত্র ইজারাদার। বাজার পরিচালনার পর রাতে হিসাব শেষে টাকার এক অংশ পায় কলেজ। আরেক অংশ পায় পরিচালনা কমিটির লোকজন। এ বিষয়ে জানতে কলেজের অধ্যক্ষ মো. ইকবাল হোসেন মৃধার মুঠোফোনে (০১৭১৬-১১২৮৫৩) একাধিক ফোন করেও কথা বলা সম্ভব হয়নি। সরাইল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মোশারফ হোসাইন বলেন, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সামনে হাট বসানো যাবে না। এই ধরণের কোন অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা গ্রহণ করব।