ভোলাহাট সীমান্ত দিয়ে ফের পুশইন: ৮ বাংলাদেশিকে ঢুকিয়ে দিল বিএসএফ

ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের পশ্চিম সীমান্তে আবারও পুশইনের ঘটনা ঘটেছে। চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার ভোলাহাট উপজেলার চানশিকারী সীমান্ত দিয়ে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ) আটজন বাংলাদেশিকে ঠেলে পাঠিয়েছে বলে নিশ্চিত করেছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)। আটকের মধ্যে রয়েছেন চারজন নারী এবং চারজন পুরুষ। তাঁদের সবার বাড়ি দেশের বিভিন্ন জেলায়।

বিজিবি সূত্র জানায়, মঙ্গলবার (৩ জুন) ভোররাত সাড়ে ৪টার দিকে ১৯৯ নম্বর আন্তর্জাতিক সীমান্ত পিলারের কাছ দিয়ে ভারতের আলিপুর এলাকা থেকে আটজন বাংলাদেশিকে পুশইন করে বিএসএফ। ওই সময় তাঁরা বাংলাদেশের অভ্যন্তরে হোসেনভিটা নামক এলাকায় ঘোরাফেরা করছিলেন। পরে ৫৯ বিজিবি ব্যাটালিয়নের সদস্যরা তাঁদের আটক করে।

ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে ৫৯ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল গোলাম কিবরিয়া বলেন, আটককৃতরা সবাই বাংলাদেশি নাগরিক এবং পূর্বে অবৈধভাবে ভারতে প্রবেশ করেছিলেন। ২০১৭ সাল থেকে ২০২৪ সালের মধ্যে বিভিন্ন সীমান্ত দিয়ে তাঁরা ভারতে যান এবং পরে ভারতীয় পুলিশ তাঁদের আটক করে মুর্শিদাবাদ থানায় রাখে। পরবর্তীতে বিএসএফ-এর মাধ্যমে তাঁদের বাংলাদেশে পুশইন করা হয়।

আটকের তালিকায় যাঁরা রয়েছেন:

১. মো. ফায়েজ (২৮) — নরেন্দ্রপুর, চাঁপাইনবাবগঞ্জ

২. মো. আজিম সরকার (২৫) — নরেন্দ্রপুর, চাঁপাইনবাবগঞ্জ

৩. মোসা. মিম খাতুন (১৯) — আমবাড়িয়া, দীঘলিয়া, খুলনা

৪. রুস্তুম আলী (৪৪) — বেলদহী, পীরগঞ্জ, ঠাকুরগাঁও

৫. মোফাজ্জেল হোসেন (৩৫) — চরমুক্তাপুর, চারঘাট, রাজশাহী

৬. দুঃখী দাস (৫৫) — হরিদেবপুর, তানোর, রাজশাহী

৭. রত্না আকতার নুপুর (২২) — কাঞ্চন রাণীপুর, রূপগঞ্জ, নারায়ণগঞ্জ

৮. নাদিরা খাতুন (৩৭) — বারইখালী, মোড়েলগঞ্জ, বাগেরহাট

লেফটেন্যান্ট কর্নেল গোলাম কিবরিয়া আরও জানান, আটককৃতদের বিষয়ে বিস্তারিত যাচাই শেষে ভোলাহাট থানায় হস্তান্তর করা হবে। বর্তমানে তাঁরা বিজিবির হেফাজতে রয়েছেন। পুশইন হওয়া এই ব্যক্তিদের বিষয়ে প্রয়োজনীয় আইনি প্রক্রিয়া চলছে।

এর আগে সোমবার (২৭ মে) চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার গোমস্তাপুর উপজেলার বিভীষণ সীমান্ত দিয়ে ১৭ জনকে পুশইন করে বিএসএফ। পরে তাঁদের পরিচয় নিশ্চিত হয়ে গোমস্তাপুর থানার মাধ্যমে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়।

সীমান্তবর্তী এইসব এলাকাগুলোতে বারবার পুশইনের ঘটনা নতুন করে নিরাপত্তা এবং মানবিক প্রশ্ন তুলে দিচ্ছে। স্থানীয় প্রশাসন ও নিরাপত্তা বাহিনী পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছে এবং প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিচ্ছে বলে জানানো হয়েছে।