ঘোষিত বাজেটে—শেখ হাসিনার শাসনামলের রূপ-রেখা: রিজভীর অভিযোগ

নিজস্ব প্রতিবেদক
| আপডেট: ৩ জুন, ২০২৫, ০৫:২৮ পিএম | প্রকাশ: ৩ জুন, ২০২৫, ০৫:১৯ পিএম
ঘোষিত বাজেটে—শেখ হাসিনার শাসনামলের রূপ-রেখা: রিজভীর অভিযোগ

২০২৫-২৬ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটকে ‘পুরোনো চিন্তার প্রতিফলন’ আখ্যা দিয়ে এর কড়া সমালোচনা করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী। তাঁর দাবি, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের হাত দিয়ে ঘোষিত বাজেটেও শেখ হাসিনার শাসনামলের রূপ-রেখাই প্রতিফলিত হয়েছে।

মঙ্গলবার (৩ মে) ঢাকার নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে জাতীয়তাবাদী তাঁতী দলের উদ্যোগে আয়োজিত ঈদসামগ্রী বিতরণ অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন রিজভী। অনুষ্ঠানটি বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের ৪৪তম শাহাদাৎবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত হয়।

রিজভীর অভিযোগ, “আপনারা ৭ লাখ ৯০ হাজার কোটি টাকার বাজেট দিয়েছেন। এই বাজেট শেখ হাসিনার বাজেটের সঙ্গে পার্থক্য কী? তিনিও কালো টাকা সাদা করার সুযোগ দিয়েছেন, আপনারাও দিয়েছেন। তাহলে নতুনত্ব কোথায়?”

তিনি বলেন, “এই অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে বলা হয়েছিল পরিবর্তনের বার্তাবাহী। কিন্তু এখন দেখা যাচ্ছে, তাদের হাত দিয়েই অনিয়ম আর লুটপাটের ধারাবাহিকতা বজায় রাখা হচ্ছে। ড. ইউনূস সরকারে আসার আগে যে আদর্শের কথা বলতেন, এখন তার বিপরীতটা ঘটছে।”

রিজভীর ভাষ্য মতে, “এই বাজেটের ২৩ শতাংশ বরাদ্দ যাচ্ছে প্রশাসনের বেতন খাতে, ১৪ শতাংশ যাচ্ছে সুদ পরিশোধে। তাহলে সাধারণ মানুষের জন্য কী রাখা হয়েছে? স্বাস্থ্য ও শিক্ষা খাতে বরাদ্দ কম, অথচ সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন এই দুই খাতেই।”

তিনি বলেন, “ড. ইউনূস ক্ষমতায় আসার আগে বলেছিলেন, দরিদ্রকে জাদুঘরে পাঠাবেন। এখন দেখছি তার শাসনে কালো টাকা বৈধ করার সুযোগ পাচ্ছে লুটেরা আর ব্যাংক ডাকাতরা।”

বর্তমান বাজেটের মাধ্যমে গরিব আরও গরিব হবে এবং মধ্যবিত্ত ও নিম্ন মধ্যবিত্ত শ্রেণির ওপর চাপ বাড়বে বলেও মন্তব্য করেন তিনি। রিজভীর দাবি, “এই বাজেটে জনগণের দুঃখ-দুর্দশার প্রতি কোনো দৃষ্টিই নেই। বরং এর ফলে মুদ্রাস্ফীতি বাড়বে এবং জীবনযাত্রা আরও কষ্টকর হবে।”

গণতন্ত্র নিয়ে প্রশ্ন তুলে রিজভী বলেন, “আমরা গণতন্ত্রের নমুনা শেখ হাসিনার আমলেও দেখেছি, তার বাবার আমলেও দেখেছি—মতপ্রকাশের স্বাধীনতা ছিল না। বিএনপির শাসনামলেই কেবল মানুষ নির্বিঘ্নে মত প্রকাশ করতে পেরেছিল।”

তিনি আরও বলেন, “নির্বাচন হবে কবে, তা নিয়ে প্রশ্ন করলে উপদেষ্টা চুপ করে থাকেন। একটা সময় সংস্কারবাদীদের সামনে এনে নির্বাচন প্রতিদ্বন্দ্বিতার নামে নাটক করা হয়েছিল। এখন সেই নাটকেরও কোনো ঘোষণা নেই।”

জিয়াউর রহমানকে দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বের প্রতীক হিসেবে উল্লেখ করে রিজভী বলেন, “যারা বাংলাদেশকে নিজের পায়ে দাঁড় করাতে চায় না, তারাই ষড়যন্ত্র করে জিয়াউর রহমানকে হত্যা করেছে।”

অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব আব্দুস সালাম আজাদ, স্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক সম্পাদক মীর সরাফত আলী সপু, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক অধ্যাপক আমিনুল ইসলাম প্রমুখ। সভাপতিত্ব করেন জাতীয়তাবাদী তাঁতী দলের আহ্বায়ক আবুল কালাম আজাদ এবং সঞ্চালনায় ছিলেন সাধারণ সম্পাদক মুজিবুর রহমান।

আপনার জেলার সংবাদ পড়তে