পাবনার চাটমোহর উপজেলার হান্ডিয়াল ইউনিয়নের মারিয়াস্থল মৌজায় সন্ত্রাসী কায়দায় জমি দখল করার অপচেষ্টা করা হয়েছে মর্মে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এনিয়ে বিবাদমান দুই পক্ষ মুখোমুখি অবস্থান করছে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মুসা নাসের চৌধুরী ও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মনজুরুল আলমসহ পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করেন। আজ শুক্রবার (৬ জুন) জমি জবর দখলের অপচেষ্টায় লিপ্ত হয় একটি পক্ষ। এরআগে বোরো ধান কাটা নিয়ে বিবাদমান দুই পক্ষের মধ্যে চরম উত্তেজনা দেখা দিয়েছিল। তখন প্রশাসনের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করা হয়। ওই এলাকার আঃ মজিদ গং ও আলমগীর হোসেন গং এর মধ্যে জমি নিয়ে এই বিরোধ তৈরি হয়েছে।
জানা গেছে, হান্ডিয়াল ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান রবিউল করিম মাস্টার, তার ভাই আঃ রহমান, আঃ আজিজ, আঃ মজিদ, শামসুল আলম, নজরুল, নজির প্রাং গং ক্রয়সূত্রে মারিয়াস্থল মৌজার ৮ একরের বেশি জমির মালিক। দীর্ঘ প্রায় ৪ যুগ ধরে তারা এই জমি ভোগদখল করে আসছেন। এসএ রেকর্ড ও আরএস রেকর্ড তাদের অনুকূলে। এনিয়ে আদালতে মামলা চলমান। রবিউল করিম মাস্টার-আঃ মজিদ গং এর অভিযোগ বিগত ৫ আগস্ট সরকার পরিবর্তনের পর আলমগীর গং এই জমি জবরদখলে মরিয়া হয়ে ওঠে। তারা সশস্ত্র অবস্থায় জমি দখলের অপচেষ্টা করছেন। আলমগীর গং কোন প্রকার সিদ্ধান্তই মানছেননা বলে অভিযোগ।
জানা গেছে, মারিয়াস্থল মৌজার ১১ একর ৬০ শতাংশ জমির ডিএস রেকর্ড অনুযায়ী মালিক নুরুল হক সরকার গং। ১৯৫১ সালে ওই জমি নিয়ে খাজনার মামলা করেন সরকার পক্ষ। মামলায় সমস্ত জমি সরকারি হয়ে যায়। পরবর্তীতে সরকার নিলামে ওই জমি বিক্রি করেন। এলাকার বাসিন্দা শশধর হলদার নিলামে জমি ক্রয় করেন। এরপর শশধর হলদারের নামে এস এ রেকর্ড হয়। এরপর রবিউল করিম-আঃ মজিদ গং ৮ একরের বেশি জমি ক্রয় করে ৪৪ বছর ধরে ভোগদখল করছেন। সম্প্রতি প্রতিপক্ষ আলমগীর হোসেন গং এই জমি নিজেদের দাবি করে জবরদখলের অপচেষ্টা করছেন। এনিয়ে উভয় পক্ষের মধ্যে চরম উত্তেজনার সৃষ্টি হয়েছে। এলাকাবাসী জানান, এই জমি নিয়ে যে কোন সময় সংঘাত-সংঘর্ষের সৃষ্টি হতে পারে। ঘটতে পারে আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি।
গত মাসে এই জমি সংক্রান্ত বিরোধ নিয়ে চাটমোহর উপজেলা নির্বাহী কর্মকার দপ্তরে এক বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মুসা নাসের চৌধুরী, থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মনজুরুল আলমসহ দুই পক্ষের প্রতিনিধি উপস্থিত ছিলেন। বৈঠকে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বলেন, দীর্ঘ ৪০ বছর ধরে এক পক্ষ জমি চাষাবাদ করছে, তাদের নামে এসএ ও আরএস রেকর্ড। আইনগতভাবে ফসল তারাই পাবেন। কিন্তু প্রতিপক্ষ আলমগীর গং এ সিদ্ধান্ত মানতে রাজি নন। তারা যেকোন মূল্যে জমির দখণ চায়। আলমগীর হোসেন গং গত ২ মে প্রায় ৫ বিঘা জমির ধান জোরপূর্বক কেটে নিয়েছে।
পরে অবশ্য থানা পুলিশ এনিয়ে পদক্ষেপ নিলে পরিস্থিতি শান্ত হয়। বর্তমানে আলমগীর গং নানাভাবে হুমকি দিচ্ছে বলে অপরপক্ষ অভিযোগ করেছেন। তারা জমি জবরদখলে মরিয়া হয়ে উঠেছে বলে অভিযোগ। আলমগীর গং কোন কিছুর তোয়াক্কা না করে জমি জবরদখল করার জন্য মরিয়া হয়ে উঠেছে। শুক্রবার (৬ জুন) আলমগীর গং জমি জবরদখল করতে গেলে প্রতিপক্ষ বাধা দেয়। এনিয়ে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া, জমিতে লাঙ্গল দেওয়াসহ বাড়িঘর ভাঙ্চুরের ঘটনা ঘটে।
থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোঃ মনজুরুল আলম জানান, খবর পেয়ে আমি ও ইউএনও সাহেব ঘটনাস্থলে আসি। পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে েিরখেছে। আদালতের বিষয়ে আমরা সিদ্ধান্ত দিতে পারিনা। তবে আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটানোর চেষ্টা করলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।